জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি
- আপডেট সময়- ০৫:৪৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪ ২২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক।।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত এবং সদস্য শাহনাজ সিদ্দীকি সোমাকে ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পরে।
রোববার তাদের অনুপস্থিতিতেই জাতীয় প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে এক বিবৃতিতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে অবহিত করা হয়।
অপরদিকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক ও চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের অপতৎপরতা উল্লেখ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
তারা বলেছেন,দেশে বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড গঠনতন্ত্র বিরোধী ও অবৈধ বলে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে কাউকে বিভ্রান্ত না হতেও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,
এর আগে হাসান হাফিজ ও আইয়ুব ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছাত্র- জনতা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি ব্যবস্থাপনা কমিটি বরাবর পেশ করেন। তাদের দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনা করে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সদস্যদের নিরাপত্তা এবং সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, শ্যামল দত্ত এবং শাহনাজ সিদ্দীকি সোমাকে ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানসহ গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৩ (ক) ও ৩৪ মোতাবেক তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হলো মর্মে সিদ্ধান্ত হয় । ক্লাব গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৪-এর খ) (৩) ও (৪) অনুযায়ী সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজকে সভাপতি এবং যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার দেওয়া হয়।
পরে এ বিষয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ক্ষমতার পালাবদলের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন সদস্য চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন এবং জিনিসপত্র লুটপাট করেছেন। সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ ও যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া অগঠনতান্ত্রিকভাবে নিজেদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন।
শুধু তাই নয়, তারা অগঠনতান্ত্রিকভাবে সভা আহ্বান করে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি এবং অপর একজন সদস্যসহ তাদের তিনজনের সদস্যপদ বাতিল করেছেন।
এছাড়া ৫০ জনের বেশি সিনিয়র সাংবাদিকের সদস্যপদ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে তাদেরকে এই ধরনের অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব একটি মর্যাদাসম্পন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্বাসের পেশাদার সাংবাদিকরা এর সদস্য। তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ক্লাবের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে আসছেন। বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড গঠনতন্ত্রবিরোধী ও অবৈধ বলে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে পরিচালিত হয়েছে এই জাতীয় প্রেস ক্লাব।এটি একটি নিরপেক্ষ, নিয়মতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে এর ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচিত হয়। আমাদের বিশ্বাস, গণতন্ত্রমনা সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ জাতীয় প্রেস ক্লাব জবরদখলের এই গর্হিত কর্মকাণ্ডকে কোনভাবেই সমর্থন করবেন না। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপ তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।