সর্বশেষঃ
ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত-১, আহত-৪০
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০১:৪৯:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩০ বার পড়া হয়েছে
নয়ন মিয়া,ভৈরব(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি।
ভৈরবে সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে দুই বংশের লোকজনের পূর্ববিরোধের জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম ইকবাল মিয়া (৩০)। তিনি মৌটুপি গ্রামের সরকার বাড়ির ধন মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আধিপত্য ধরে রাখাকে কেন্দ্র করে মৌটুপি গ্রামের কর্তা বাড়ি ও সরকার বাড়ির লোকজনের মধ্যে স্বাধীনতার আগ থেকেই বিরোধ চলে আসছে। বর্তমানে কর্তা বাড়ির নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন। সরকার বাড়ির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শেফায়েত উল্লাহ সরকার। নানা বিষয় নিয়ে দুই বাড়ির মধ্যে বছরে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের একাধিক মানুষের প্রাণ গেছে।
গ্রামের বাসিন্দা ও দুই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ঈদুল আজহার আগের দিন ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে আহত কর্তবাড়ির নাদিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৯ জুলাই মারা যান। এ ঘটনায় সরকারি বাড়ির লোকজনকে আসামি করে মামলা হয়। ১২ আগস্ট সরকার বাড়ির ৬৯ জন জামিনে মুক্ত হন। পরদিন দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়। বিরোধ মেটাতে আগামী রোববার সালিশের দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কর্তা বাড়ির লোকজন ঘোষণা দেন যে সালিসের আগে সরকার বাড়ির অন্তত একজনের লাশ চান। এ অবস্থায় সালিসের আগে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর কর্তা বাড়ির লোকজন দা–বল্লম নিয়ে সরকার বাড়িতে হামলা চালান বলে অভিযোগ। সরকার বাড়ির লোকজনও দা–বল্লম নিয়ে প্রতিরোধে নামেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষের একপর্যায়ে সরকার বাড়ির ইকবাল বুকে বল্লমবিদ্ধ হন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারিয়া নাজনীন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ইকবাল মারা যান। মূলত বুকে বল্লমবিদ্ধ হওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৪০ জন। এর মধ্যে ৩০ জন সরকার বাড়ির, আর কর্তা বাড়ির ১০ জন। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি সাফি মিয়া, ইয়াসিন মিয়া, রাকিব মিয়া, শাহ আলম, তোফাজ্জল হোসেন, লাদেন মিয়া, হোসাইন মিয়া ও হেলেনা বেগমের অবস্থা গুরুতর। পরে লাদেন মিয়াকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ভৈরব হাসপাতালে ভর্তি আহত ব্যক্তিরা সরকার বাড়ির। কর্তা বাড়ির আহত ব্যক্তিরা কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মুঠোফোন বন্ধ থাকায় সরকার বাড়ির নেতৃত্বে থাকা শেফায়েত উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ওই বাড়ির মো. সালমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘মূলত হত্যার বদলা নিতে আজ কর্তা বাড়ির লোকজন আমাদের বাড়ির ইকবালকে মেরে ফেলল।’
তবে কর্তা বাড়ির তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সংঘর্ষের উসকানিদাতা সরকার বাড়ির লোকজন। তাঁর ধারণা, সরকার বাড়ির লোকজনের ছোড়া বল্লমের আঘাতেই ইকবাল মারা গেছেন।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।