সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, টঙ্গীবাড়ী, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, বাংলাদেশ, মুক্তারপুর, মুন্সিগঞ্জ, লৌহজং
মুন্সীগঞ্জে নদী তীরবর্তী পরিবেশ দূষণ করছে ৬ সিমেন্ট কারখানা
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:৫৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ১৭ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জে নদী তীরবর্তী এলাকা ঘিরে গড়ে উঠেছে সিমেন্ট উৎপাদনকারী একাধিক কারখানা।এ সব কারখানা পরিবেশ দূষণ করছে।ফলে হুমকির মুখে রয়েছে মুন্সীগঞ্জের জনজীবন।সরেজমিনে দেখা যায়,খোলা ক্রেনে করে সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে খালাস হচ্ছে ক্লিংকার।বয়লারের চিমনি থেকে ধোঁয়া আকারে বের হয়ে আসছে ফ্লাইঅ্যাশ,যা বাতাসের সঙ্গে মিশে দূষিত করছে আশপাশের পরিবেশ।
সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর লোডিং-আনলোডিং হয় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে।যদি ইনডোর আনলোডিংয়ের মাধ্যমে করে এবং ডাস্ট কালেক্টর সিস্টেম রেখে নিয়মিত পানি স্প্রে করা যেত তাহলে দূষণ অনেকাংশে কমে যেত।অন্যদিকে,মুন্সীগঞ্জের ড্রেনেজ সিস্টেম পরিবেশ বান্ধব না হওয়ার কারণে সিমেন্ট কারখানার বর্জ্য নদীতে গিয়ে পড়ছে।ফলে নদীর আশপাশের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। প্রত্যেক জেলা শহরগুলোতে যদি STP (SEWARAGE TREATMENT PLANT)বাস্তবায়ন হতো তাহলে শহরের বর্জ্য পরিশোধিত হতো।নদী দূষণ এবং বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থায় অবহেলার জন্য বিভিন্ন সিমেন্ট ফ্যাক্টরিকে অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে।জরিমানার পরও সতর্ক হয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।সিমেন্ট ফ্যাক্টরির পাশেই রয়েছে প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।এখানে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।ফ্যাক্টরিগুলোর পরিবেশ দূষণের ফলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্বাক্ষরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সিমেন্ট কারখানার কালো ধোঁয়ায় মাথা ব্যাথা,শ্বাস কষ্টসহ আমাদের নানা সমস্যা হয়।পূর্ব-পশ্চিম মুক্তারপুর, হাটলক্ষীগঞ্জ,নয়াগাঁও এলাকার মানুষজন খুব কাছে হওয়ায় তারা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।নদীর পাড়গুলোতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ করলেও তা দূষণের তুলনায় অনেক কম।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহ সিমেন্টের এক শ্রমিক জানান,প্রায়ই কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।ভেতরের পরিবেশ এতটাই খারাপ যে প্রশ্বাস নিতেও মাঝে মাঝে কষ্ট হয়।এসব থেকে প্রতিরক্ষার জন্য আমাদের কোনো ব্যবস্থা নেই।অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে পরিবেশ টিভি প্রতিনিধি শাহ সিমেন্ট ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট কারখানায় গেলে সেখানে দায়িত্বশীল কেউ এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি।পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট মিয়া মাহমুদুল হক বলেন,বেশ কিছুদিন আগে আমরা মুন্সীগঞ্জের সকল কারখানা,ফ্যাক্টরি, ইন্ডাস্ট্রির মালিকদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করি।কাঁচামাল আনলোডের ব্যাপারে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দূষণ কিভাবে কম হয় তা নিয়ে আলোচনা করি।আমরা জনবল সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগছি।আশা করি খুব শীঘ্রই এর থেকে আমরা পরিত্রাণ পাব।অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা আমাদের পুরোটা দিয়ে কাজ করছি।মামলা ও জরিমানা করা হলেও থেমে নেই ফ্যাক্টরিগুলো।ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই -বাছাইয়ের অভাবে সু্যোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু চক্র। কারখানাগুলোর নির্গত পানি যা বছরে চারবার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক তা নিয়েও রয়েছে অনীহা। এছাড়া ফ্যাক্টরিগুলোর পরিবহন ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।অসতর্কতার ফলে সিমেন্ট বোঝাই ট্রলারডুবির ঘটনা অজানা নয়। ২০১৫ সালের ১০ জুন মেঘনা নদীতে ২ হাজার ৫০০ বস্তা সিমেন্ট নিয়ে ট্রলারডুবি এবং এমভি মামা ভাগীনা মুক্তারপুরের ক্রাউন্ট সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে দাউদকান্দি যাওয়ার পথে গজারিয়া উপজেলার ইসমানীর চর এলাকার মেঘনা নদীতে ডুবে যায়।
একদিকে যেমন এই অঞ্চলের দূষণের জন্য প্রধান কারণ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি,বিভিন্ন কারখানা,ইন্ড্রাস্টি অন্যদিকে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের একটা বড় অংশ এই জায়গায়।তবে অদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মুন্সীগঞ্জকে বাঁচাতে এখনই সুদূরপ্রসারী পদেক্ষপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ