সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
আইন আদালত, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, মুন্সিগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জে অবহেলায় পড়ে আছে বেশ কয়েকটি বধ্যভূমি

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:৪২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও মুন্সীগঞ্জের জানা-অজানা বেশ কয়েকটি বধ্যভূমি এখনও অরক্ষিত।সেখানে ১৯৭১ সালের বর্বর হত্যাযজ্ঞের কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই।কালের পরিক্রমায় এসব বধ্যভূমির নাম-নিশানা পর্যন্ত হারিয়ে যেতে বসেছে। চিহ্নিত বধ্যভূমিগুলোতে স্মৃতিস্তম্ভ ও নামফলক স্থাপন করা হলেও অনেক শহীদের নাম এখনও অজানা।বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও বাকি ১১ মাস থাকে অযত্ন-অবহেলায়।এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সুশীল সমাজের মানুষ।
রাজধানীর কাছের এ জেলায় মোট বধ্যভূমির সংখ্যা জানা নেই প্রশাসনেরও।মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অরক্ষিত বধ্যভূমিগুলোর তালিকা নিরূপণ ও সংরক্ষণের নির্দেশনা থাকলেও আজও তা উপেক্ষিত।বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার সেনারা মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চালায়। এর মধ্যে ১৯৭১ সালের ৯ মে জেলার গজারিয়া উপজেলার ফুলদী নদীর তীরে ৩৬০ জনকে হত্যা করা হয়।এদের বেশির ভাগই ছিলেন আশপাশের গোঁসাইচর,নয়ানগর,গজারিয়া,কাজীপু রা ও বালুরচরের বাসিন্দা।১০ বছর আগে এই বধ্যভূমিতে শহীদের নামফলক নির্মাণ করা হয়।পরের বছর সেখানে সীমানা দেয়ালও বসে।পাকিস্তানি বাহিনী মুন্সীগঞ্জে ঢুকে শহরের হরগঙ্গা কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করেছিল।এই ক্যাম্পে অগণিত মুক্তিকামী বাঙালিকে এনে নির্যাতন চালাত তারা।পরে হত্যা করে ক্যাম্পটির অদূরে একটি ডোবায় মরদেহ ফেলে দিত।সেই বধ্যভূমি সংরক্ষণে ২০১২ সালে স্মৃতিফলক নির্মিত হয়।কত মানুষকে এখানে ফেলা হয়েছে,তার হিসাব নেই।১৯৭১ সালের ১০ মে রাতে পাকিস্তানি বাহিনী টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার আব্দুলাপুরের পালবাড়িতে হানা দেয়।সেখানে ১৯ জনকে হত্যার পর মরদেহ পালবাড়ির পুকুরপাড়ে ফেলে রাখে।১৯৯৮ সালে সেখানে আব্দুলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে নামফলক নির্মাণ করা হয়।যদিও এতে অনেকের নাম-পরিচয় নেই।এমনকি পালবাড়ির শহীদ পরিবারের খোঁজখবর নিতেও কেউ আসেননি।১৪ মে মুন্সীগঞ্জ সদরের মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার চৌধুরী বাড়ির ১৭ জনকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা।তাদের সাতানিখিল এলাকার খালের পাড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়।ওই বধ্যভূমি সংরক্ষণেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।সাতানিখিল খালপাড়ের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী মো:লাল মিয়া সিকদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন অনুর ভাষ্য,সাতানিখিল ব্রিজসংলগ্ন খালপাড়ে একবারেই ১৭ জনকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানিরা। এ ছাড়া একাধিক বুদ্ধিজীবীকে সেখানে হত্যা করে তারা।অথচ বধ্যভূমিটি সংরক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন,জেলার বেশির ভাগ বধ্যভূমিতেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।এগুলো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে।এসব বধ্যভূমি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল।জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন,বধ্যভূমি-সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছে।অরক্ষিতগুলো সংরক্ষণের প্রক্রিয়া চলছে।