ছেলে জয়ের আশ্বাসেই দেশ ছাড়তে রাজি হন শেখ হাসিনা
- আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে তিনি পুনরায় দেশে ফিরে আসতে বা রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারবেন এমন আশ্বাসে এবং বেঁচে না থাকলে আওয়ামী লীগের আপাতত হাল ধরার আর কেউ থাকবে না এমন শঙ্কায় ছেলের কথায় শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে রাজি হন শেখ হাসিনা।
অনলাইন ডেস্ক।।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) দেশ ছাড়তে রাজি ছিলেন না, দেশ ছাড়ার বিষয়ে তাকে জোর করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের আগের দিনও আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানতেন শেখ হাসিনা আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছেন।বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীরও ধারণা ছিল না পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি। বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য থেকে জানা যায়, ৪ আগস্ট রাতেও শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের যাদের যোগাযোগ হয়েছিল তাদের সবাইকে শেখ হাসিনা আরও কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও গণভবনের সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকেই গণভবনের পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে। তিন বাহিনীর প্রধান এবং পুলিশের আইজির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনাকে দেশের বাস্তব চিত্র বোঝানো হলেও তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন।
এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা বলেও তাকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজি করাতে ব্যার্থ হন।
এ অবস্থায় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ফোনে যোগাযোগ করে পুরো ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলেন।
যদিও জয় নিজেও শুরুতে পদত্যাগে রাজি ছিলেন না। তবে শেখ হাসিনার জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে না এবং বড় রকমের মৃত্যুঝুঁকি আছে এমন পরিস্থিতি জয়ের সামনে তুলে ধরা হলে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে পদত্যাগের বিষয়ে আলাপে রাজি হতে এক ধরনের বাধ্য হন।
ঘটনা সূত্র আরও জানা যায়, জয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার ১০ মিনিটের মতো ফোনালাপচারিতা হয়। ওই ফোনালাপে জয় ‘মা’ শেখ হাসিনাকে বোঝান যে এ মুহূর্তে গণভবনে থাকা তার জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। এবং আপাতত গণভবন থেকে ভারতের উদ্দেশে যাওয়ারও পরামর্শ দেন জয়। আওয়ামী লীগের হাতে টিকে থাকার শেষ দান ছিল ভারতের সহায়তা। শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে তিনি পুনরায় দেশে ফিরে আসতে বা রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারবেন এমন আশ্বাসে এবং বেঁচে না থাকলে আওয়ামী লীগের আপাতত হাল ধরার আর কেউ থাকবে না এমন শঙ্কায় ছেলের কথায় শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে রাজি হন শেখ হাসিনা।
পদত্যাগের আগে শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে একটি কয়েক মিনিটের ভাষণও রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন।
ছেলে জয়ের পরামর্শেই শেখ হাসিনা শেষবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। তবে ততক্ষণে ছাত্র-জনতা গণভবনের কাছাকাছি চলে এসেছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ভাষণ রেকর্ডের সময়ও পাননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।