ঢাকা ১০:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
নারায়ণগঞ্জে সেনাসদস্য হত্যার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম,অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা কুলাউড়ায় সরকারি খাস টিলা কাঁটার অপরাধে অর্ধলাখ টাকা জরিমানা সাতক্ষীরায় অস্ত্রগুলিসহ ৪ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী সদরপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কুলাউড়ায় সাবেক সচিবের ফার্ম থেকে কেয়ারটেকারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার  ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় নারী কিশোরীসহ ৬ বাংলাদেশী আটক রাষ্ট্রদূত হলেন আলোচিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী রাজধানীর নীলক্ষেত অবরোধে উত্তাল ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই রাষ্ট্রপতির কাছে গজারিয়ায় ব্রীজের রেলিং নির্মাণে পাথরের বদলে উচ্ছিষ্ট ব্যবহার বিশ কোটি বছর আগের গান্ডোয়ানার অস্তিত্ব এখনো ভারতে ঘুরছে শ্রীমঙ্গলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেপ্তার-৯ কুলাউড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৯ ব্যবসায়ীকে জরিমানা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক ডিজি লাকীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা অটোপাসের আন্দোলনের মুখে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের পদত্যাগের ঘোষণা মায়ের জানাজায় অংশ নিতে পরেননি এস আলমসহ ছয় ভাইয়ের কেউই  বদ্দারহাটে গুলজার হোটেল থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার,স্বামী উধাও তালায় লোকনাথ নাসিংহোমের ভুল চিকিৎসায় ২ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ সিদ্ধিরগঞ্জে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে আহত-১ বাহারছড়া আইসির বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুর মিথ্যা অভিযোগ: জনসাধারণের মানববন্ধন টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ২’শ ৪০ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার-১ ফরিদপুরে ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মসূচি পালন ভালুকায় পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার শশুর গুরুতর আহত,থানায় অভিযোগ সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরী করা হচ্ছে: ফরিদা আক্তার নিষেধাজ্ঞা সত্বেও দেদারে চলছে মা ইলিশ নিধন, নেই প্রশাসনের তৎপরতা ঈশ্বরদীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র আয়োজনে গন সমাবেশ দৌলতপুরে রাস্তা সংস্কার কাজ ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার: দুর্ভোগে এলাকাবাসী লৌহজংয়ে কৃষিজমি ভরাট করছে সার্থান্বেসী প্রভাবশালীর মহল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অস্ত্র গুলিসহ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার  ‘ক্রাইম-তালাশ অনুসন্ধান’ নামে ভূয়া আইডি খুলে অশ্লীল ও মিথ্যাচারের অভিযোগ বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত মামলার রিভিউ শুনানি আজ টানা ছুটির পর আজ খুলেছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ থেকে বিচারিক কার্যক্রমে ফিরছে সুপ্রিম কোর্ট টাঙ্গাইলে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই দাফন হলো মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ লালন সাঁই’র ১৩৪তম তিরোধান মেলার আজ ছিলো শেষ দিন ফের রেকর্ড দামে স্বর্ণ, ভরি ১ লাখ ৪০ হাজারে ছাড়ালো মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হত্যায় জড়িত ২ নারী আটক  কুলাউড়ায় দুই ভারতীয় নাগরিক অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে আটক মৌলভীবাজারে ডিবির অভিযানে ৪’শ পিস ইয়াবাসহ আটক-১ আজ চতুর্থ দফায় ফের সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা বড়লেখায় ছাত্রাবাস থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার শ্রীমঙ্গলে ডাকাত দলের সক্রিয় দুই সদস্য আটক সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ বসতঘর থেকে বৃদ্ধ দম্পতির মরদেহ উদ্ধার  কুষ্টিয়ায় যুবলীগ নেতার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে মারধর অসমের ‘মায়াং’ কালো জাদু ও তন্ত্র-মন্ত্রের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র  মৌলভীবাজার কৃষকলীগ সভাপতি সাদেকুল গ্রেপ্তার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ৪০০ কোটির পিয়ন জাহাঙ্গীরকে দুদকে তলব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের পিএস-এপিএসরাও বানিয়েছেন অঢেল সম্পদসহ অর্থের পাহাড় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে যা বললেন ভারতের পররাষ্ট্র মুখপাত্র পুলিশের আরও ৪ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টেকনাফে চাচার যোগসাজশে ভাতিজা অপহরণ: অস্ত্রসহ গ্রেফতার-৩ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক বেলাল শ্রীঘরে কুলাউড়া ছাত্রলীগ সভাপতি নিয়াজুল তায়েফ গ্রেপ্তার বিয়ের পরে একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন নাঈম-শারমিন দম্পতি মতিয়া চৌধুরীর জানাজা আজ বাদ জোহর আওয়ামী জোট নেতা মেননের ২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদের খোঁজে দুদক জাতীয় দিবস হিসেবে ৭ই মার্চ বাতিল করায় ক্ষুব্ধ শাওন সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা আজ নুনের আবিষ্কার ও অসাধারণ গুনাগুন নীরবেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জায়েদ আলী গ্রেপ্তার ডিএনসিসির সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার সিআইডি প্রধানের দায়িত্ব নিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান ২৪ ঘন্টার মধ্যে টমটম চালক হত্যার আসামি জসিম গ্রেপ্তার  সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতা মান্নানের দুঃশাসনের স্বর্গরাজ্য জাতীয় ৮ দিবস বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে আ’লীগের বিবৃতি আজ থেকে ৩দিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু ৮ জাতীয় দিবস বাতিলের আদেশ জারি গণহত্যায় জড়িত সাংবাদিকরাও ছাড় পাবে না: আইন উপদেষ্টা  অবকাশকালীন বেঞ্চ ভেঙে দিলেন প্রধান বিচারপতি এবার এইচএসসিতে ৬৫টি কলেজের কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি এইচএসসিতে এইবছর শতভাগ পাস করেছে ১৩৮৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিনতাইয়ের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জে কৃষকদলের ৪ নেতা আটক ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ শ্রীমঙ্গলে পৃথক স্থান থেকে দুইটি মরদেহ উদ্ধার কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার মায়ানমারে অপহৃত ১৬ জেলেকে ফেরত আনলো বিজিবি নালার পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু মৌলভীবাজারে মাছ ধরা নিয়ে ঝগড়ার জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ: নিহত-১  মুন্সীগঞ্জের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এমিলির অর্থের যোগানদাতা জামাতা তারেক  সাতক্ষীরায় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে লাপাত্তা গৃহবধূ   ময়মনসিংহে বিএসটিআই’র আয়োজনে ‘বিশ্ব মান দিবস-২০২৪’ অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় পূজামণ্ডপে শিশুদের মারধরের ঘটনায় এক তরুণী আটক ডিজিএফআই’র নতুন ডিজি জাহাঙ্গীর আলম খোকন দাসের সর্বজনীন পূজা এককথায় দরিদ্রদের সেবা মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলে আ’লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ: ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা সাতক্ষীরার বাংলাদেশ-ভারত সীমানায় ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দূর্গাপূজা পাকশীতে রেলের সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুতুবদিয়ায় এখনো জ্বলছে এলপিজিবাহী জাহাজের আগুন, নিয়ন্ত্রণে আসেনি রাউজানে বিএনপির দু’গ্রুপের ভয়াবহ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ-২ দূর্গোৎসবে পুজামন্ডপ কেন পাহারা দিতে হবে প্রশ্ন❓মুন্সীগঞ্জে রিজভী বকশীগঞ্জে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ পালিত দৌলতপুরে মসজিদ-কবরস্থানের টাকা নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপ সংঘর্ষে আহত-৮ দূর্গোৎসবকে ঘিরে সারাদেশে ৩১৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন শ্রীমঙ্গলে লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে যুবকের মৃত্যু চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিএনপিতে স্থান নেই: ইকবাল হোসেন  সাবেক এমপি জিল্লুর রহমানের ছোট ভাই আতাউর গ্রেপ্তার

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।