ঢাকা ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
১৭ পুলিশ সুপারের বদলি ভূমি জরিপে ডিজিটাল অগ্রযাত্রা: না’গঞ্জে EDLMS প্রকল্পের সচেতনতামূলক সেমিনার কুমারখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১ পুলিশের ১২ উচ্চপদস্থ  কর্মকর্তার পদোন্নতি ব্লকেডে আটকা ডিএসসিসির নগর ভবন, পুরোপুরি বন্ধ সেবাকার্যক্রম সেই ৬১ আওয়ামীপন্থি আইনজীবীর জামিন স্থগিত রাখার আদেশ চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ ‘আমারে এ দেহখানি তুলে ধরো তোমার ওই দেবালয়ে প্রদীপ করো’ রায়পুরায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন’র স্কুল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বীরমুক্তিযোদ্ধা এসকেন্দার বেপারী’র জানাজা সম্পুর্ন  ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও  চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ,পল্লী চিকিৎসক কারাগারে কু‌ষ্টিয়ায় পরকীয়ার স‌ন্দে‌হে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর বিষপান নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বরখাস্ত সেনাসদস্যসহ গ্রেপ্তার-৩ চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী: ন্যাপ ঢাকা সেনানিবাস ঘিরে সকল ধরনের মিছিল-সমাবেশ-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ: আইএসপিআর বরিশালের সাবেক এমপি জেবুন্নেছা আটক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের ‘মাউশির’ জরুরি নির্দেশনা নগরভবনে ৬৫ তালা ঝুলিয়ে দিলো আন্দোলনকারীরা, আসিফ মাহমুদসহ অবাঞ্ছিত-২ আইভিকে আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো পুলিশের মামলায় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা রিয়াদ চৌধুরী শ্রীঘরে দেড় লাখ শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া,বড় সুযোগ বাংলাদেশিদের জন্য কাশীপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা শরণখোলায় এইচএসসির কেন্দ্র পরিবর্তনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নারায়ণগঞ্জে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা থাইল্যান্ড পালানোর পথে বিমানবন্দরে আটক সাবেক সেনাসদস্যদের আবেদন গুরুত্বের সাথে পুনর্বিবেচনা করছে সেনাবাহিনী কুষ্টিয়ায় স্ত্রীসহ দুই শিশু সন্তানকে হত্যা চেষ্টার পর যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা শরণখোলায় লিগ্যাল এইড কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন রূপগঞ্জে সাংবাদিক রিয়াজের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন মুন্সীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার,আটক-৩ আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ মর্মে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে যা বলা হয়েছে আইভীকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে বাঁধা সৃষ্টিকারী ২’শ জনকে আসামি করে মামলা নতুন সিআইডি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন ছিবগাত উল্লাহ বিলুপ্ত এনবিআর, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ জারি এসএসসি’র খাতা মূল্যায়নে পরীক্ষকদের অনীহা এতোদিন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন, কিভাবে গ্রেপ্তার হলেন মমতাজ গজারিয়ায় ট্রান্সফরমার চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ২ চোর আহত ঈদকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় ২ লক্ষাধিক কোরবানীর পশু প্রস্তুত গাইবান্ধায় কালবৈশাখী ঝড়ে র‍্যাব কনস্টেবলের মৃত্যু সাবেক এমপি মমতাজ গ্রেপ্তার নাসিক ‘নগর ভবনে’ ইজিবাইক চালকদের তাণ্ডবে আহত-২১ সড়কে কোনোভাবেই গরুর হাটের অনুমোদন দেয়া হবে না: আইনশৃঙ্খলা মিটিংএ ডিসি নারায়ণগঞ্জে সাবেক মেয়র আইভীর জামিন নাকচ, ডিভিশনের আবেদন সোনারগাঁ আ’লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান ইন্জিনিয়ার মাসুম আটক প্রচন্ড্র দাবদাহের পরে স্বস্তি, ৬ জেলায় ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কা কুষ্টিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হতে না পারায় ছাত্রের আত্মহনন কুষ্টিয়ায় চিকিৎসা ব্যয় নিয়ন্ত্রণের দাবিতে মানববন্ধন বিশ্ব ‘মা’ দিবস আজ আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা নারী হয়রানির সংবাদ প্রকাশ করায় মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবে ডুকে সাংবাদিকদের হুমকি দেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হলো আওয়ামীলীগ বিকেএমইএ’র নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী মোহাম্মদ হাতেম কুষ্টিয়ার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ভৈরবে মানিকদী গ্রামে বোন জামাইয়ের হাতে প্রাণ গেলো রাকিবের টানা দ্বিতীয় দিনের অবরোধ: গণজমায়েতে আন্দোলনকারীদের ভিড় বাড়ছে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি কালে প্রকাশ্যে তরুণীদের মারধর দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়, এদেশ জনগনের: তারেক রহমান ৭১টিভি-যমুনাসহ বাংলাদেশের ৪ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে ব্লকড প্রতিশোধ নয়, আসুন ভালোবাসা দিয়ে সবাই দেশ গড়ি: মির্জা ফখরুল না’গঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে ত্বকীর বাবার ফেসবুক পোস্ট সাবেক মেয়র আইভীকে পাঠানো হলো কাশিমপুর মহিলা কারাগারে সিদ্ধিরগঞ্জে মিনারুল হত্যা মামলায় আইভী কারাগারে গ্রেপ্তারের আগে যে কথা বলছিলেন নাসিক সাবেক মেয়র আইভি রাতভর নাটকীয়তার পর অবশেষে গ্রেপ্তার সাবেক নাসিক মেয়র আইভী লালন-হাসন রাজার জন্মজয়ন্তী জাতীয়ভাবে পালন করা উচিত অনৈতিক দাবি পূরন না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন মুন্সীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও ৫ জনের যাবজ্জীবন নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান সুকৌশলে দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ যৌক্তিক দাবির আমরা ব্যবস্থা নিব, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা কিংবা অফিস ঘেরাও বরদাস্ত করা হবে না: ডিসি মা-বৌকে উদ্দেশ্য করে আবেগতাড়িত চিরকুট লিখে র‍্যাব-৭’র এএসপির আত্মহনন সীমান্তের জেলাগুলোতে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ আইজিপির পুলিশের উচ্চপদস্থ ১৫ কর্মকর্তার পদে রদবদল কথা রাখলে নারায়ণগঞ্জের মানবিক জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা কামাল আহম্মেদ’র মৃত্যুতে না’গঞ্জ শহর ছাত্রদল নেতা রোমেনের শোক দৌলতপুরে অসময়ে পদ্মার ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা অর্ধলক্ষ মানুষ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আরও ৬ কর্মকর্তা বদলি না’গঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন’ বাস্তবায়নে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে সরকারি জায়গা দখলের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান কুষ্টিয়ায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার ফরিদপুরে গ্রামপুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অবশেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে আজ দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দৌলতপুরে ভুট্টা ফলনে চাষীদের অভাবনীয় সাফল্য সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে: জনমনে কষ্ট ব্যবসায়িদের বাঁচার লড়াই মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়ক নির্মাণকাজে ধীরগতি না’গঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানে সশস্ত্র ক্যাডার পিস্তল ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ফের কর্মবিরতিতে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক ফতুল্লায় অবৈধ দখলদারিত্বের সংবাদ সংগ্রহকালে সংবাদকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজন হত্যা প্রতিবাদে উত্তাল নরসিংদী স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইউজিসি সিদ্ধিরগঞ্জে ছু*রি*কা*ঘা*তে কিশোর খু*ন: পুলিশি হেফাজতে-২ কিশোর ফের পাঁচ হাজার রোহিঙ্গার কক্সবাজারে অনুপ্রবেশ নারায়ণগঞ্জে কাল থেকে পূনরায় চালু পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম পুরানা পল্টনের বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট কুষ্টিয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ হাতুড়িপেটার শিকার খানপুর ৩’শ শয্যা হাসপাতালে দালাল চক্রের ২ সদস্যকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত

কলকাতার স্বপ্নের জাদুকর ট্রাম তুলে দেওয়ার অশনি সংকেত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৭:৩৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৭ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,
কলকাতা প্রতিনিধি।।
সারা বিশ্বে যতোই আধুনিকতার ছোঁয়াচ লাগুক না কেন, যতোই দ্রুতগামী যানবাহন, বুলেট ট্রেন, মনোরেল,স্পুটনিক, রকেট এসে সাড়া জাগিয়ে দিক না কেন, ভারতে ব্রিটিশের বপন করা ট্রাম যুগে যুগে বাঙালির স্বপ্নে, চলনে,ভাবনায় জড়িয়ে রয়েছে। প্রেম,ভালবাসা, আড্ডা, নিরাপদে যাত্রার একমাত্র সহায়ক ছিল এই ট্রাম।ট্রাম অনুভূতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে রয়েছে।
সেই স্কুল জীবনের শুরু থেকেই ট্রামে শুরু হয়েছে পথ চলা।
ট্রেনের সেই হো হুস শব্দ করে স্টার্ট করা , তারপর অংআং শব্দ করে গতি নেয়া একটা স্বপ্নের মতো মনে হয় আজও।
ট্রাম – সেকেন্ড ক্লাস কামরা । এটাতে কোনো পাখা নেই ।
ছোটবেলার বেলাগাছিয়া ট্রাম ডিপো থেকে ১ নম্বর , ২ নম্বর , ১১ নম্বর ট্রামে করে হিন্দু স্কুলে যাওয়ার স্মৃতিটা মনে পাকাপাকি ভাবে গেঁথে আছে ।অফিস টাইমে ওয়ান-ওয়ে হয়ে যাওয়া কলেজ স্ট্রীট ধরে সোজা স্কুলের গেট অবধি  পৌঁছে যাওয়ার  আর কোনো উপায়ই ছিল না । বাবা মাও নিশ্চিন্তে ট্রামে তুলে দিয়ে কাজে চলে যেতেন । জানতেন কন্ডাক্টর কাকু ঠিকই আমাদের সাবধানে নামিয়ে দেবেন । ফেরার সময়ও একই রুটিন । স্কুলের কোনো স্টাফ ট্রামে তুলে দিত ।  কোনো রাস্তা পার হতে হত না । বাস স্টপে নেমে এক ছুটে সোজা বাড়ি ।
অফিস টাইমে ভয়াবহ ভিড় হত সেই ট্রামে । আমরা অবশ্যই কোনো কাকুর কোলে বা জানলার ধারে । সৌজন্যে কন্ডাক্টর কাকু । সেই ট্রামের জানলা দিয়ে দেখতাম বেনারসী প্যালেস , সংস্কৃত বুক ডিপো , নজরুল ইসলাম এর ছবি  সহ অগ্নি বীণার মুরাল  ( ডি. এম. লাইব্রেরি ) , কখনো স্বামীজীর বাড়ির তলায় অধুনা লুপ্ত চাচার হোটেল থেকে প্রেমিকার রুমালে মুখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসছে কলেজ ফেরত প্রেমিক ।  আসল ফাউল কাটলেট পাওয়া যেত সে দোকানে । পুরু মুরগির ফিলে ভর্তি গোলাকার স্বর্গীয়  কাটলেট- থেকে একটা  হাড় সুকৌশলে বেরিয়ে আছে । সঙ্গে প্রমাণ সাইজের চাকা চাকা গোলাকৃতি একটুকরো করে পেঁয়াজ , টমেটো ও শসা । শ্রীমানি মার্কেটের উল্টো দিকে সেই চৌধুরী ওয়াচ কোম্পানির গাড়িবারান্দা ওলা বিশাল ঘড়ির দোকানটা, যার বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এ চা বাগানে নিবিড় মনে  চা পাতা  বাছাতে ব্যস্ত এক রমণী কে দেখা যেত । একটি আধুনিক ঘড়ি তার হাতে শোভা পাচ্ছে । আর্য্য সমাজ , ব্রাহ্ম সমাজের বড় বড় বাড়িগুলো দেখতে দেখতে কখন যে স্কুলের গেটে পৌঁছে যেতাম খেয়ালই নেই । কন্ডাক্টর কাকু মৃদু প্রশ্রয় মিশ্রিত বকুনি দিয়ে নামিয়ে দিতেন । কখনো ফেরার সময় ওয়াই এম সি এর ক্যান্টিন থেকে ঘুগনি খেতে খেতেই ছুট । এপার থেকে চিৎকার করে ডাকলে গাড়ি দাঁড়িয়ে যেত । ড্রাইভার কাকু ধমক দিয়ে তুলে নিতেন । পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়েও বকুনি খেতে  হত মাঝে মাঝেই । ট্রামের ভেতরে একটা খাপ মত। তাতে একটা তারিখ লেখা কার্ড থাকত । সেটা বোধ হয় অল ডে পাস বা মান্থলি করার তারিখ । স্কুলের অনেক বন্ধু কেই দেখেছি পকেট থেকে একটা মান্থলি বের করে কন্ডাক্টর কাকু কে দেখিয়ে তার একধার থেকে দৈনিক একটা করে  কাগজ ছিঁড়ে ফেলে দিতে  । সেই ট্রামে আবার মাঝে মাঝে চেকার উঠত । তার কাজ ছিল টিকিট টা দেখে আরেকটি পাঞ্চ করে ফেরত দেওয়া । দ্বিতীয় শ্রেণীর কামরায় পাখা থাকত না । ভাড়াও একটু কম পড়ত যত দূর মনে পড়ে।
আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে জীর্ণ বিবর্ণ হয়েও  সেসবের কিছু কিছু আজও টিকে আছে ।  নেই শুধু চাচার হোটেল আর বেলাগাছিয়া ট্রাম ডিপো থেকে ছাড়া ট্রাম গুলো । স্বামীজীর বাড়িটা সংস্কার হওয়ার সময় উল্টো ফুটে স্থানান্তরিত হয়েছিল চাচার হোটেল। তারপর থেকে আর বিশেষ চলেনি বোধ হয় । শেষ বছর দুয়েক আগে সরস্বতী পুজোয় কাটলেট খেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল ঠিক ভালো চলছে না । তারপর তো বন্ধ ই দেখি । এদিকে বছর কয়েক আগে বেলগাছিয়া ব্রিজের ট্রাম লাইনের  কাজ শুরু হল । জানতাম লাইন সংস্কার হচ্ছে । কিন্তু তারপর তো আর  চালুই  হল না । আগেই বন্ধ হয়ে গেছিল গ্যালিফ স্ট্রীট  ট্রাম ডিপো । বেলাগাছিয়া ডিপোর ট্রাম চালু না হলে চির তরে হারিয়ে যাবে শ্যামবাজার থেকে শিয়ালদা গামী ট্রাম ।  ক্লাস সিক্স-সেভেন  নাগাদ একবার বর্ষা কালে বিধান সরণি তে ট্রাম বন্ধ হয়ে খুব মুশকিলে পড়েছিলাম । তখন ভরসা ছিল গ্যালিফ স্ট্রীট ডিপোর ১২/১৫ নম্বর । সে ট্রাম আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রোড হয়ে শিয়ালদা জগৎ সিনেমার সামনে থেকে বেঁকে কলেজ স্ট্রীট হয়ে হাওড়া ব্রিজের তলার ডিপোতে চলে যেত যতদূর মনে পড়ে ।
আবছা মনে পড়ে।  হয়ত হাওড়া ব্রিজের ওপর ট্রাম চলতে ও আমি দেখেছি । তখন স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে বোধ হয়। বিনুর স্বপ্নে দেখা মস্ত বিছের মত ট্রামের এলীগরী ভালোই অনুভূত হয়েছিল ।  কতদিন দেখেছি গ্যালিফ স্ট্রীট এ রোববারের  শখের বাজারের অসহ্য ভিড়ের মধ্যে ডিপো থেকে আধপথ বেরিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়  স্থাণু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মহাকালের মত একটি ট্রাম । ফ্যান্সি মার্কেট থেকে বেড়িয়ে ময়দানের ঘাস চিরে ছুটে গেছি ট্রামে করে ।বাগবাজার লকগেটের পাশের ডিপো টা বোধ হয় চালু ছিল কিছুদিন আগেও । বন্ধুরা মিলে ডিপোর পাশের গেট দিয়ে ঢুকে যেতাম লকগেটের কাছে । আড্ডা দিতে দিতে সূর্যাস্ত , যতক্ষণ না মশার জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে উঠতে হচ্ছে । বেরিয়েই চলন্ত ট্রামে একলাফে উঠে পড়তাম দীর্ঘ পথশ্রমের খাটনি খানিকটা লাঘব করার ধান্দায় ।
পি সি সরকারের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ট্রাম যেত শুনেছি গড়িয়া হাট ডিপো তে । জানিনা সে এখন চলে কিনা । সম্ভবত রবীন্দ্র সরণী বা অন্য কোনো বেশ প্রাচীন ট্রাম লাইনের ধার ঘেষে ল্যাম্প পোস্ট এর মত  ব্রিটিশ স্থাপত্যের তোরণ থাকত , যা থেকে  ট্রামের তার ঝুলে থাকত । আজকের মত পুরোপুরি ওভারহেড ইলেকট্রিক কেবলিং নয় সেটা  । পুরোনো লোহার সি টি সি র স্থায়ী ট্রাম স্টপেজ বোর্ড । লেখা – এখানে ট্রাম থামবে । ওয়েলিংটন স্কোয়ারের কাছে অনেকদিন অবধি ছিল ট্রামের ঘোড়ার জল খাওয়ার জায়গা । সেটাই বোধ হয় এখন একটা বড় পানীয় জলের কলতলা আর মুক্ত স্নানাগার । এরকম অনেক জলের আধার শুনেছি রাস্তায় থাকত ঘোড়ায় চলা ট্রামের ধুলো ওড়া কমানোর জন্য আর ট্রাম লাইনকে মসৃন রাখার জন্য । নোনাপুকুরে ছিল ট্রাম কোম্পানির নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র । পরবর্তী কালে খরচা কমানোর জন্য  কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই এর সাথে চুক্তি করার পর সে ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায় ।
ট্রাম কোম্পানি ট্রাম কে বাঁচানোর , জনপ্রিয় করার অনেক চেষ্টা করছে ।  আগেকার মত দ্বিতীয় শ্রেণী বলে এখন আর কিছু নেই । একটি রঙিন ট্রাম খাদ্য পণ্যের বিপণনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে । ভাড়া লাগবে না ।  চড়ে বসলেই হল। সুন্দর শহরের বুকে এক টুকরো জয় রাইড হয়ে যাবে ।সঙ্গে মিলবে নানা রকমের মুখরোচক খাবার । আছে একটি নামি জামা কাপড়ের সংস্থার বিপণন ট্রাম । আস্ত একটা দু কামরার শপিং মল সেটি । শহর জুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে ছোট এক কামরার সুসজ্জিত শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাম । আছে গোটা দিন ট্রাম ভাড়া করে ঘোরার ব্যবস্থা । তখন মাধ্যমিক । রোববার করে মাঝে মাঝেই দেখতাম চিতপুর থেকে গ্রে স্ট্রীট ধরে ছুটে যাচ্ছে হেরিটেজ সফরের ট্রাম । বছর খানেক আগে একবার পুজোর সময় বোধ হয়, দেখেছিলাম বয়স্কদের পুজো ঘোরানোর জন্য বিশেষ ট্রাম । ধর্মতলায় ট্রাম ডিপোর একটি ট্র্যাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা আছে ট্রাম জাদুঘর স্মরণিকা ।  পরিবেশ বান্ধব এই যান জড়িয়ে আছে শহরের প্রতিটি শিরায় ধমনীতে । শ্যামবাজার থেকে ট্রামে উঠে ধর্মতলা হয়ে এসপ্লেনেডে যেতাম। মনুমেন্ট এর পাশ দিয়ে হেঁটে শহরের শোভা দেখতে দেখতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে যেতাম। ফুচকা খেতে খেতে পার্কে ঘুরতাম। আবার ট্রামে চেপে ফিরে আসতাম শ্যামবাজারে। সেগুলো আজ সেলুলয়েডের মতো ভেসে ওঠে। বেঁচে থাকুক ট্রাম । বেঁচে থাকুক ভালোবাসা ।
পুনশ্চ : কয়েক বছর আগের লেখা । এর মধ্যে অনেক ট্রাম রুট বন্ধ হয়ে গেছে । শ্যামবাজার ডিপো থেকে ধর্মতলা গামী  ঐতিহ্যবাহী ৫ নম্বর ট্রাম ও মাঝে বন্ধ ছিল । আবার চালু হয়েছে ।পরিসেবা আগের মত নেই। অনেক দাঁড়ালে কদাচিৎ একটার দেখা মেলে। আর এখন তো শুনছি যাত্রী পরিবাহী ট্রামই নাকি আর থাকবে না। পুজো পরিক্রমার ট্রাম ও এবার আর চলবে না । তবুও চাইব । বেঁচে থাকুক ট্রাম ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

কলকাতার স্বপ্নের জাদুকর ট্রাম তুলে দেওয়ার অশনি সংকেত

আপডেট সময়- ০৭:৩৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,
কলকাতা প্রতিনিধি।।
সারা বিশ্বে যতোই আধুনিকতার ছোঁয়াচ লাগুক না কেন, যতোই দ্রুতগামী যানবাহন, বুলেট ট্রেন, মনোরেল,স্পুটনিক, রকেট এসে সাড়া জাগিয়ে দিক না কেন, ভারতে ব্রিটিশের বপন করা ট্রাম যুগে যুগে বাঙালির স্বপ্নে, চলনে,ভাবনায় জড়িয়ে রয়েছে। প্রেম,ভালবাসা, আড্ডা, নিরাপদে যাত্রার একমাত্র সহায়ক ছিল এই ট্রাম।ট্রাম অনুভূতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে রয়েছে।
সেই স্কুল জীবনের শুরু থেকেই ট্রামে শুরু হয়েছে পথ চলা।
ট্রেনের সেই হো হুস শব্দ করে স্টার্ট করা , তারপর অংআং শব্দ করে গতি নেয়া একটা স্বপ্নের মতো মনে হয় আজও।
ট্রাম – সেকেন্ড ক্লাস কামরা । এটাতে কোনো পাখা নেই ।
ছোটবেলার বেলাগাছিয়া ট্রাম ডিপো থেকে ১ নম্বর , ২ নম্বর , ১১ নম্বর ট্রামে করে হিন্দু স্কুলে যাওয়ার স্মৃতিটা মনে পাকাপাকি ভাবে গেঁথে আছে ।অফিস টাইমে ওয়ান-ওয়ে হয়ে যাওয়া কলেজ স্ট্রীট ধরে সোজা স্কুলের গেট অবধি  পৌঁছে যাওয়ার  আর কোনো উপায়ই ছিল না । বাবা মাও নিশ্চিন্তে ট্রামে তুলে দিয়ে কাজে চলে যেতেন । জানতেন কন্ডাক্টর কাকু ঠিকই আমাদের সাবধানে নামিয়ে দেবেন । ফেরার সময়ও একই রুটিন । স্কুলের কোনো স্টাফ ট্রামে তুলে দিত ।  কোনো রাস্তা পার হতে হত না । বাস স্টপে নেমে এক ছুটে সোজা বাড়ি ।
অফিস টাইমে ভয়াবহ ভিড় হত সেই ট্রামে । আমরা অবশ্যই কোনো কাকুর কোলে বা জানলার ধারে । সৌজন্যে কন্ডাক্টর কাকু । সেই ট্রামের জানলা দিয়ে দেখতাম বেনারসী প্যালেস , সংস্কৃত বুক ডিপো , নজরুল ইসলাম এর ছবি  সহ অগ্নি বীণার মুরাল  ( ডি. এম. লাইব্রেরি ) , কখনো স্বামীজীর বাড়ির তলায় অধুনা লুপ্ত চাচার হোটেল থেকে প্রেমিকার রুমালে মুখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসছে কলেজ ফেরত প্রেমিক ।  আসল ফাউল কাটলেট পাওয়া যেত সে দোকানে । পুরু মুরগির ফিলে ভর্তি গোলাকার স্বর্গীয়  কাটলেট- থেকে একটা  হাড় সুকৌশলে বেরিয়ে আছে । সঙ্গে প্রমাণ সাইজের চাকা চাকা গোলাকৃতি একটুকরো করে পেঁয়াজ , টমেটো ও শসা । শ্রীমানি মার্কেটের উল্টো দিকে সেই চৌধুরী ওয়াচ কোম্পানির গাড়িবারান্দা ওলা বিশাল ঘড়ির দোকানটা, যার বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এ চা বাগানে নিবিড় মনে  চা পাতা  বাছাতে ব্যস্ত এক রমণী কে দেখা যেত । একটি আধুনিক ঘড়ি তার হাতে শোভা পাচ্ছে । আর্য্য সমাজ , ব্রাহ্ম সমাজের বড় বড় বাড়িগুলো দেখতে দেখতে কখন যে স্কুলের গেটে পৌঁছে যেতাম খেয়ালই নেই । কন্ডাক্টর কাকু মৃদু প্রশ্রয় মিশ্রিত বকুনি দিয়ে নামিয়ে দিতেন । কখনো ফেরার সময় ওয়াই এম সি এর ক্যান্টিন থেকে ঘুগনি খেতে খেতেই ছুট । এপার থেকে চিৎকার করে ডাকলে গাড়ি দাঁড়িয়ে যেত । ড্রাইভার কাকু ধমক দিয়ে তুলে নিতেন । পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়েও বকুনি খেতে  হত মাঝে মাঝেই । ট্রামের ভেতরে একটা খাপ মত। তাতে একটা তারিখ লেখা কার্ড থাকত । সেটা বোধ হয় অল ডে পাস বা মান্থলি করার তারিখ । স্কুলের অনেক বন্ধু কেই দেখেছি পকেট থেকে একটা মান্থলি বের করে কন্ডাক্টর কাকু কে দেখিয়ে তার একধার থেকে দৈনিক একটা করে  কাগজ ছিঁড়ে ফেলে দিতে  । সেই ট্রামে আবার মাঝে মাঝে চেকার উঠত । তার কাজ ছিল টিকিট টা দেখে আরেকটি পাঞ্চ করে ফেরত দেওয়া । দ্বিতীয় শ্রেণীর কামরায় পাখা থাকত না । ভাড়াও একটু কম পড়ত যত দূর মনে পড়ে।
আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে জীর্ণ বিবর্ণ হয়েও  সেসবের কিছু কিছু আজও টিকে আছে ।  নেই শুধু চাচার হোটেল আর বেলাগাছিয়া ট্রাম ডিপো থেকে ছাড়া ট্রাম গুলো । স্বামীজীর বাড়িটা সংস্কার হওয়ার সময় উল্টো ফুটে স্থানান্তরিত হয়েছিল চাচার হোটেল। তারপর থেকে আর বিশেষ চলেনি বোধ হয় । শেষ বছর দুয়েক আগে সরস্বতী পুজোয় কাটলেট খেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল ঠিক ভালো চলছে না । তারপর তো বন্ধ ই দেখি । এদিকে বছর কয়েক আগে বেলগাছিয়া ব্রিজের ট্রাম লাইনের  কাজ শুরু হল । জানতাম লাইন সংস্কার হচ্ছে । কিন্তু তারপর তো আর  চালুই  হল না । আগেই বন্ধ হয়ে গেছিল গ্যালিফ স্ট্রীট  ট্রাম ডিপো । বেলাগাছিয়া ডিপোর ট্রাম চালু না হলে চির তরে হারিয়ে যাবে শ্যামবাজার থেকে শিয়ালদা গামী ট্রাম ।  ক্লাস সিক্স-সেভেন  নাগাদ একবার বর্ষা কালে বিধান সরণি তে ট্রাম বন্ধ হয়ে খুব মুশকিলে পড়েছিলাম । তখন ভরসা ছিল গ্যালিফ স্ট্রীট ডিপোর ১২/১৫ নম্বর । সে ট্রাম আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রোড হয়ে শিয়ালদা জগৎ সিনেমার সামনে থেকে বেঁকে কলেজ স্ট্রীট হয়ে হাওড়া ব্রিজের তলার ডিপোতে চলে যেত যতদূর মনে পড়ে ।
আবছা মনে পড়ে।  হয়ত হাওড়া ব্রিজের ওপর ট্রাম চলতে ও আমি দেখেছি । তখন স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে বোধ হয়। বিনুর স্বপ্নে দেখা মস্ত বিছের মত ট্রামের এলীগরী ভালোই অনুভূত হয়েছিল ।  কতদিন দেখেছি গ্যালিফ স্ট্রীট এ রোববারের  শখের বাজারের অসহ্য ভিড়ের মধ্যে ডিপো থেকে আধপথ বেরিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়  স্থাণু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মহাকালের মত একটি ট্রাম । ফ্যান্সি মার্কেট থেকে বেড়িয়ে ময়দানের ঘাস চিরে ছুটে গেছি ট্রামে করে ।বাগবাজার লকগেটের পাশের ডিপো টা বোধ হয় চালু ছিল কিছুদিন আগেও । বন্ধুরা মিলে ডিপোর পাশের গেট দিয়ে ঢুকে যেতাম লকগেটের কাছে । আড্ডা দিতে দিতে সূর্যাস্ত , যতক্ষণ না মশার জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে উঠতে হচ্ছে । বেরিয়েই চলন্ত ট্রামে একলাফে উঠে পড়তাম দীর্ঘ পথশ্রমের খাটনি খানিকটা লাঘব করার ধান্দায় ।
পি সি সরকারের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ট্রাম যেত শুনেছি গড়িয়া হাট ডিপো তে । জানিনা সে এখন চলে কিনা । সম্ভবত রবীন্দ্র সরণী বা অন্য কোনো বেশ প্রাচীন ট্রাম লাইনের ধার ঘেষে ল্যাম্প পোস্ট এর মত  ব্রিটিশ স্থাপত্যের তোরণ থাকত , যা থেকে  ট্রামের তার ঝুলে থাকত । আজকের মত পুরোপুরি ওভারহেড ইলেকট্রিক কেবলিং নয় সেটা  । পুরোনো লোহার সি টি সি র স্থায়ী ট্রাম স্টপেজ বোর্ড । লেখা – এখানে ট্রাম থামবে । ওয়েলিংটন স্কোয়ারের কাছে অনেকদিন অবধি ছিল ট্রামের ঘোড়ার জল খাওয়ার জায়গা । সেটাই বোধ হয় এখন একটা বড় পানীয় জলের কলতলা আর মুক্ত স্নানাগার । এরকম অনেক জলের আধার শুনেছি রাস্তায় থাকত ঘোড়ায় চলা ট্রামের ধুলো ওড়া কমানোর জন্য আর ট্রাম লাইনকে মসৃন রাখার জন্য । নোনাপুকুরে ছিল ট্রাম কোম্পানির নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র । পরবর্তী কালে খরচা কমানোর জন্য  কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই এর সাথে চুক্তি করার পর সে ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায় ।
ট্রাম কোম্পানি ট্রাম কে বাঁচানোর , জনপ্রিয় করার অনেক চেষ্টা করছে ।  আগেকার মত দ্বিতীয় শ্রেণী বলে এখন আর কিছু নেই । একটি রঙিন ট্রাম খাদ্য পণ্যের বিপণনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে । ভাড়া লাগবে না ।  চড়ে বসলেই হল। সুন্দর শহরের বুকে এক টুকরো জয় রাইড হয়ে যাবে ।সঙ্গে মিলবে নানা রকমের মুখরোচক খাবার । আছে একটি নামি জামা কাপড়ের সংস্থার বিপণন ট্রাম । আস্ত একটা দু কামরার শপিং মল সেটি । শহর জুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে ছোট এক কামরার সুসজ্জিত শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাম । আছে গোটা দিন ট্রাম ভাড়া করে ঘোরার ব্যবস্থা । তখন মাধ্যমিক । রোববার করে মাঝে মাঝেই দেখতাম চিতপুর থেকে গ্রে স্ট্রীট ধরে ছুটে যাচ্ছে হেরিটেজ সফরের ট্রাম । বছর খানেক আগে একবার পুজোর সময় বোধ হয়, দেখেছিলাম বয়স্কদের পুজো ঘোরানোর জন্য বিশেষ ট্রাম । ধর্মতলায় ট্রাম ডিপোর একটি ট্র্যাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা আছে ট্রাম জাদুঘর স্মরণিকা ।  পরিবেশ বান্ধব এই যান জড়িয়ে আছে শহরের প্রতিটি শিরায় ধমনীতে । শ্যামবাজার থেকে ট্রামে উঠে ধর্মতলা হয়ে এসপ্লেনেডে যেতাম। মনুমেন্ট এর পাশ দিয়ে হেঁটে শহরের শোভা দেখতে দেখতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে যেতাম। ফুচকা খেতে খেতে পার্কে ঘুরতাম। আবার ট্রামে চেপে ফিরে আসতাম শ্যামবাজারে। সেগুলো আজ সেলুলয়েডের মতো ভেসে ওঠে। বেঁচে থাকুক ট্রাম । বেঁচে থাকুক ভালোবাসা ।
পুনশ্চ : কয়েক বছর আগের লেখা । এর মধ্যে অনেক ট্রাম রুট বন্ধ হয়ে গেছে । শ্যামবাজার ডিপো থেকে ধর্মতলা গামী  ঐতিহ্যবাহী ৫ নম্বর ট্রাম ও মাঝে বন্ধ ছিল । আবার চালু হয়েছে ।পরিসেবা আগের মত নেই। অনেক দাঁড়ালে কদাচিৎ একটার দেখা মেলে। আর এখন তো শুনছি যাত্রী পরিবাহী ট্রামই নাকি আর থাকবে না। পুজো পরিক্রমার ট্রাম ও এবার আর চলবে না । তবুও চাইব । বেঁচে থাকুক ট্রাম ।