জাতীয় শিক্ষক দিবসে ‘গুরু বন্দনা’
- আপডেট সময়- ০৫:৫৩:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯৮ বার পড়া হয়েছে
ছবি : ঋতম্ভরা ব্যানার্জি ও সঙ্গীতশিল্পী ব্রহ্মতোষ চ্যাটার্জি
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
জাতীয় শিক্ষক দিবসকে কেন্দ্র করে সারাদেশ যখন উদ্বেলিত,তখন মনে পড়ে যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসংখ্য শিক্ষা গুরুর কথা,যারা তাদের শিক্ষার ডালি সাজিয়ে দেশ বিদেশে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বের উপহার দিয়েছেন।
আমরা অবিভক্ত ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে দেখেছি বর্ন পরিচয়ের সৃষ্টি কর্তা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে।তার বর্ন পরিচয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি বাঙালি “অ, আ, ক, খ” অক্ষরের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন।
সঙ্গীতের জগতে উল্লেখযোগ্য, বড়ে গোলাম আলী, আমজাদ আলী খান, রবিশঙ্কর, উদয় শঙ্কর, অমলা শংকর, কাজী অনিরুদ্ধ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাম্মদ রফি, মান্না দে,আলী আকবর খান,আরতি মুখোপাধ্যায়, বেগম আখতার, শ্যামল মিত্র সহ অসংখ্য প্রথিতযশা সঙ্গীত শিল্পী সারা বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছেন।
সেদিন আর নেই। তবুও এখনো বাঙালির ঘরে ঘরে অবিরাম চলছে সংগীত চর্চার আসর।
আজ এমনই একজন সঙ্গীত শিল্পী ব্রহ্মতোষ চ্যাটার্জির প্রতি আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ছুটে গিয়েছিলাম তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে। আমার সঙ্গীত শিক্ষার গুরু এই ব্রহ্মতোষ চ্যাটার্জি।সাক্ষাৎকারের কিছুটা তুলে ধরলাম।
আপনি দীর্ঘকাল সংগীত চর্চা করছেন। একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
তিনি বলেন,আমি এখনও সঙ্গীত শিখছি। শেখার কোন শেষ নেই। ১৯৭৯ সালে কলকাতায় তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বাবা,মা ঘর থেকে বেরুতে দিতেন না। বাড়ির বাইরে একটি খেলার মাঠ ছিল। খেলতে যেতাম।সেখানে পরিচয় হয় সংগীত শিল্পী নিতাই সান্যাল, চিন্ময় লাহিড়ী, মায়া সেন, মুকুলেশ চ্যাটার্জি, মানস কুমারের মতো প্রথিতযশা শিল্পীর সঙ্গে। তাদের অনুপ্রেরণায় আমি নিতাই সান্যালের কাছে সঙ্গীত শেখা শুরু করি। তারা আমাকে উৎসাহিত করেন। চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে সংগীত শেখার সুযোগ পাইনি।তবে মায়া সেন খুব উৎসাহ দিয়েছেন। সেই থেকে আমার চলার পথ শুরু।
তখন আমার বয়স ১৭/১৮ বছর। গান গাইতে পেরেছি প্রচুর অনুষ্ঠানে। পারিশ্রমিক হিসেবে পেতাম ২২ টাকা করে। কিছু সিরিয়াল এবং চলচ্চিত্রে গান গেয়েছি।
প্রশ্ন: আপনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সাম্মানিক পুরষ্কার পেয়েছেন দুবছর আগে। আগে এমন স্বীকৃতি পেয়েছেন?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফ থেকে ২ বছর আগে আমাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তুলে দিয়েছেন সেই সম্মান। এর আগেও স্বীকৃতি পেয়েছি বেসরকারি স্তরে।
বাংলাদেশ থেকেও পুরস্কার পেয়েছি। সুরো পুরকায়স্থ এসেছিলেন ঢাকা থেকে। তিনি বিখ্যাত গীতিকার। তিনিই সেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
গান এখনো গেয়ে চলেছি। এ চলার শেষ নেই।
রাজ্যে সঙ্গীত একাডেমি তথা রাজ্য সরকারার অনুষ্ঠানে মাত্র কদিন আগে বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলাম।
প্রশ্ন : আপনি কার গান গাইতে ভালোবাসেন?
নতুন গান আমার মনে কোন দাগ কাটেনা। পুরোনো দিনের গানের সঙ্গে কোন তুলনা হয় না। আমার গানের মধ্যে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রভাব বেশি। তার গান গাইতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এছাড়াও মান্না দে, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সতীনাথ মুখোপাধ্যায় এর গান গাইছি। তবে হেমন্ত বেশি পছন্দ।
বাংলাদেশের সমকালীন কাগজ এর অনুরোধে তিনি হেমন্তের সেই সুপার হিট গান,” আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে” গানটি গেয়ে শোনান।
প্রশ্ন: বর্তমান প্রজন্মকে আপনি কী বার্তা দেবেন?
গানকে ভালবাসা। এটি একটি সাধনা। ভালো করে শিখতে হবে।
প্রশ্ন: সঙ্গীতকে আপনি কী ভাবে নিয়েছেন?
এটি আমার নেশা । মজ্জায় মজ্জায় লেগে রয়েছে। পেশা হিসাবে দেখি না।
প্রশ্ন: এখন তো বয়স হচ্ছে। গলা ঠিক রাখছেন কী করে?
গলা ঠিক রাখতে সকালে গার্গল, আদা ও রসুন চিবিয়ে খাচ্ছি।