সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, মুন্সিগঞ্জ, লৌহজং
মুন্সীগঞ্জের হিমাগারে যান্ত্রিক ত্রুটি: কৃষকের ৩ কোটি টাকার আলু পঁচে যাওয়ার শঙ্কা

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৬:০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে একটি হিমাগারে মজুদ করা কৃষকের আলুতে পঁচন ধরেছে।সেখানে মজুদ ৪৫ হাজার বস্তা আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রায় শতাধিক কৃষক।এ অবস্থায় বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ওই হিমাগারে মজুদ কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা মূল্যের আলু পঁচে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।জেলার সিরাজাদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের রাজদিয়া গ্রামের(নাহার কোল্ড স্টোরেজ)কম্প্রেসার অচল হয়ে কৃষকের মজুদ করা আলুতে পঁচন দেখা দিয়েছে।কৃষকরা জানিয়েছেন,উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষক মার্চের প্রথম সপ্তাহে ওই হিমাগারে আলু মজুদ শুরু করেন।৫৫ কেজি করে বস্তাবন্দি করে এখন পর্যন্ত হিমাগারের ভেতর ৪৫ হাজার বস্তা আলু মজুদ রয়েছে তাদের।এছাড়া ভেতরে মজুদের জন্য কমপক্ষে ১০ হাজার বস্তা আলু হিমগারের বাইরে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।এরই মধ্যে ওই হিমাগারের গ্যাস লাইন অকেজো হয়ে কম্প্রেসার বিকল হয়ে পড়েছে।এতে ভেতরে মজুদকৃত ৩ কোটি টাকার আলুই পঁচে যাওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা।তারা আরো জানান,কবে এ হিমাগারে যান্ত্রিক ত্রুটির শুরু-তা তাদের জানা নেই। তবে ১০ দিন আগে আলুতে পঁচন ধরার খবর পেয়ে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন হিমাগারে।সপ্তাহ খানেক ধরে চেষ্টা চালিয়েও হিমাগার সচল করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।উপজেলার খিদিরপুর গ্রামের কৃষক আশরাফ হোসেন ঝন্টু জানান,তিনি ওই হিমগারে ২ হাজার বস্তা আলু মজুদের জন্য অগ্রীম বুকিং করেছেন।ইতোমধ্যে হিমাগারের ভেতর ঢুকিয়েছেন ১ হাজার বস্তা আলু।তিনি বলেন,বেশ কিছুদিন ধরে হিমগারের কম্প্রেসার চালু না হওয়ায় আমার সব আলুই পঁচে গেছে।এতে প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হবে।হিমাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।উপজেলার সন্তোষপাড়া গ্রামের কৃষক নুর মোহাম্মদ জানান,তার ২ হাজার বস্তা আলু পঁচে গেছে।তার মতো আরো অনেক কৃষকের আলু পঁচে যাচ্ছে।তিনি আলু পঁচে যাওয়ায় হিমাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপুরণ দাবী করেছেন।ওই হিমাগারে ৩১ বস্তা লাল আলু বীজ মজুদ করেছেন উপজেলার চরনিমতলা গ্রামের কৃষক হাজী আম্বর আলী সরকার।তিনি জানান, তার আলু বীজের পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।নাহার কোল্ড স্টোরেজের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার ইসরাত হোসেন জানান,লিকুইড গ্যাস লাইনে পানি ঢুকে সেখানে বর্জ্য তৈরী হয়েছে।যার কারনে গ্যাস সঞ্চালন হচ্ছে না।এতে করে কম্প্রেসার চালু করা যাচ্ছে না।তিনি বলেন,আমরা কম্প্রেসারের ১৫ লাখ টাকার পুরনো গ্যাস ছেড়ে দিয়েছি।নতুন করে ফের ১০ লাখ টাকার গ্যাস দিয়েছি।তাতেও কোনো কাজে আসছে না।ধারনা করা হচ্ছে এ সমস্যা সমাধানে অনেকদিন সময় লাগবে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়টি অবহিত করেছেন।আমি তাদেরকে দ্রুত হিমাগারে যে সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য বলেছি।হিমাগারটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।তারপরও আমি তাদেরকে দ্রুত মেরামতের কথা বলে যাচ্ছি।যাতে কৃষকরা কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতিতে না পড়েন।
প্রসঙ্গত:চলতি মৌসুমে সিরাজদিখান উপজেলার ৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।আলু মজুদে এখানে রয়েছে ১০ টি হিমাগার।আর রাজদিয়া গ্রামের নাহার কোল্ড স্টোরেজে ২ লাখ বস্তা আলু মজুদের ধারন ক্ষমতা রয়েছে।