সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, টঙ্গীবাড়ী, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, মুন্সিগঞ্জ, র্যাব
টংঙ্গীবাড়ীতে বালু দস্যুদের অস্ত্রের মহড়ায় আতংকে এলাকাবাসী

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৬:১৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের টংঙ্গীবাড়ীতে বালুদস্যুরা পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন ২০ লাখ টাকার বালু তুলছে।এ অপকর্ম নির্বিঘ্ন করতে তারা অস্ত্রের মহড়া থেকে শুরু করে হত্যার হুমকি দিয়ে ভয়ের রাজত্ব তৈরি করেছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার দিঘিরপাড় বাজারে গত সোমবার সকালে দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রের মহড়া দেয় পদ্মায় বালু লুটের সঙ্গে জড়িত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট।এ সময় তারা বাজারের দুই ব্যবসায়ী ও এক কর্মচারীকে মারধর করেছে।এ ছাড়া রবিবার সন্ত্রাসী জোবায়ের খান ১০-১২ জন সঙ্গী নিয়ে মজনু মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর কর্মচারীদের মারধর করেছেন।এসব ঘটনার পর বাজারের ব্যবসায়ীসহ পদ্মা তীরের গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, দিঘিরপাড় ও কামারখাড়া ইউনিয়নে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত মিজান খান,মান্নান খান এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদার,তাঁর ভাই জেলা যুবলীগ নেতা অনিক হালদার,লিটু খান, রুবেল খান ও জনি খান গং মিলে তৈরি করেছেন বালু সিন্ডিকেট।জানা গেছে,দিঘিরপাড় ও কামারখাড়া ইউনিয়ন ঘেঁষা পদ্মায় মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে বালু সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করা বালু বিক্রি করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে ২০ লাখ টাকা।পদ্মায় রাতের বেলা বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে কয়েক দফা অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন।এ ছাড়া রাতে নদীতে টহলের জন্য নৌ-পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।কিন্তু নৌ-পুলিশের এসআইসহ কিছু কর্মকর্তা বালু সিন্ডিকেটের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে নীরব থাকেন।এ সুযোগে প্রতি রাতে বালু লুটের মহোৎসব চালিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করে প্রতিদিন ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালুদস্যুরা।এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত শনিবার রাতে স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ ও গ্রামবাসী পদ্মায় বালু উত্তোলনের সময় একটি ড্রেজার জব্দ করে।খবর পেয়ে ড্রেজারটি ছিনিয়ে নেয় অস্ত্রধারী বালুদস্যুরা।এ ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়াতেই সোমবার তারা দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রের মহড়া দেয়।বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় মোবাইল ফোনে কল করে রাজিব মিয়া নামে এক আড়তদারকে হত্যার হুমকি দেন মিজান খান।এ ছাড়া যে ব্যক্তি বালু উত্তোলনে বাধা দিবে,তাঁকে হত্যা মামলার আসামী করা হবে-এমন হুমকিও দেওয়া হয়। মোবাইল ফোনের কথোপকথনে হত্যার হুমকির সেই অডিও রেকর্ড সংবাদকর্মীদের হাতে এসেছে। অডিও রেকর্ডটি ডিবি পুলিশও পেয়েছে।এর পরই সোমবার বিকেলে মিজানকে গ্রেপ্তার করে মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশ।রাতে তাঁকে ডিবি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।আড়তদার রাজিব মিয়া জানান,প্রতিদিন বিপুল অঙ্কের আয় বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় বালু সিন্ডিকেট অস্ত্রের মহড়া দেয়।এ ঘটনার পর থেকে গ্রামবাসী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।পদ্মা তীরবর্তী গ্রামবাসীরা জানান, এই বালু সিন্ডিকেট প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত পদ্মায় ছয়টি ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছে। এ সময় মহিউদ্দিন,অনিক ও মান্নান গ্রুপের লোকজন নদীর পাড়ে অস্ত্র নিয়ে পাহাড়া দেয়।তাই তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।গ্রামবাসী আরও জানান,এখনই বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে,যে কোনো সময় কামারখাড়া ও দিঘিরপাড় ইউপির নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে পদ্মার ভাঙন দেখা দিবে।এতে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে।ব্যবসায়ীরা জানান,গত ১১ সেপ্টেম্বর দিঘিরপাড় বাজারে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বালু সিন্ডিকেট।ওই ঘটনার ২৫ দিন পর সোমবার আবার দিঘিরপাড় বাজারের মাছের আড়তে গিয়ে মিজান,মান্নান ও অনিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।দিঘিরপাড় ইউনিয়ন বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি শামীম মোল্লাহ বলেন,সোমবার সকালে দিঘিরপাড় বাজারে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে বালুদস্যুরা।এ সময় তারা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী ও কর্মচারীকে মারধর করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।বালু লুট ও অস্ত্রের মহড়া প্রসঙ্গে জানতে মহিউদ্দিন হালদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।অন্য অভিযুক্তদের ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।তারা সবাই পলাতক বলে জানা গেছে।মুন্সীগঞ্জ সদরের চরআব্দুল্লাপুর নৌ-ফাঁড়ির এসআই মজিবুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন।তিনি বলেন,একটি পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন,দিঘিরপাড় বাজারে অস্ত্র নিয়ে মহড়ার সময় কারা ছিল,তাদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করতে তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।