কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ফরিদগঞ্জে কামারদের ব্যস্ততা
- আপডেট সময়- ০৭:৪৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ৬০ বার পড়া হয়েছে
এমতেয়াজ ফরহাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি।।
টুংটাং শব্দে কামার পাড়ায় কোরবানি ঈদের আমেজ। চলছে হাঁপরের বাতাসে কয়লায় লোহা পুড়িয়ে হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। আর ৭দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার কামার শিল্পরা।
বছরজুড়ে অলস সময় পার করলেও কোরবানের মৌসুমে বেড়ে যায় তাদের ব্যস্ততা। চাপাতি, ছুরি, চাকু, দা ও বঁটি বানানোর টুংটাং শব্দে নিরবতার খোলস ভেঙ্গে সরব হয়ে উঠেছে কামারপাড়া। তবে কয়লা আর কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে বলে জানান কামার শিল্পীরা।
রোববার (৯ জুন) উপজেলা সদর ফরিদগঞ্জ বাজার, রূপসা বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, নয়ারহাট বাজার, কালির বাজার, চান্দ্রা বাজার, মুন্সির হাট এলাকাসহ বেশকিছু কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, পশু কোরবানির জন্য দা, ছুরি, চাপাতিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে এখন থেকেই কামারপাড়ায় ঢুঁ মারছেন সাধারণ মানুষ। কেউবা আসছেন ঘরে থাকা দা-বটি-ছুড়িতে শান(দার) দিতে। শান দেওয়া নতুন দা, বঁটি, ছুরি ও চাকু সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানের সামনে।
দোকানের জ্বলন্ত আগুনের তাপে কামারদের কপাল থেকে ঝরছে ঘাম। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। তবুও থেমে নেই তারা। সকাল পেরিয়ে রাত পর্যন্ত চলছে হাতুড়ি পেটার কাজ।
কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদকে ঘিরে গরুর বাজার এখনো জমে ওঠেনি। তবে যারা নতুন সরঞ্জাম বানাবেন তাদের কাছ থেকে অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। যাদের ঘরে সরঞ্জাম মজুদ আছে তারাও শান দিতে কামারশালায় আসছেন। তবে অধিকাংশ মানুষ কোরবানের গরু কিনে অথবা ঈদের ২-৩ আগে দা, ছুরি, বটিতে ধার দিতে চান। তখন ব্যস্ততা আরো বাড়বে। কয়লা, লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেড়ে গেছে। ফলে লাভের পরিমাণটা অনেক কমে গেছে বলে জানান তারা।
বর্তমানে পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ৩শ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৬শ টাকা, বটি ৩শ থেকে ৫শ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি মান ও আকারভেদে ৩শ থেকে ১ হাজার টাকা, হাঁসুয়া ১৫০, মাংস কাটার ডাসা ২ হাজার টাকা, কাটারি ২৫০ থেকে ৩শ টাকা, কুড়াল ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা ও চাপাতি ৫শ থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফরিদগঞ্জ বাজারের কামার ওরুন কর্মকার কর্মকারের দোকানে কথা হয় ক্রেতা মফিজুলের সাথে। তিনি বলেন, ঈদ যতোই ঘনিয়ে আসছে, কামাররা তাদের মজুরি ও সরঞ্জামের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি একটি ছুরি ২০০ টাকা দিয়ে কিনেছি যা চার পাঁচ মাস আগেও ১০০ টাকা ছিল। পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করতেও বেশি দাম নিচ্ছেন কামাররা।
এদিকে দা, বটি, ছোরা, চাকুর পাশাপাশি মাংস বানানোর কাজের জন্য গাছের গুঁড়ির চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক। স্থানীয় করাতকলগুলোয় গাছের গুঁড়ি কিনতে অনেকে এখনই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন কশাইসহ অনেকে। বর্তমানে ৫০ থেকে ২০০ টাকায় মিলছে এসব গুঁড়ি।