লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা দেশের মানুষ: সিপিবি
- আপডেট সময়- ০৬:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪ ৩০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক।।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পার হতে চলল অথচ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কোনো খবর নেই, সিন্ডিকেট বহাল আছে। উৎপাদক ও ক্রেতার স্বার্থে দীর্ঘদিনের দাবি ‘উৎপাদক সমবায় ও ক্রেতা সমবায়’ গড়ে তোলার কোনো উদ্যোগ নেই। বরং লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ নানা দাবিতে শুক্রবার সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দরা এসব কথা বলেন।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, দাবির কথা বলতে গিয়ে শ্রমিকের রক্ত ঝরছে। সার কীটনাশকের দাম বেড়েছে। কৃষি পণ্যের উৎপাদন খরচও বাড়ছে। কৃষক ক্ষেতমজুরের স্বার্থে কোনো আলোচনাই দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিয়ে আলোচনা নেই কোথাও। অথচ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দাবির কাছে সরকার নতজানু হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এসব অপশক্তি দাপট দেখাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে এরা জেঁকে বসছে। পতিত স্বৈরাচারের হাত থেকে সর্বত্র দখলমুক্ত হয়নি। অনেক জায়গায় এক দখলদারের পরিবর্তে আরেক দখলদার জায়গা করে নিচ্ছে। জনজীবনের শান্তি ফিরে আসেনি।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে হাজারও মানুষের রক্ত দেয়া ও হাজার হাজার মানুষের পঙ্গুত্ব বরণ এবং কোটি মানুষের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অর্জিত গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা এসব ঘটনায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রকৃত অপরাধীদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয় নাই। বরং অনেক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা দিয়ে, মূল ঘটনাকে হালকা করে ফেলা হচ্ছে। বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ উদ্যোগের দাবি জানান তারা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, আমরা প্রথম দিন থেকেই বলে এসেছি, এই আন্দোলনে কোনো দল বা গোষ্ঠী জয়লাভ করে নাই। জয় লাভ করেছে দেশের মানুষ। তাই এসব মানুষের স্বার্থেই ভূমিকা নিতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে দল নিরপেক্ষ যোগ্য দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। এমন কড়া বার্তা দিতে হবে যে, কেউ যদি দখলদারিত্ব কায়েম করে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। সরকারের কাছ থেকে এ কাজটি এখনও পর্যন্ত আমরা দেখলাম না। বরং আমরা দেখলাম, দীর্ঘদিনের আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ব্যক্তি এবং সংগঠককে উপেক্ষা করে বিশেষ কতক গোষ্ঠীর স্বার্থেই সরকার তার কাজ পরিচালনা করছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পাচারের টাকা ফেরত আনা, খেলাপী ঋণ আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণ দেখছে না। বিগত দিনের সরকার মুক্ত বাজারের নামে লুটপাটের ধারায় এই অর্থনীতি পরিচালনা করেছে। তারই অনিবার্য পরিণতি ছিল এই দুর্নীতি-লুটপাট, আর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি। নেতৃবৃন্দ এই লুটপাটের ধারার অর্থনীতি পরিবর্তন করে দেশ ও মানুষের স্বার্থে সমাজতন্ত্র অভিমুখীন অর্থনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, জলি তালুকদার, ডা. সাজেদুল হক রুবেল প্রমুখ।
সূত্র:মা/ক