সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, উপজেলা প্রশাসন, গণমাধ্যম, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ
নওগাঁয় অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ: দুই মিল ম্যানেজারের অর্থদন্ডসহ জেল

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:০৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ৫৬ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ প্রতিনিধি।।
নওগাঁর মহাদেবপুরে মজুদদারীর দায়ে দুই চাল কলের ম্যানেজারের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও দুই ম্যানেজারের ৫ দিন করে কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই ঘটনার পর উপজেলার মিল মালিকেরা ধান কেনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি উপজেলার হাটবাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য মিল মালিকদের দায়ি করা হয়। তারা অধিক মুনাফার লোভে তাদের মিলে ধান চাল মজুদ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এরই ভিত্তিতে রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: আরিফুজ্জামান উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ হোসেনপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এসময় নাহার এগ্রো নামক অটো রাইস মিলে অনুমোদিত পাক্ষিক ছাঁটাই ক্যাপাসিটির অতিরিক্ত এক হাজার মেট্রিক টন ধান ও ২১০ মেট্রিক টন চাল এবং একই এলাকার আরডিএম অটো রাইস মিলে অনুমোদিত পাক্ষিক ছাঁটাই ক্যাপাসিটির অতিরিক্ত এক হাজার ২০০ মেট্রিক টন ধান ও ২৩২ মেট্রিক টন চাল অবৈধ মজুদ পাওয়া যায়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নাহার এগ্রোর ম্যানেজার মিরাজ আলী সরদারের ২০ হাজার টাকা ও আরডিএম অটো রাইস মিলের ম্যানেজার পঙ্কজ দেবনাথের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা আদায় হবার পর ওই দুই ম্যানেজারকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসে নেয়া হয়। পরে তাদের প্রত্যেকের ৫ দিন করে কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। রাতেই তাদেরকে নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাদন্ডপ্রাপ্ত নাহার এগ্রো অটো রাইস মিলের ম্যানেজার মিরাজ আলী সরদার নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার বেজোরা গ্রামের আব্দুস সামাদ সরদারের ছেলে এবং আরডিএম অটো রাইস মিলের ম্যানেজার পঙ্কজ দেবনাথ মহাদেবপুর উপজেলার ধনজইল গ্রামের মহাদেব দেবনাথের ছেলে।ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল আরেফিন, মহাদেবপুর সদর এল এস ডি জাহিদুল রহমান, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খুরশিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই ঘটনার পর উপজেলার আড়াইশ’ সিদ্ধ চালকল ও ৫০টি আতব চালকল মালিক ধান কেনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। নাহার এগ্রো অটো রাইস মিলের মালিক আলমগীর হোসেন জানান, তার মিলে শুধুমাত্র আতব ধান ক্রাসিং করা হয়। কোন সিদ্ধ চাল ক্রাসিং করা হয়না। বাজারে শুধু সিদ্ধ চালের দাম বেড়েছে। ওই দুই মিলে আতব ধান ও চাল মজুদ ছিল। আতব চাল বেশি বিক্রি না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মিলে পড়ে আছে। কিন্তু বাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি। তবু তাদের একসাথে জরিমানা এবং জেল উভয় দন্ডই দেয়া হয়েছে।
আলমগীর হোসেন ও আরডিএম অটো রাইস মিলের মালিক দুলাল চন্দ্র সাহা জানান, অভিযানের সময় তারা নিজে মিলে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ম্যানেজারের জেল জরিমানা করা হয়। কর্মচারিরা এভাবে সাজা পেলে কেউ আর মিলে কাজ করতে চাইবেন না। তাই তারা ওই দুই ম্যানেজারের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সব রকম ধান কেনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অনুমোদিত পাক্ষিক ক্রাসিং ক্যাপাসিটির অতিরিক্ত ধান ও চাল মজুদ রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গতবছর ১৬ জানুয়ারি উপজেলার সরস্বতিপুরে এসিআই অটো রাইস মিলের এক লক্ষ টাকা, ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানের ৫০ হাজার টাকা, সেবছর ২৭ সেপ্টেম্বর একই এলাকার সাপাহার চালকলের এক লক্ষ টাকা ও উপজেলা সদরের সোনালী ট্রেডার্স চালকলের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।