সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, উপজেলা প্রশাসন, কুমারখালি, কুষ্টিয়া, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ
কুমারখালী পৌরসভায় ৪৩ মাসের বেতন বকেয়া: ফটকে তালা

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ১২:৪৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৪৪ বার পড়া হয়েছে

হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
প্রায় ৪৩ মাসের বকেয়া বেতন প্রায় আট কোটি টাকা। বেতন পরিশোধ, বেতন-ভাতা পরিশোধে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বৈষম্য দূরীকরণ এবং সম্প্রতি বদলি করা এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধের দাবিতে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন কুষ্টিয়ার প্রথম শ্রেণির কুমারখালী পৌরসভার কর্মচারীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত এক মাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। তাঁরা পৌরসভায় এসে ফিরে যাচ্ছেন সেবা না পেয়ে।
পৌরসভায় সেবা নিতে এসেছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলংগী এলাকার বাসিন্দা ফারিহা ফাতেমা। তিনি বলেন, ‘বাচ্চার পাসপোর্ট করব। সে জন্য রোববার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দিয়ে গিছিলাম। আজ নিতে এসে দেখি তালা ঝুলছে। কাজ বন্ধ রয়েছে। অনেকেই সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।’
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে কর্মচারীরা। ফটকে ঝুলছে তালা। এ সময় কুমারখালী পৌর কর্মচারী সংসদের সভাপতি ও পৌরসভার প্রধান সহকারী রাজু আহমেদ বলেন, ৫২ জন কর্মচারীর ৪৩ মাসের প্রায় আট কোটি টাকা বেতন বকেয়া। তা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ সম্প্রতি বদলি করা প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামানের প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্র্যাচুইটি পরিশোধের জন্য চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। পৌরসভার ইতিহাসে কোনো দিন কারও গ্র্যাচুইটি ভাতা দেওয়ার ঘটনা নেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা।
রাজু আহমেদ জানান, বদলি করা প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধ এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক মাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। বাংলাদেশ পৌর কর্মচারী সংসদের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, বছরের পর বছর কর্মচারীদের বেতন বকেয়া। তাঁরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অথচ কর্মকর্তারা বেতন–ভাতা নিয়ে উৎসব করছেন। একই কার্যালয়ে দুই নিয়ম চলতে পারে না। এ বৈষম্য দূর করে দ্রুত বেতন পরিশোধের দাবি জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিপূর্বে কুমারখালী পৌরসভায় কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর গ্র্যাচুইটি পরিশোধ করা হয়নি। অথচ হঠাৎ বদলি করা এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা প্রদানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পৌরসভার হিসাবরক্ষক ও সহকারী প্রকৌশলীকে বের করে দিয়ে কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন কর্মচারী। এ বিষয়ে মুঠোফোনে হিসাবরক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। কর্মচারীরা কক্ষে তালা লাগিয়েছে। সে জন্য বাড়িতে চলে এসেছি।’
অনেক বছর আগে থেকেই কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কর্মবিরতির বিষয়টি জানতে পেরেছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।’