ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
না’গঞ্জে অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল নিতেই বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত-২ আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার নয়: মেঘনা আলম  এডিসির সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বিশ্বপ্রেমিক ডিসি আশরাফের নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জোড়া খুন দুই মাসেও ডিবি প্রধানের শূন্য পদ পূর্ণ হয়নি কর্মস্থলে অনুপস্থিত শরীয়তপুরের বিতর্কিত ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের সমালোচিত ডিসি আইআরজিসির কাছে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার ডিবি হেফাজতে পরিবেশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন: জনপ্রশাসন সচিব বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা: নিরাপদ আশ্রয় ফিশিং ট্রলার শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল না’গঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক-ছিনতাই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ নারায়ণগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনের শিকার বাবা-মার হাতেই পুত্র খুন সেনা অভিযানে তিন সপ্তাহে ৫৬ অবৈধ অস্ত্রসহ ৯৯৬ অপরাধী গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে ৩ কেজি গাঁজাসহ দুই কারবারি পুলিশের জালে আদমজী বিহারি ক্যাম্পে সেনা অভিযান, অস্ত্রসহ ২ নারী আটক কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু কুষ্টিয়ায় ছাত্রাবাসে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের ধূম্রজাল শরণখোলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ায় পিতার সংবাদ সম্মেলন কমলগঞ্জে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কুলাউড়ায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার দেশজুড়ে থেমে থেমে বজ্রসহ বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ট্রাম্পের হুমকির পর আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির পাল্টা জবাব ‘যুদ্ধ শুরু হলো’ নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্ধর্ষ চুরি সোনারগাঁয়ে খালপাড় বেড়িবাঁধ থেকে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার ফতুল্লায় ড্রেন থেকে বস্তাবন্দি যুবকের মরদেহ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে ‘গ্রীন এন্ড ক্লিন’ কর্মসূচীর আওতায় একদিনে ১৯ ট্রাক বর্জ্য অপসারণ কুষ্টিয়ায় শিশু ধর্ষণের বিচারের নামে সালিস বৈঠক, ‘চড়-থাপ্পড়ে’ মীমাংসা গাইবান্ধায় সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়ে চাকরি হারালেন ইমাম কুষ্টিয়ায় চিরকুট লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ব্যবসায়ীকে অপহরণ শরণখোলায় শিশুশ্রম নির্মূলে স্কুলমুখী করতে অসহায়দের মাঝে হাঁস বিতরণ গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টুর মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক কুষ্টিয়ায় ১২ দফা দাবিতে বিএটি শ্রমিকদের কর্মবিরতি হঠাৎ উত্তপ্ত জাতীয় প্রেস ক্লাব, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ‘আজ বিশ্ব বাবা দিবস’ বাবা শব্দের মাঝেই জড়িয়ে আছে ভালোবাসা,মায়া,নির্ভরতা প্রতিহিংসা নয়,ভালোবাসা দিয়ে না’গঞ্জের মানুষের মন জয় করতে চাই: মাসুদুজ্জামান কুষ্টিয়ায় এ্যাম্বুলেন্স-ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত নারায়ণগঞ্জকে নতুন আধুনিক রূপে সাজাতে চান এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে রক্ষা পেতে বাদীর বিরুদ্ধে যেসব আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আগামী জুলাই মাসে ক্যান্টিনে খাওয়ার সময় আছড়ে পড়ে বিমান, ৫ মেডিকেল শিক্ষার্থী নিহত এয়ার ইন্ডিয়া বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এপর্যন্ত ২০৪ মরদেহ উদ্ধার মুন্সীগঞ্জে মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং’র হামলায় আহত-৬ আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস দেশের অধিকাংশ জেলায় প্রচন্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন নারায়ণগঞ্জে মধ্যরাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র মাদকসহ আটক-২ শরণখোলায় ওড়নায় ফাঁস দিয়ে নির্বাচন অফিস কর্মচারী বিথীর আত্মহনন নারায়ণগঞ্জে সড়কের পাশে পরিত্যক্ত ঝোপ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার কুষ্টিয়ায় এক নারীকে গাছে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন, কেটে দেয়া হয় চুলও শরণখোলায় বিষ পানে গৃহবধূর আত্মহনন নিহত সাবেক এমপি আনারের কোটি টাকার গাড়ি মিললো কুষ্টিয়ায় ফরিদপুরে যুব সংঘের সভাপতি মঞ্জুর মোরশেদকে কুপিয়ে জখম মাত্র একমাসে দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ৪ গুণ ৬২ বছর পর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মূখরিত মুছাপুর দারুচ্ছুন্নাত মাদ্রাসা রায়পুরায় ব্যতিক্রমী ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় দৌঁড়াল ২০০ শিশু ভেড়ামারায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে নিহত-১ ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত আরও ৫ জন সেনা অভিযানে কলেজছাত্রের ঘর থেকে অত্যাধুনিক স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার ঈশ্বরদীতে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণ চিকিৎসা শেষেই দেশে ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কুষ্টিয়ায় নিজ ঘর থেকে ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে ১ লাখ ২৭ হাজার কারাবন্দীকে সহায়তা প্রদান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন সকলকে চমক লাগিয়ে ৮’শ কোটির ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোন সুন্দরবনে বিপুল পরিমাণ হরিন ধরার ফাঁদ উদ্ধার  রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনা প্রধানের সস্ত্রীক ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় নির্বাচন কবে, ঘোষণা করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস করোনার ঊর্ধ্বগতি, জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মাস্ক পরার বিশেষ নির্দেশনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুন্সীগঞ্জে ভয়াবহ নদী দখল:শাহ সিমেন্টের কবলে ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যার মোহনা বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ২৫ পরিবার পেল ডিসির ঈদ উপহার সরকারি গাড়িতে কোরবানির গরু নিলেন ইউএনও, দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়  আল-আকসায় হাজারো ফিলিস্তিনির ঈদুল আজহার নামাজ আদায় দেশের যেসব স্থানে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে কালুরঘাট সেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেল কয়েকটি গাড়ি, বহু হতাহত ফরিদপুরে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের সময়ে ভূয়া পুলিশ আটক টঙ্গীতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ আহত-২৫ নারায়ণগঞ্জে ঈদের প্রধান জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত মিনা উপত্যকা সন্ধ্যার মধ্যে ১০ অঞ্চলে ঝড়ের আশঙ্কা  ঈদ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের বিশেষ তৎপর চীনে রহস্যময় সুড়ঙ্গ আবিষ্কার; বিজ্ঞানীদের ধারনা ভিন্ন জগতের রাস্তা ভাঙ্গায় গ্রাম পুলিশ সদস্যগণের প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে দুই ভাতিজিকে হত্যাকারী ঘাতক পুলিশের জালে নারায়ণগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণ মামলার আসামি বাচ্চু ময়মনসিংয়ে গ্রেপ্তার প্রবাসীকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার-৩ ৬৪৫ কোটি টাকা আত্মসাত; নগদের সাবেক এমডি না’গঞ্জের ঝলকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করতে দেওয়া হবে না বন্দরে সংবাদকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ভূমি অধিগ্রহণের চেক বিতরণ করেন না’গঞ্জের ডিসি জাহিদুল  মুন্সীগঞ্জে ৪ লাখ টাকার অস্থায়ী পশুর হাট ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি কুষ্টিয়ায় গণঅভ্যুত্থানে আহতদের হেলথ কার্ড ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কারাখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায়, রণক্ষেত্র গাজীপুর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগুন মৌলভীবাজারে রামনবমী উদযাপন পরিষদের কমিটি গঠন মৌলভীবাজারে ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি ফরিদপুরে কৃষকের দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত 

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪ ২৬৮ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।