সর্বশেষ:-
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনা করলেন না’গঞ্জের নবনিযুক্ত ডিসি ভ্যাটের কারণেই নতুন করে দাম বাড়লো এলপি গ্যাসের নতুন করে আরও ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে সাবেক বন-পরিবেশ মন্ত্রী ও ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা  দায়িত্বে অবহেলায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত জুড়ী উপজেলাবাসী কুষ্টিয়ায় আ’লীগ নেতার দখলে থাকা ৫০ কোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার হাকালুকি হাওর পাড়ের চাষিরা সরিষা চাষে এবার বাজিমাত নারায়ণগঞ্জে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে নবনিযুক্ত ডিসির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সিদ্ধিরগঞ্জে কুন প্রস্তুতকারী কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড  মধ্যরাতে সেন্টমার্টিনের কিংশুক ও বিচ ভ্যালিসহ ৩টি ইকো রিসোর্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড বিএনপি নেতাকর্মীদের বলব আপনারা অসহায়দের পাশে দাঁড়ান: সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন  কুষ্টিয়ায় ৬ রাউন্ড গুলিসহ বিদেশি পিস্তল উদ্ধার  ঈশ্বরদীর পাকশীতে রেলওয়ের বিভাগীয় অফিস চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ  মুন্সীগঞ্জে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে অবৈধ মাটিকাটা বন্ধে মানববন্ধন  কলাপাড়ার বিদ্যুৎ প্লান্টে চুরি: বিএনপি নেতাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা বাউফলে টমটম উল্টে চালক নিহত, আহত-২ মানবিক জেলা প্রশাসক খ্যাত জাহিদুল ইসলাম মিঞার নারায়ণগঞ্জে যোগদান অনাড়ম্বর আয়োজনে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবীন বরণ অনুষ্ঠান শেরপুরে দুই’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী ব্যতিক্রমী মাছের মেলা  পাবনায় জেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ: মামলা নথিভুক্ত না হওয়ার সংবাদ সম্মেলন গফরগাঁওয়ে দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন  পিবিআই এসপির সক্রিয়তায় এসআই শফিকুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার-২ ফের ডিসির বদলিতে নাজির হতে মরিয়া দুর্নীতির বরপুত্র কে এই সিকদার? মিরপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়েই ছুরিকাঘাতে খুন হলেন কিশোর আলামিন বাউফলে স্কুলে হাজিরা দিয়েই শেষ, প্রভাবশালী কর্মকর্তার শ্যালিকা পরিচয়ে অনিয়ম দোয়ারাবাজারে দ্রুত গতিতে চলছে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, অভিযুক্ত বাঁধে বালু অপসারণ সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাক চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী যুবক নিহত সিদ্ধিরগঞ্জের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মতি ছেলেসহ গ্রেপ্তার ভালুকায় চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সংখ্যালুগুদের জমি দখলের পায়তারা  অপরাধী যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: মুন্সীগঞ্জে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন কমলগঞ্জে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা বাউফল ধুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এলিফ্যান্ট রোডে ২ ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়েছে দূর্বৃত্তরা তারেক রহমানের নির্দেশে সদর থানা বিএনপির উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ  না’গঞ্জের প্রশাসন তাদের নিজ স্বার্থের জন্য কাজ করে: মাসুদুজ্জামান মাসুদ  জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ফতুল্লা থানার আয়োজনে দোয়া মাহফিল বিএনপি নেতা নুরুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে গাজীপুর মহাসড়ক অবরোধ কুষ্টিয়ায় ড্রাম ট্রাক ও ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১ ভেড়ামারায় ফুলকপির বাম্পার ফলনেও মুখে নেই হাসি অবৈধপথে ৪০ হাজার শলাকা সিগারেটসহ আটক-২ ভালুকায় কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠিত অস্থির চালের বাজার কোনো উদ্যোগেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না   সীতাকুন্ডে প্রেমিকাকে হারিয়ে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা বাবার সাথে ঘুরতে গিয়ে কর্ণফুলীতে ট্রাকের ধাক্কায় কিশোরের মৃত্যু শ্রীমঙ্গলে বর্ণিল আয়োজনে ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’এর উদ্বোধন  মাটি ও মানুষের দল বিএনপি, চিহ্নিত অপরাধীদের অনুপ্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে না: মামুন মাহমুদ  সকল শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলতে হবে:  জোসেফ আমি তো কোনো অপরাধ করিনি, আটক হবো কেন’-চিত্রনায়িকা নিপুন  কক্সবাজার গোল্ডেন হিলে এক নারীসহ দুই কাউন্সিলর, অতঃপর গুলিতে ১ জনের মৃত্যু নেত্রকোনায় সড়কে পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হত্যা নারায়ণগঞ্জের ডিসি মাহমুদুল হককে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক পদে পদায়ন ফের তিন জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ খুলনার সাবেক কাউন্সিলর টিপুকে কক্সবাজার সৈকতে গুলি করে হত্যা উত্তরা পূর্বথানা থেকে পালালেন গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ওসি শাহ আলম রহস্যেঘেরা টোপে সুন্দরী অভিনেত্রী রেখা বলিউড কাঁপিয়ে কোটি মানুষের হৃদস্পন্দন না’গঞ্জে অসহায়-দুঃস্থদের মাঝে জাবালে নূর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের শীতবস্ত্র বিতরণ মৌলভীবাজারে ছোট ভাইয়ের হাতের কব্জি কেটে নিলো বড় ভাই  বাউফলে জমি সংক্রান্ত বিরোধে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া মেঘনা নদীতে অবৈধ ঝোঁপ ফেলে মাছ শিকারের হিড়িক ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভনে প্রতারকচক্রের কোটি টাকা আত্মসাৎ  তিন দিনের মাথায় ফের না’গঞ্জের ডিসি বদলি নতুন দায়িত্বে জাহিদুল ইসলাম আইনি সহায়তা: বাংলাদেশ-ভারতসহ ডেনমার্কের তুলনামূলক বিশ্লেষণ মুন্সিগঞ্জের বেদে সম্প্রদায় বছরের পর বছর নাগরিক সেবা হতে বঞ্চিত উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া  দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর মা-ছেলের মহাপুনর্মিলন ঘটতে যাচ্ছে আজ পূর্ণ উৎপাদনে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট পবিপ্রবির নতুন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইকতিয়ার সাতক্ষীরায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে অর্থদন্ড  কাচ্চি ডাইনের ফুটেজ ধারন করতে গিয়ে স্টাফদের হাতে হামলার শিকার ৩ সাংবাদিক ফরিদপুরে ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত- ৫, গুরুতর আহত-৩ না’গঞ্জে দিগুবাবুর বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের অভিষেক গনধর্ষণের পর মেয়েকে বিক্রির খবর শুনে পিতার মৃত্যু স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও পাঁচ মাস ধরে বেতন তুলছেন প্রধান শিক্ষক রেলে নিয়োগ বানিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতি দায়ে পাকশি শ্রমিক লীগ নেতা আটক বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ও কুফল হাতকড়া পরিয়ে অর্থ নেওয়া সেই এসআই কুদ্দুস প্রত্যাহার ফের ৭.১ মাত্রার ভূ-কম্পনে কেঁপে উঠলো বাংলাদেশ না’গঞ্জে যুবদলকর্মী হত্যা মামলা: ডিবির সাবেক এসআই কনক ৫ দিনের রিমান্ডে সিদ্ধিরগঞ্জে ডিপিডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দুদকের অভিযান কুলাউড়ায় অবৈধভাবে টিলা কেটে শ্রীঘরে ডিলারকে জিম্মি করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন ছিল মাসুদের বাউফলে অপহৃত ব্যবসায়ী শিবু বণিককে উদ্ধার মিরপুরে বিজিবির অভিযানে পরিত্যক্ত ভবন থেকে বিপুল পরিমাণে ইয়াবা জব্দ শ্রীমঙ্গলে ফুটপাত দখলমুক্ত ও যানজট নিরসনে উচ্ছেদ অভিযান  না’গঞ্জের ডিসি মাহমুদুল হকের বদলির আদেশ বাতিল করলো সরকার এবার নীলফামারীর সিনিয়র সহকারী জজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতকড়া পরিয়ে ব্যবসায়ীয় কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ এসআই কুদ্দুসের বিরুদ্ধে আরও ২১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বিএফআইইউ নগরকান্দায় গলা কেটে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা: পুলিশি অভিযানে উদ্ধার  কিংবদন্তি শক্তিমান অভিনেতা খ্যাত প্রবীর মিত্র মারা গেছেন আলফাডাঙ্গা সাব-রেজিস্ট্রারসহ দলিল লেখক কর্তৃক গ্রহীতা হয়রানির অভিযোগ মুন্সীগঞ্জে ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি, ক্ষতির মুখে চাষিরা নারায়ণগঞ্জ জাতীয়তাবাদী জিয়া সৈনিক দলের আনন্দ র‍্যালি ভেড়ামারায় শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত সালামকে আটক করেছে পুলিশ কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি ও বোমা উদ্ধার বাউফলে ব্যবসায়ীকে ‘ফিল্মি স্টাইলে’ অপহরণ মৌলভীবাজারে দরিদ্র শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র লেপ বিতরন চরভদ্রাসনে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হলো জাতীয় সমাজসেবা দিবস প্রশাসন নির্বিকার,পদ্মার চরে নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার

স্বাধীনতার আগে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ১০:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪ ৬৬ বার পড়া হয়েছে
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
আজ ধর্ম নিয়ে হানাহানি। মানুষে মানুষে বিভেদ। কিন্তু কিছুকাল আগেও এমনটা ছিল না। ধর্ম ছিল একটা আচ্ছাদন। এই খোলাসের বাইরে ছিল একটা আত্মীয়তার বন্ধন।
আমরা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জানি। তিনি মুসলিম হয়েও একাধিক শ্যামাসঙ্গীত লিখেছেন। সুরও দিয়েছেন।সেই গান প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
দুর্গাপূজা বাঙালির সবচয়ে বড় উৎসব। মহালয়া তেই পাওয়া যায় দুর্গা পূজার প্রাণের স্পন্দন। এই মহালয়া বলতে সকলেই জানেন, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডী পাঠ। ভোর হতেই সকলে উদগ্রীব হয়ে পড়েন মর্মস্পর্শী চন্ডী পাঠ শোনার জন্য। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া মহালয়ার অনুষ্ঠান অর্থহীন।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্বাধীনতার আগেও লাগাতার ৫ টি বছর রেডিওতে চন্ডী পাঠ করতেন এখন মুসলিম বাচিক শিল্পী। তখন ধর্ম নিয়ে কোন ভেদাভেদ ছিল না।
দেশটা ভাগ হতেই আমরা ভাগ হয়ে গেলাম হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ে। দুর্ভাগ্যজনক।
অথচ দেশ ভাগের আগে মহালয়াতে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী, নাজির আহমেদ । অনেকেই জানেন না।
১৯৭৬ এর ‘দেবী দুর্গতিহারিনী’তে উত্তম কুমার আর চিরাচরিত ভদ্রবাবু ছাড়াও বাঙালি কিন্তু মহালয়ার সকালে অন্য একজনের কণ্ঠেও চণ্ডীপাঠ শুনেছে।
এটা অনেকেরই অজানা থাকতেই পারে। সেই বিখ্যাত বা অখ্যাত ব্যক্তি হলেন ‘নাজির আহমেদ’। শুনলে অনেকেই চমকে উঠবেন।
শুরুতে যেখানে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্ত্রোত্র উচ্চারণ নিয়েই অনেক মানুষের আপত্তি ছিল সেখানে ভারতের স্বাধীনতার আগের শেষ পাঁচ বছর একটানা আকাশবাণীর সদর থেকে গোটা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল একজন শুধু অব্রাহ্মণ না, একজন অহিন্দুর কণ্ঠ। দেশ ভাগ না হলে হয় তো আজও আমরা শুনতে পেতাম সেই কণ্ঠ।
আসলে ঘটনাটা ঘটে খুবই আশ্চর্যভাবে, ১৯৪২ এর মহালয়ার ভোরে স্টুডিওতে আসতে দেরি করছেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র, অথচ চন্ডী পথের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে.. অতঃকিম্?
তরুণ বাচিক শিল্পী নাজির এসে প্রস্তাব দিল, “আমি স্কুলে থাকতে সংস্কৃতে পাকা ছিলাম, ম্যাট্রিকে লেটার মার্কসও আছে, অনুমতি দিলে চেষ্টা করে দেখতে পারি।”
কোনো রাস্তা না পেয়ে পঙ্কজ মল্লিক বললেন, “বেশ তবে চন্ডী পাঠ করো ,যদি পারো।”
কিছু পরে স্টুডিওতে এসে হাজির বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, স্ত্রোত্র উচ্চারণ শুনে তিনিও মুগ্ধ হয়ে বললেন, “নাজিরই করুক নাহ্ , বেশ করছে তো।”
অদ্ভুতভাবে পরের বছরও একই ঘটনা, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র বলেন, “আহাঃ পঙ্কজদা, নাজির উঠতি শিল্পী, আমরা বুড়োরা আর কতদিন করবো? এরপর থেকে ওইই করুক না। গলা তো ছেলের খাসা।”
এরপর থেকে ১৯৪৬ এর শরৎ পর্যন্ত এই দায়ভার সামলে গেছেন এই মুসলমান বাচিক শিল্পী নাজির আহমদ। মাঝে একটা বেশ বড়ো বদল ঘটে গিয়েছিল অবশ্য, কিন্তু তার খোঁজও কেউ রাখেন না। ১৯৪৪-৪৫ এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে মনোমালিন্যের জন্য দ্বায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান পঙ্কজ মল্লিক। তার জায়গায় আসেন উঠতি শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। প্রথম বছর একই সুরে কোনোকিছু না পাল্টে একই ভাবে অনুষ্ঠান হলেও দ্বিতীয় বছরে অন্যরকম কিছু করতে গিয়ে জনগণের মধ্যে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৪৬ এ পঙ্কজ বাবু ফিরে এলে আবার পুরোনো মেজাজে ফিরে আসে মহিষাসুরমর্দিনী।
কিন্তু ভাগ্যের বিপর্যয়ে ১৯৪৭ এ নেমে এলো সেই অভিশাপ। হলো দেশভাগ। নাজির আহমেদ ফিরে গেলেন তার নিজের মাটিতে। ঢাকা রেডিওতে যোগ দেন তিনি এবং আবার পুরোনো জায়গায় ফিরতেই হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে।
তবে শুধু বাচিক শিল্পীর কথা কেন, যন্ত্র শিল্পীরাই বা কেন বাদ যাবেন?
সারেঙ্গী নিয়ে বসতেন মুন্সী। চেলো নিয়ে থাকতেন তারই ভাই আলী আর হারমোনিয়ামে মোহাম্মদ। এরা তিনজন তো হিন্দু নয়ই উপরন্তু বাঙালিও নন। মাতৃ ভাষা উর্দু। আর সেই জন্যই ওদের করে ফেলা একটা ভুলের জন্য আমাদের মহালয়ার সকাল অন্য মাত্রা পায়। কি সেই ভুল?
রিহার্সাল শুরুর আগে সবাইকে বোঝানো হয় বাংলা পাঠ চলাকালীন তারা আবহ বাজাবেন কিন্তু সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারণ করার সময় তা থেমে যাবে। কিন্তু ওরা বোঝেননি ভাষা সমস্যায়। বীরেন বাবু ভাষা পাল্টে বাংলা থেকে সংস্কৃততে চলে গেলেও ওঁরা বুঝতে না পেরে বাজাতেই থাকেন, সবাই দেখতেও থাকেন যে কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়াই তিনজন বাজিয়ে চলেছেন আর অদ্ভুত ভাবে তা মিলেও যাচ্ছে ভাষ্যের সাথে।
শুধু ওদের এই ভুলটার জন্যই পঙ্কজকুমার মল্লিক এর মতো আত্মপ্রত্যয়ী মানুষও নিজের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারনের মাঝেও যন্ত্রানুসঙ্গ যোগ করেন। এ প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেছিলেন, “সেদিন মুন্সীদের তথাকথিত সেই ভুল কান্ডটা আমার চোখ আরও বেশি খুলে দিল । আরও বেশি করে স্পষ্ট হল যে সঙ্গীতের কাছে, সুরের কাছে ভাষাটা কোনো প্রতিবন্ধকতাই নয়।”
এসবের বাইরেও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি গান ‘শান্তি দিলে ভরি’র সুরকার কিন্তু হিন্দু নন, মোল্লার ছেলে উস্তাদ সাগীরউদ্দিন খাঁ।
পঙ্কজ মল্লিক সেদিন যে কথা বলেছিলেন সেটি কতো বড় সত্যি সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
“উৎসবের আবার বামুন-কায়েত কি? যে ভাষায় নজরুল ইসলাম কীর্তন থেকে শ্যামাসঙ্গীত সব লেখেন সেই ভাষায় কোনো জাতপাত টানবেন না।'”
নাজির আহমেদ কে অনেকেই ভুলে গেছেন, কিন্তু যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ঢাকা রেডিওর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মহালয়ার কথা সকলকে বলতেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা সেটা ভালো চোখে দেখত না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

স্বাধীনতার আগে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী

আপডেট সময়- ১০:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
আজ ধর্ম নিয়ে হানাহানি। মানুষে মানুষে বিভেদ। কিন্তু কিছুকাল আগেও এমনটা ছিল না। ধর্ম ছিল একটা আচ্ছাদন। এই খোলাসের বাইরে ছিল একটা আত্মীয়তার বন্ধন।
আমরা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জানি। তিনি মুসলিম হয়েও একাধিক শ্যামাসঙ্গীত লিখেছেন। সুরও দিয়েছেন।সেই গান প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
দুর্গাপূজা বাঙালির সবচয়ে বড় উৎসব। মহালয়া তেই পাওয়া যায় দুর্গা পূজার প্রাণের স্পন্দন। এই মহালয়া বলতে সকলেই জানেন, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডী পাঠ। ভোর হতেই সকলে উদগ্রীব হয়ে পড়েন মর্মস্পর্শী চন্ডী পাঠ শোনার জন্য। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া মহালয়ার অনুষ্ঠান অর্থহীন।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্বাধীনতার আগেও লাগাতার ৫ টি বছর রেডিওতে চন্ডী পাঠ করতেন এখন মুসলিম বাচিক শিল্পী। তখন ধর্ম নিয়ে কোন ভেদাভেদ ছিল না।
দেশটা ভাগ হতেই আমরা ভাগ হয়ে গেলাম হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ে। দুর্ভাগ্যজনক।
অথচ দেশ ভাগের আগে মহালয়াতে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী, নাজির আহমেদ । অনেকেই জানেন না।
১৯৭৬ এর ‘দেবী দুর্গতিহারিনী’তে উত্তম কুমার আর চিরাচরিত ভদ্রবাবু ছাড়াও বাঙালি কিন্তু মহালয়ার সকালে অন্য একজনের কণ্ঠেও চণ্ডীপাঠ শুনেছে।
এটা অনেকেরই অজানা থাকতেই পারে। সেই বিখ্যাত বা অখ্যাত ব্যক্তি হলেন ‘নাজির আহমেদ’। শুনলে অনেকেই চমকে উঠবেন।
শুরুতে যেখানে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্ত্রোত্র উচ্চারণ নিয়েই অনেক মানুষের আপত্তি ছিল সেখানে ভারতের স্বাধীনতার আগের শেষ পাঁচ বছর একটানা আকাশবাণীর সদর থেকে গোটা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল একজন শুধু অব্রাহ্মণ না, একজন অহিন্দুর কণ্ঠ। দেশ ভাগ না হলে হয় তো আজও আমরা শুনতে পেতাম সেই কণ্ঠ।
আসলে ঘটনাটা ঘটে খুবই আশ্চর্যভাবে, ১৯৪২ এর মহালয়ার ভোরে স্টুডিওতে আসতে দেরি করছেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র, অথচ চন্ডী পথের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে.. অতঃকিম্?
তরুণ বাচিক শিল্পী নাজির এসে প্রস্তাব দিল, “আমি স্কুলে থাকতে সংস্কৃতে পাকা ছিলাম, ম্যাট্রিকে লেটার মার্কসও আছে, অনুমতি দিলে চেষ্টা করে দেখতে পারি।”
কোনো রাস্তা না পেয়ে পঙ্কজ মল্লিক বললেন, “বেশ তবে চন্ডী পাঠ করো ,যদি পারো।”
কিছু পরে স্টুডিওতে এসে হাজির বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, স্ত্রোত্র উচ্চারণ শুনে তিনিও মুগ্ধ হয়ে বললেন, “নাজিরই করুক নাহ্ , বেশ করছে তো।”
অদ্ভুতভাবে পরের বছরও একই ঘটনা, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র বলেন, “আহাঃ পঙ্কজদা, নাজির উঠতি শিল্পী, আমরা বুড়োরা আর কতদিন করবো? এরপর থেকে ওইই করুক না। গলা তো ছেলের খাসা।”
এরপর থেকে ১৯৪৬ এর শরৎ পর্যন্ত এই দায়ভার সামলে গেছেন এই মুসলমান বাচিক শিল্পী নাজির আহমদ। মাঝে একটা বেশ বড়ো বদল ঘটে গিয়েছিল অবশ্য, কিন্তু তার খোঁজও কেউ রাখেন না। ১৯৪৪-৪৫ এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে মনোমালিন্যের জন্য দ্বায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান পঙ্কজ মল্লিক। তার জায়গায় আসেন উঠতি শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। প্রথম বছর একই সুরে কোনোকিছু না পাল্টে একই ভাবে অনুষ্ঠান হলেও দ্বিতীয় বছরে অন্যরকম কিছু করতে গিয়ে জনগণের মধ্যে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৪৬ এ পঙ্কজ বাবু ফিরে এলে আবার পুরোনো মেজাজে ফিরে আসে মহিষাসুরমর্দিনী।
কিন্তু ভাগ্যের বিপর্যয়ে ১৯৪৭ এ নেমে এলো সেই অভিশাপ। হলো দেশভাগ। নাজির আহমেদ ফিরে গেলেন তার নিজের মাটিতে। ঢাকা রেডিওতে যোগ দেন তিনি এবং আবার পুরোনো জায়গায় ফিরতেই হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে।
তবে শুধু বাচিক শিল্পীর কথা কেন, যন্ত্র শিল্পীরাই বা কেন বাদ যাবেন?
সারেঙ্গী নিয়ে বসতেন মুন্সী। চেলো নিয়ে থাকতেন তারই ভাই আলী আর হারমোনিয়ামে মোহাম্মদ। এরা তিনজন তো হিন্দু নয়ই উপরন্তু বাঙালিও নন। মাতৃ ভাষা উর্দু। আর সেই জন্যই ওদের করে ফেলা একটা ভুলের জন্য আমাদের মহালয়ার সকাল অন্য মাত্রা পায়। কি সেই ভুল?
রিহার্সাল শুরুর আগে সবাইকে বোঝানো হয় বাংলা পাঠ চলাকালীন তারা আবহ বাজাবেন কিন্তু সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারণ করার সময় তা থেমে যাবে। কিন্তু ওরা বোঝেননি ভাষা সমস্যায়। বীরেন বাবু ভাষা পাল্টে বাংলা থেকে সংস্কৃততে চলে গেলেও ওঁরা বুঝতে না পেরে বাজাতেই থাকেন, সবাই দেখতেও থাকেন যে কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়াই তিনজন বাজিয়ে চলেছেন আর অদ্ভুত ভাবে তা মিলেও যাচ্ছে ভাষ্যের সাথে।
শুধু ওদের এই ভুলটার জন্যই পঙ্কজকুমার মল্লিক এর মতো আত্মপ্রত্যয়ী মানুষও নিজের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারনের মাঝেও যন্ত্রানুসঙ্গ যোগ করেন। এ প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেছিলেন, “সেদিন মুন্সীদের তথাকথিত সেই ভুল কান্ডটা আমার চোখ আরও বেশি খুলে দিল । আরও বেশি করে স্পষ্ট হল যে সঙ্গীতের কাছে, সুরের কাছে ভাষাটা কোনো প্রতিবন্ধকতাই নয়।”
এসবের বাইরেও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি গান ‘শান্তি দিলে ভরি’র সুরকার কিন্তু হিন্দু নন, মোল্লার ছেলে উস্তাদ সাগীরউদ্দিন খাঁ।
পঙ্কজ মল্লিক সেদিন যে কথা বলেছিলেন সেটি কতো বড় সত্যি সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
“উৎসবের আবার বামুন-কায়েত কি? যে ভাষায় নজরুল ইসলাম কীর্তন থেকে শ্যামাসঙ্গীত সব লেখেন সেই ভাষায় কোনো জাতপাত টানবেন না।'”
নাজির আহমেদ কে অনেকেই ভুলে গেছেন, কিন্তু যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ঢাকা রেডিওর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মহালয়ার কথা সকলকে বলতেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা সেটা ভালো চোখে দেখত না।