ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
বকশীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তাকে হত্যা হুমকি সিদ্ধিরগঞ্জে মিলন হত্যার ১মাস ২০দিন পর পটুয়াখালী থেকে লাশ উত্তোলন  মৌলভীবাজারে বন্যার পানি নামলেও দৃশ্যমান ক্ষয়ক্ষতি চিহ্ন   ভৈরব মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন ২০টিরও বেশি বসতবাড়ি-ঘর ভৈরবে ট্রেনের ধাক্কায় সেতু থেকে পড়ে ২জনের মৃত্যু  সাইবারসহ সব কালো আইন বাতিল বা প্রয়োজনে সংস্কার করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমাবেশ মঞ্চ ভাঙচুর বিশেষ ৬ খাত সংস্কারে আলাদা ছয় কমিশন গঠন, নেতৃত্বে বিশিষ্টজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত বিষয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা রূপগঞ্জ এসিল্যান্ড অফিসে জনদূর্ভোগ চরমে নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাথে বিএনপির সংঘর্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত ফতুল্লায় মাদকবিরোধী মিছিলে সন্ত্রাসী হামলাসহ গুলিবর্ষণে এলাকা রনক্ষেত্র বন্ধ হয়ে গেলো বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পূর্বাচলে শেখ হাসিনা ও রেহানা পরিবারের নামে বরাদ্দ প্লট বাতিল চেয়ে রিট ড.ইউনূসকে প্রধান করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গঠন পুলিশের সব ইউনিটকে যে বার্তা দিলেন আইজিপি ময়নুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতা সন্ত্রাসী শামীম ঢালির বিচারের দাবিতে মানববন্ধন জুড়ীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪ কি:মি: সড়ক সংস্কার করলো যুবকরা সীমান্তে উত্তেজনা: ঢাকায় কড়া প্রতিবাদের ৪ দিনের মাথায় ফের হত্যা বরগুনায় মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় কথিত বিএনপি নেতা শাওনের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের পরিচালক ও উপপরিচালক পদে বড় রদবদল বৈষম্যমূলক মজুরী ও শ্রম নীতি শ্রমিক অসন্তোষের অন্যতম কারণ- শ্রমিক নেতা গোলক মুন্সীগঞ্জের আড়িয়াল বিলে ড্রেজার আসতে পারবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা ভারতীয় সীমান্তে স্কুল ছাত্রী স্বর্ণা হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন  সোনারগাঁয়ে নতুন ইউএনও’র দায়িত্বে ফারজানা রহমান ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক(ডিসি) নিয়োগ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ পাবনা কারাগারে থাকা ঈশ্বরদীর ১২ নেতাকর্মীরা মুক্ত মৌলভীবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে লক্ষাধিক ঘনফুট বালু জব্দ  মাসদাইর আ’লীগ ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি আতাউর প্রধান ছাড়া বিএনপির চলেই না দেশের বর্তমান সংবিধান পরিবর্তন আনা উচিত: মুন্সীগঞ্জে সারজিস ইবি’র শেখ হাসিনা হলে থাকা বহিরাগত ছাত্রীদের নেমে যাওয়ার নির্দেশ বিএনপির আশ্রয়ে বহাল তবিয়তে এনায়েতনগরের জনবিচ্ছিন্ন মেম্বার এমপির সহচর শাহজাহান দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু-৩, হাসপাতালে-৪০৩ দেশের বিভিন্ন সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি: সতর্ক অবস্থানে বিএসএফ সিরাজদিখানে অবৈধ ড্রেজিংয়ের রমরমা বাণিজ্য: দেখার কেউ নেই বিড়ম্বনা-দুশ্চিন্তা বিত্তবানদেরই বেশি,সর্বহারাদের তা নেই.! ছেলে জয়ের আশ্বাসেই দেশ ছাড়তে রাজি হন শেখ হাসিনা অর্থপাচার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বিএনপির ৮ শীর্ষ নেতা মৌলভীবাজারে নবাগত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেনের যোগদান মৌলভীবাজারে বকেয়া মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের মানববন্ধন  না’গঞ্জের পলাতক সাবেক এমপি শামীম ওসমানের দেখা মিললো দিল্লিতে  না’গঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপুর উপর হামলা  রূপগঞ্জে ফের গাজী টায়ার কারখানায় লুটপাট চালিয়ে আগুন দিলো দুর্বৃত্তরা মহাভারতের চিত্রনাট্যের জাদুকরী রূপকার ছিলেন উর্দু কবি রাহী মাসুম রেজা  কুষ্টিয়া সাংস্কৃতিক কর্মীর সমবেত কন্ঠে দশ মিনিটে ৩বার জাতীয় সংগীত সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করায় হামলা মারধরে আহত-১০ জাতীয় শিক্ষক দিবসে ‘গুরু বন্দনা’ সাবেক ভূমিমন্ত্রী পুত্র তমাল অস্ত্র-মাদক সহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কক্সবাজারে যৌথবাহিনীর অভিযানে বিপুল অস্ত্র-গোলাবারুদ সহ গ্রেপ্তার-৮ নবীজীকে নিয়ে কটূক্তি করা কিশোর সেনাবাহিনীর হেফাজতে: আইএসপিআর পূর্বানুমতি ছাড়া পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে যেতে পারবে না..! বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রিসিভার নিয়োগে হাইকোর্টের রুল স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহীন’র বিশাল সংবর্ধনা ইসলামী যুব আন্দোলন টেকনাফ দক্ষিণ শাখা’র পৌর কমিটি গঠন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত সালমান এফ রহমান মুক্ত হলো আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি(স.) আ’লীগের মতো আমরাও যেন ঘৃণিত না হই: তারেক রহমান রূপগঞ্জে অসহায় এক পরিবারের জমি জবর দখলের চেষ্টা কুষ্টিয়ায় দুশ্চিন্তায় পাট চাষীরা, মূল্য বাড়ানোর দাবি গুলিতে নিহত বাংলাদেশী কিশোরীর মরদেহ ফেরত দিল ভারতীয় বিএসএফ কুষ্টিয়ার মেহেরপুর ও প্রাগপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ কুষ্টিয়ায় জেল পলাতক ২৫ মামলার আসামী সামিরুল গ্রেপ্তার শিক্ষকদের হেনস্থা ও জোরপূর্বক অপসারণ বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ফের শামীম ওসমানসহ ৪৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা: বাদ দেওয়া হয়নি আইভিকেও দেড় দশক ধরে হীরার বদলে কাচ বিক্রি করতেন প্রতারক আগরওয়ালা আন্দোলনে নিহত ৫৪ পুলিশের মৃত্যু: তদন্ত করে মামলা হবে: আইজিপি শেষ রক্ষা হলো না: অবশেষে গ্রেপ্তার প্রতারক দিলীপ আগরওয়ালা পুলিশের সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর যৌথ বাহিনীর সাড়াশি অভিযান শুরু পুলিশের সাবেক আইজিপি আল মামুন ৮ দিনের রিমান্ডে এখন আমার দেশ ছাড়ার প্রশ্নই আসে না: সাবেক প্রধান বিচারপতি খাঁনপুরের চা বিক্রেতা বুইট্টা শাহীন হাজার কোটি টাকার মালিক শ্রীমঙ্গল কৃষকলীগ নেতা হেলালের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ কুষ্টিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৭২০ বোতল ফেনসিডিল সহ গ্রেপ্তার-১ কমলগঞ্জে সাড়ে ৬ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত  ঢামেকে চিকিৎসকদের ওপর হামলা: গাইবান্ধায় গ্রেপ্তার সঞ্জয় পাল বড়লেখায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু  মৌলভীবাজারসহ সিলেটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তারেক জিয়ার মতবিনিময় নতুন সরকার ও বিএনপিকে ম্যানেজ করতে মরিয়া ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার নসিব পরিবহন দখলের অভিযোগে শামিম ওসমান সহ ৩৫ জনে বিরুদ্ধে মামলা গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হলেন রেজাউল করিম  ৪ সেপ্টেম্বর থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান আ’লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ সাবেক প্রভাবশালী সাংসদ হাজী সেলিম আটক ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস করেছেন ড. ইউনুস যৌথবাহিনীর অভিযানের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগাম নির্দেশনা সকল সরকারি কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নির্দেশ টেকনাফের মূর্তমান আতঙ্ক গড ফাদার, কে এই পিচ্চি মিজান!  শ্রীমঙ্গলে কুখ্যাত দেহ ব্যবসায়ী আসমা আটক  আপন লোকেরাই মাস্টারমাইন্ড ও গডমাদার বানিয়েছে কুষ্টিয়ায় ডাঃ শফিকুর নির্বাচনে কারা সরকার গঠন করবে, জনগণই তা ঠিক করবে: তারেক রহমান নির্বাচন আয়োজনে অযৌক্তিক সময় নষ্ট করবে না অন্তর্বর্তী সরকার: ড. ইউনুস ২২৯ মামলায় রিজভী-খসরুসহ ৩ হাজার জনকে অব্যাহতি মুন্সীগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কমিটি ঘোষণা  ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সজনে পাতা নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ অধ্যক্ষের স্ট্রোকে মৃত্যু এখনো স্বাভাবিক হয়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,অনিশ্চয়তায় অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা  স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা, কোনো দল নয়: জামায়াত আমীর

স্বাধীনতার আগে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ১০:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
আজ ধর্ম নিয়ে হানাহানি। মানুষে মানুষে বিভেদ। কিন্তু কিছুকাল আগেও এমনটা ছিল না। ধর্ম ছিল একটা আচ্ছাদন। এই খোলাসের বাইরে ছিল একটা আত্মীয়তার বন্ধন।
আমরা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জানি। তিনি মুসলিম হয়েও একাধিক শ্যামাসঙ্গীত লিখেছেন। সুরও দিয়েছেন।সেই গান প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
দুর্গাপূজা বাঙালির সবচয়ে বড় উৎসব। মহালয়া তেই পাওয়া যায় দুর্গা পূজার প্রাণের স্পন্দন। এই মহালয়া বলতে সকলেই জানেন, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডী পাঠ। ভোর হতেই সকলে উদগ্রীব হয়ে পড়েন মর্মস্পর্শী চন্ডী পাঠ শোনার জন্য। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া মহালয়ার অনুষ্ঠান অর্থহীন।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্বাধীনতার আগেও লাগাতার ৫ টি বছর রেডিওতে চন্ডী পাঠ করতেন এখন মুসলিম বাচিক শিল্পী। তখন ধর্ম নিয়ে কোন ভেদাভেদ ছিল না।
দেশটা ভাগ হতেই আমরা ভাগ হয়ে গেলাম হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ে। দুর্ভাগ্যজনক।
অথচ দেশ ভাগের আগে মহালয়াতে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী, নাজির আহমেদ । অনেকেই জানেন না।
১৯৭৬ এর ‘দেবী দুর্গতিহারিনী’তে উত্তম কুমার আর চিরাচরিত ভদ্রবাবু ছাড়াও বাঙালি কিন্তু মহালয়ার সকালে অন্য একজনের কণ্ঠেও চণ্ডীপাঠ শুনেছে।
এটা অনেকেরই অজানা থাকতেই পারে। সেই বিখ্যাত বা অখ্যাত ব্যক্তি হলেন ‘নাজির আহমেদ’। শুনলে অনেকেই চমকে উঠবেন।
শুরুতে যেখানে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্ত্রোত্র উচ্চারণ নিয়েই অনেক মানুষের আপত্তি ছিল সেখানে ভারতের স্বাধীনতার আগের শেষ পাঁচ বছর একটানা আকাশবাণীর সদর থেকে গোটা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল একজন শুধু অব্রাহ্মণ না, একজন অহিন্দুর কণ্ঠ। দেশ ভাগ না হলে হয় তো আজও আমরা শুনতে পেতাম সেই কণ্ঠ।
আসলে ঘটনাটা ঘটে খুবই আশ্চর্যভাবে, ১৯৪২ এর মহালয়ার ভোরে স্টুডিওতে আসতে দেরি করছেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র, অথচ চন্ডী পথের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে.. অতঃকিম্?
তরুণ বাচিক শিল্পী নাজির এসে প্রস্তাব দিল, “আমি স্কুলে থাকতে সংস্কৃতে পাকা ছিলাম, ম্যাট্রিকে লেটার মার্কসও আছে, অনুমতি দিলে চেষ্টা করে দেখতে পারি।”
কোনো রাস্তা না পেয়ে পঙ্কজ মল্লিক বললেন, “বেশ তবে চন্ডী পাঠ করো ,যদি পারো।”
কিছু পরে স্টুডিওতে এসে হাজির বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, স্ত্রোত্র উচ্চারণ শুনে তিনিও মুগ্ধ হয়ে বললেন, “নাজিরই করুক নাহ্ , বেশ করছে তো।”
অদ্ভুতভাবে পরের বছরও একই ঘটনা, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র বলেন, “আহাঃ পঙ্কজদা, নাজির উঠতি শিল্পী, আমরা বুড়োরা আর কতদিন করবো? এরপর থেকে ওইই করুক না। গলা তো ছেলের খাসা।”
এরপর থেকে ১৯৪৬ এর শরৎ পর্যন্ত এই দায়ভার সামলে গেছেন এই মুসলমান বাচিক শিল্পী নাজির আহমদ। মাঝে একটা বেশ বড়ো বদল ঘটে গিয়েছিল অবশ্য, কিন্তু তার খোঁজও কেউ রাখেন না। ১৯৪৪-৪৫ এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে মনোমালিন্যের জন্য দ্বায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান পঙ্কজ মল্লিক। তার জায়গায় আসেন উঠতি শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। প্রথম বছর একই সুরে কোনোকিছু না পাল্টে একই ভাবে অনুষ্ঠান হলেও দ্বিতীয় বছরে অন্যরকম কিছু করতে গিয়ে জনগণের মধ্যে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৪৬ এ পঙ্কজ বাবু ফিরে এলে আবার পুরোনো মেজাজে ফিরে আসে মহিষাসুরমর্দিনী।
কিন্তু ভাগ্যের বিপর্যয়ে ১৯৪৭ এ নেমে এলো সেই অভিশাপ। হলো দেশভাগ। নাজির আহমেদ ফিরে গেলেন তার নিজের মাটিতে। ঢাকা রেডিওতে যোগ দেন তিনি এবং আবার পুরোনো জায়গায় ফিরতেই হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে।
তবে শুধু বাচিক শিল্পীর কথা কেন, যন্ত্র শিল্পীরাই বা কেন বাদ যাবেন?
সারেঙ্গী নিয়ে বসতেন মুন্সী। চেলো নিয়ে থাকতেন তারই ভাই আলী আর হারমোনিয়ামে মোহাম্মদ। এরা তিনজন তো হিন্দু নয়ই উপরন্তু বাঙালিও নন। মাতৃ ভাষা উর্দু। আর সেই জন্যই ওদের করে ফেলা একটা ভুলের জন্য আমাদের মহালয়ার সকাল অন্য মাত্রা পায়। কি সেই ভুল?
রিহার্সাল শুরুর আগে সবাইকে বোঝানো হয় বাংলা পাঠ চলাকালীন তারা আবহ বাজাবেন কিন্তু সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারণ করার সময় তা থেমে যাবে। কিন্তু ওরা বোঝেননি ভাষা সমস্যায়। বীরেন বাবু ভাষা পাল্টে বাংলা থেকে সংস্কৃততে চলে গেলেও ওঁরা বুঝতে না পেরে বাজাতেই থাকেন, সবাই দেখতেও থাকেন যে কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়াই তিনজন বাজিয়ে চলেছেন আর অদ্ভুত ভাবে তা মিলেও যাচ্ছে ভাষ্যের সাথে।
শুধু ওদের এই ভুলটার জন্যই পঙ্কজকুমার মল্লিক এর মতো আত্মপ্রত্যয়ী মানুষও নিজের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারনের মাঝেও যন্ত্রানুসঙ্গ যোগ করেন। এ প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেছিলেন, “সেদিন মুন্সীদের তথাকথিত সেই ভুল কান্ডটা আমার চোখ আরও বেশি খুলে দিল । আরও বেশি করে স্পষ্ট হল যে সঙ্গীতের কাছে, সুরের কাছে ভাষাটা কোনো প্রতিবন্ধকতাই নয়।”
এসবের বাইরেও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি গান ‘শান্তি দিলে ভরি’র সুরকার কিন্তু হিন্দু নন, মোল্লার ছেলে উস্তাদ সাগীরউদ্দিন খাঁ।
পঙ্কজ মল্লিক সেদিন যে কথা বলেছিলেন সেটি কতো বড় সত্যি সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
“উৎসবের আবার বামুন-কায়েত কি? যে ভাষায় নজরুল ইসলাম কীর্তন থেকে শ্যামাসঙ্গীত সব লেখেন সেই ভাষায় কোনো জাতপাত টানবেন না।'”
নাজির আহমেদ কে অনেকেই ভুলে গেছেন, কিন্তু যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ঢাকা রেডিওর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মহালয়ার কথা সকলকে বলতেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা সেটা ভালো চোখে দেখত না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

স্বাধীনতার আগে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী

আপডেট সময়- ১০:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
আজ ধর্ম নিয়ে হানাহানি। মানুষে মানুষে বিভেদ। কিন্তু কিছুকাল আগেও এমনটা ছিল না। ধর্ম ছিল একটা আচ্ছাদন। এই খোলাসের বাইরে ছিল একটা আত্মীয়তার বন্ধন।
আমরা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জানি। তিনি মুসলিম হয়েও একাধিক শ্যামাসঙ্গীত লিখেছেন। সুরও দিয়েছেন।সেই গান প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
দুর্গাপূজা বাঙালির সবচয়ে বড় উৎসব। মহালয়া তেই পাওয়া যায় দুর্গা পূজার প্রাণের স্পন্দন। এই মহালয়া বলতে সকলেই জানেন, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডী পাঠ। ভোর হতেই সকলে উদগ্রীব হয়ে পড়েন মর্মস্পর্শী চন্ডী পাঠ শোনার জন্য। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া মহালয়ার অনুষ্ঠান অর্থহীন।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্বাধীনতার আগেও লাগাতার ৫ টি বছর রেডিওতে চন্ডী পাঠ করতেন এখন মুসলিম বাচিক শিল্পী। তখন ধর্ম নিয়ে কোন ভেদাভেদ ছিল না।
দেশটা ভাগ হতেই আমরা ভাগ হয়ে গেলাম হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ে। দুর্ভাগ্যজনক।
অথচ দেশ ভাগের আগে মহালয়াতে চন্ডী পাঠ করতেন মুসলিম বাচিক শিল্পী, নাজির আহমেদ । অনেকেই জানেন না।
১৯৭৬ এর ‘দেবী দুর্গতিহারিনী’তে উত্তম কুমার আর চিরাচরিত ভদ্রবাবু ছাড়াও বাঙালি কিন্তু মহালয়ার সকালে অন্য একজনের কণ্ঠেও চণ্ডীপাঠ শুনেছে।
এটা অনেকেরই অজানা থাকতেই পারে। সেই বিখ্যাত বা অখ্যাত ব্যক্তি হলেন ‘নাজির আহমেদ’। শুনলে অনেকেই চমকে উঠবেন।
শুরুতে যেখানে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্ত্রোত্র উচ্চারণ নিয়েই অনেক মানুষের আপত্তি ছিল সেখানে ভারতের স্বাধীনতার আগের শেষ পাঁচ বছর একটানা আকাশবাণীর সদর থেকে গোটা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল একজন শুধু অব্রাহ্মণ না, একজন অহিন্দুর কণ্ঠ। দেশ ভাগ না হলে হয় তো আজও আমরা শুনতে পেতাম সেই কণ্ঠ।
আসলে ঘটনাটা ঘটে খুবই আশ্চর্যভাবে, ১৯৪২ এর মহালয়ার ভোরে স্টুডিওতে আসতে দেরি করছেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র, অথচ চন্ডী পথের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে.. অতঃকিম্?
তরুণ বাচিক শিল্পী নাজির এসে প্রস্তাব দিল, “আমি স্কুলে থাকতে সংস্কৃতে পাকা ছিলাম, ম্যাট্রিকে লেটার মার্কসও আছে, অনুমতি দিলে চেষ্টা করে দেখতে পারি।”
কোনো রাস্তা না পেয়ে পঙ্কজ মল্লিক বললেন, “বেশ তবে চন্ডী পাঠ করো ,যদি পারো।”
কিছু পরে স্টুডিওতে এসে হাজির বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, স্ত্রোত্র উচ্চারণ শুনে তিনিও মুগ্ধ হয়ে বললেন, “নাজিরই করুক নাহ্ , বেশ করছে তো।”
অদ্ভুতভাবে পরের বছরও একই ঘটনা, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র বলেন, “আহাঃ পঙ্কজদা, নাজির উঠতি শিল্পী, আমরা বুড়োরা আর কতদিন করবো? এরপর থেকে ওইই করুক না। গলা তো ছেলের খাসা।”
এরপর থেকে ১৯৪৬ এর শরৎ পর্যন্ত এই দায়ভার সামলে গেছেন এই মুসলমান বাচিক শিল্পী নাজির আহমদ। মাঝে একটা বেশ বড়ো বদল ঘটে গিয়েছিল অবশ্য, কিন্তু তার খোঁজও কেউ রাখেন না। ১৯৪৪-৪৫ এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে মনোমালিন্যের জন্য দ্বায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান পঙ্কজ মল্লিক। তার জায়গায় আসেন উঠতি শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। প্রথম বছর একই সুরে কোনোকিছু না পাল্টে একই ভাবে অনুষ্ঠান হলেও দ্বিতীয় বছরে অন্যরকম কিছু করতে গিয়ে জনগণের মধ্যে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৪৬ এ পঙ্কজ বাবু ফিরে এলে আবার পুরোনো মেজাজে ফিরে আসে মহিষাসুরমর্দিনী।
কিন্তু ভাগ্যের বিপর্যয়ে ১৯৪৭ এ নেমে এলো সেই অভিশাপ। হলো দেশভাগ। নাজির আহমেদ ফিরে গেলেন তার নিজের মাটিতে। ঢাকা রেডিওতে যোগ দেন তিনি এবং আবার পুরোনো জায়গায় ফিরতেই হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে।
তবে শুধু বাচিক শিল্পীর কথা কেন, যন্ত্র শিল্পীরাই বা কেন বাদ যাবেন?
সারেঙ্গী নিয়ে বসতেন মুন্সী। চেলো নিয়ে থাকতেন তারই ভাই আলী আর হারমোনিয়ামে মোহাম্মদ। এরা তিনজন তো হিন্দু নয়ই উপরন্তু বাঙালিও নন। মাতৃ ভাষা উর্দু। আর সেই জন্যই ওদের করে ফেলা একটা ভুলের জন্য আমাদের মহালয়ার সকাল অন্য মাত্রা পায়। কি সেই ভুল?
রিহার্সাল শুরুর আগে সবাইকে বোঝানো হয় বাংলা পাঠ চলাকালীন তারা আবহ বাজাবেন কিন্তু সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারণ করার সময় তা থেমে যাবে। কিন্তু ওরা বোঝেননি ভাষা সমস্যায়। বীরেন বাবু ভাষা পাল্টে বাংলা থেকে সংস্কৃততে চলে গেলেও ওঁরা বুঝতে না পেরে বাজাতেই থাকেন, সবাই দেখতেও থাকেন যে কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়াই তিনজন বাজিয়ে চলেছেন আর অদ্ভুত ভাবে তা মিলেও যাচ্ছে ভাষ্যের সাথে।
শুধু ওদের এই ভুলটার জন্যই পঙ্কজকুমার মল্লিক এর মতো আত্মপ্রত্যয়ী মানুষও নিজের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারনের মাঝেও যন্ত্রানুসঙ্গ যোগ করেন। এ প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেছিলেন, “সেদিন মুন্সীদের তথাকথিত সেই ভুল কান্ডটা আমার চোখ আরও বেশি খুলে দিল । আরও বেশি করে স্পষ্ট হল যে সঙ্গীতের কাছে, সুরের কাছে ভাষাটা কোনো প্রতিবন্ধকতাই নয়।”
এসবের বাইরেও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি গান ‘শান্তি দিলে ভরি’র সুরকার কিন্তু হিন্দু নন, মোল্লার ছেলে উস্তাদ সাগীরউদ্দিন খাঁ।
পঙ্কজ মল্লিক সেদিন যে কথা বলেছিলেন সেটি কতো বড় সত্যি সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
“উৎসবের আবার বামুন-কায়েত কি? যে ভাষায় নজরুল ইসলাম কীর্তন থেকে শ্যামাসঙ্গীত সব লেখেন সেই ভাষায় কোনো জাতপাত টানবেন না।'”
নাজির আহমেদ কে অনেকেই ভুলে গেছেন, কিন্তু যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ঢাকা রেডিওর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মহালয়ার কথা সকলকে বলতেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা সেটা ভালো চোখে দেখত না।