ঢাকা ০১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিক্টোরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গাছ বিক্রির অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একমাত্র বালক এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ঐতিহ্যবাহী এ স্কুল থেকে বাংলাদেশ সরকার সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রবাসে এবং শিক্ষার গুনে অনেক নাম কুড়িয়েছে স্কুলটি। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। সম্প্রতি স্কুলের গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছন। তারমধ্যে সেগুন, ঔষধি অর্জুন সহ মূল্যবান গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এই প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
গত কিছুদিন ওই স্কুলের প্রায় অর্ধশত বছরেরও অধিক পুরনো গাছ কেটে বিক্রি করা করেছেন ও অহেতুক ঝড়ের অজুহাতে গাছ গুলো কেটে ডালপালা নামে মাত্র রেখেছেন স্কুল প্রাঙ্গণে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ১৪/১৫ লাখ টাকা। কোনো ধরনের দরপত্র ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গাছ কেটে ফেলেছেন সুকৌশলে এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন নাম না বলা শর্তে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়  বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী নাম না বলা শর্তে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নামকরা ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলের মেহগনি, আকাশি, সেগুন, অর্জুন, ইউকালেক্টর, বেলজিয়াম এসব রোপন করা হয় প্রায় অর্ধশতক বছরের ও আগে। গাছগুলো বেশ বড় আকৃতির হওয়ায় নজরে আসে প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর। বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই প্রতিনিয়ত গাছগুলো কেটে বিক্রি করছেন বেশ কিছুদিন ধরে। কৌশলে ৫/৭টি করে প্রায় ৪০/৫০টি গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে।
যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে অজুহাতে কয়েকটি গাছ স্কুলে রাখলেও বাকি গাছগুলো অন্যত্র বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
পরিচয় গোপন রাখা শর্তে ওই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্বেচ্ছাচারিতার চরমে পৌঁছে গেছে। তিনি আরও বলেন অভিযোগ বলে শেষ হবার নয়। তবে ভয়ে এসব বিষয়ে কথা বলার কেউ নেই। আমি বলছি জানতে পারলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে অনেক বেশি এবং প্রধান শিক্ষকের অনেক উপরে হাত আছে মেনেজ করে নিবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ, বনবিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই গাছগুলো কেটে বিক্রি করা বেআইনি। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সদ্য পরিবেশ সৃষ্ট রেমাল ঝড়ে কিছু গাছ উপড়ে পড়ে ও ঝড় তুফান এর কারনে গাছ উপরে ও ভেঙে ক্লাস রুমের উপর ও বিদ্যুৎ এর লাইনে পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই আমি ঐ গাছগুলো কেটে ফেলি। তবে প্রশ্নের একপর্যায়ে প্রশাসন বা বন বিভাগ অবগত আছেন কি না তার উত্তরে অনুমতি নেই এবং আমার পেছনে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এবং প্রধান শিক্ষক ওনার বক্তব্য বলেন,যে সো মিলের মালিক একজন বেলাল ভাই ওনার মাধ্যমে লোক আনিয়ে গাছ কাটান। কিন্তু ঐ সো মিলের মালিক বলেন ওনার সো মিলে কোন গাছ আসেনি ভিক্টোরিয়া স্কুলের ও ভিক্টোরিয়া স্কুলের সাথে বিভিন্ন ঝামেলা রয়েছে জমি সংক্রান্ত বিরোধে মামলাও আছেন আদালতে চলমান।
বনবিভাগের কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার মোঃ আলী তাহের বলেন স্কুলের গাছ কাটার বিষয়ে অবগত নন এবিষয়ে ইউএনও অফিসে অভিযোগ করতে জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তালেব বলেন, আমি এবিষয়ে অবগত নই। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমাকে বলেন। আমি শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের জন্য বলেছি। গাছ কাটার জন্য অনুমতি বিহীন কাটা হয়ে থাকলে অপরাধ করেছেন। অতি দ্রুত এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত দু’দিন হলেও এ বিষয়ে কোন তৎপর ভূমিকা চোঁখে না পড়ায়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. ঊর্মি বিনতে সালাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভিক্টোরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গাছ বিক্রির অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একমাত্র বালক এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ঐতিহ্যবাহী এ স্কুল থেকে বাংলাদেশ সরকার সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রবাসে এবং শিক্ষার গুনে অনেক নাম কুড়িয়েছে স্কুলটি। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। সম্প্রতি স্কুলের গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছন। তারমধ্যে সেগুন, ঔষধি অর্জুন সহ মূল্যবান গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এই প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
গত কিছুদিন ওই স্কুলের প্রায় অর্ধশত বছরেরও অধিক পুরনো গাছ কেটে বিক্রি করা করেছেন ও অহেতুক ঝড়ের অজুহাতে গাছ গুলো কেটে ডালপালা নামে মাত্র রেখেছেন স্কুল প্রাঙ্গণে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ১৪/১৫ লাখ টাকা। কোনো ধরনের দরপত্র ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গাছ কেটে ফেলেছেন সুকৌশলে এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন নাম না বলা শর্তে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়  বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী নাম না বলা শর্তে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নামকরা ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলের মেহগনি, আকাশি, সেগুন, অর্জুন, ইউকালেক্টর, বেলজিয়াম এসব রোপন করা হয় প্রায় অর্ধশতক বছরের ও আগে। গাছগুলো বেশ বড় আকৃতির হওয়ায় নজরে আসে প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর। বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই প্রতিনিয়ত গাছগুলো কেটে বিক্রি করছেন বেশ কিছুদিন ধরে। কৌশলে ৫/৭টি করে প্রায় ৪০/৫০টি গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে।
যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে অজুহাতে কয়েকটি গাছ স্কুলে রাখলেও বাকি গাছগুলো অন্যত্র বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
পরিচয় গোপন রাখা শর্তে ওই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্বেচ্ছাচারিতার চরমে পৌঁছে গেছে। তিনি আরও বলেন অভিযোগ বলে শেষ হবার নয়। তবে ভয়ে এসব বিষয়ে কথা বলার কেউ নেই। আমি বলছি জানতে পারলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে অনেক বেশি এবং প্রধান শিক্ষকের অনেক উপরে হাত আছে মেনেজ করে নিবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ, বনবিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই গাছগুলো কেটে বিক্রি করা বেআইনি। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সদ্য পরিবেশ সৃষ্ট রেমাল ঝড়ে কিছু গাছ উপড়ে পড়ে ও ঝড় তুফান এর কারনে গাছ উপরে ও ভেঙে ক্লাস রুমের উপর ও বিদ্যুৎ এর লাইনে পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই আমি ঐ গাছগুলো কেটে ফেলি। তবে প্রশ্নের একপর্যায়ে প্রশাসন বা বন বিভাগ অবগত আছেন কি না তার উত্তরে অনুমতি নেই এবং আমার পেছনে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এবং প্রধান শিক্ষক ওনার বক্তব্য বলেন,যে সো মিলের মালিক একজন বেলাল ভাই ওনার মাধ্যমে লোক আনিয়ে গাছ কাটান। কিন্তু ঐ সো মিলের মালিক বলেন ওনার সো মিলে কোন গাছ আসেনি ভিক্টোরিয়া স্কুলের ও ভিক্টোরিয়া স্কুলের সাথে বিভিন্ন ঝামেলা রয়েছে জমি সংক্রান্ত বিরোধে মামলাও আছেন আদালতে চলমান।
বনবিভাগের কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার মোঃ আলী তাহের বলেন স্কুলের গাছ কাটার বিষয়ে অবগত নন এবিষয়ে ইউএনও অফিসে অভিযোগ করতে জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তালেব বলেন, আমি এবিষয়ে অবগত নই। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমাকে বলেন। আমি শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের জন্য বলেছি। গাছ কাটার জন্য অনুমতি বিহীন কাটা হয়ে থাকলে অপরাধ করেছেন। অতি দ্রুত এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত দু’দিন হলেও এ বিষয়ে কোন তৎপর ভূমিকা চোঁখে না পড়ায়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. ঊর্মি বিনতে সালাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।