ঢাকা ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
একদিনে ২৩ জেলায় নতুন ডিসি, ঢাকা-গাজীপুরে ফের বদল টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযানে বিপুল পরিমাণে ইয়াবাসহ আটক-১ টেকনাফে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ নারী শ্রমিক নিহত বদলি হয়ে গেলেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা মাত্র একদিনেই ঐক্যের বার্তা নিয়ে চমক দেখালেন মাসুদুজ্জামান ঐক্যের বার্তায় এক সূত্রে মেলবন্ধনে গাঁথলেন টিপু ও মাসুদ সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদকে পাশে নিয়ে মাসুদুজ্জামানের গণসংযোগ বন্দরবাসীর যৌক্তিক চাহিদা পূরনে পাশে থাকার আশ্বাস মাসুদুজ্জামানের বর্ণাঢ্য আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত উখিয়ায় ১৯ কেজি গাঁজাসহ আটক-১ টেকনাফে অস্ত্রসহ ২ রোহিঙ্গা ডাকাত আটক ফতুল্লায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে ৫ আ’লীগ কর্মী গ্রেপ্তার  ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে ভয়েজ এডিট করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে: মান্নান নারায়ণগঞ্জে  সাপ্তাহিক ‘ক্লিনিং ডে’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক মিট দ্যা প্রেস’এ তার বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিলেন মাসুদুজ্জামান বিদেশ থেকে ফিরেই সাবেক এমপি কালামের বাড়িতে ছুটে গেলেন মাসুদুজ্জামান তোলারাম কলেজে তোপের মুখে বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম নাসিক সিইও জাকির হোসেনের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন টেকনাফ এসিল্যান্ডের অভিযান রঙ্গিখালী খাল উদ্ধার  কক্সবাজারে র‍্যাবের অভিযানে গাঁজা ও ফেন্সিডিলসহ আটক-১ না ফেরার দেশে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র না’গঞ্জে যুবলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তারের ৩ দিনের মাথায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু, প্যারোলে জানাজায় টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযান: সিএনজিসহ ১০ হাজার ইয়াবা জব্দ আটক-১ রায়পুরায় এক হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার-১ কুষ্টিয়ায় শহিদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ টঙ্গীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়ে চার আঙুল হারালো যুবক ইসলামী দল মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে না: মাও. মিজানুর রহমান দেশের ২৯ জেলায় ডিসি নিয়োগ; এদের মধ্যে ২১ জনই নতুন মুখ রাজধানীতে পৃথক স্থানে দুটি বাসে আগুন মৌলভীবাজারে বিএনপি’র বৈঠকে “জয় বাংলা”শ্লোগানে তোলপাড়  গাইবান্ধায় বিএনপির ‘দুই নেতার সংঘর্ষের আভাসে ১৪৪ ধারা জারি  ফের ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নন-এমপিও শিক্ষকদের ঘেরাও কর্মসূচীতে পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান আইভীর ৫ মামলায় হাইকোর্টে জামিন লাভ, কারামুক্তিতে আর বাঁধা থাকলো না অবশেষে গিয়াসউদ্দিনের কাছে দোয়া নিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ এর বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মান্নান বিজয় ও রাশমিকা মান্দানার বিয়ের গুঞ্জন বিশ্বজুড়ে চাউর ৮ ডিসিকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন ঈশ্বরদীতে শাহ্ সুফি কালাচাঁদ ফকিরের ১৪তম ওফাত দিবসে ওরশ মোবারক মোংলার পশুর নদীতে ইঞ্জিন চালিত বোট উল্টে  আমেরিকা প্রবাসী নারী পর্যটক নিখোঁজ সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপে কোস্ট গার্ডের অভিযান: ট্রলিং বোট ও থাই জালসহ ১৯ জেলে আটক চকরিয়ায় হাইয়েস গাড়ি নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ ডাকাত গ্রেফতার দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়ে মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার অঘোষিত নারায়ণগঞ্জ-৪, আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিতে মরিয়া শাহ্ আলম সোনারগাঁয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: এটি পারিবারিক বিবাদ,এর দায় বিএনপি নিবেনা: মান্নান “এআই যুগে মানুষের সৃজনশীলতার নতুন সংজ্ঞা”–সাদিয়া ইসলাম ইরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ডন হারুন টেকনাফে প্রকাশ্যে দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সাবেক এমপি কালামপুত্র আশা’র নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‍্যালী জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত শরণখোলায় শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিএনপি নেতা ড.ওবায়দুল ইসলাম বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফরিদপুর জেলা পশ্চিমের শাখা প্রতিনিধি বৈঠক অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ি থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার সেনাপ্রধান ও নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার, যা জানালো সেনাবাহিনী সেনাপ্রধানকে ঘিরে মিথ্যা অপপ্রচারণা: সতর্ক করলো সেনাবাহিনী শিক্ষা আলো ছড়িয়ে দিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ল্যাপটপ উপহার দিলেন জেলা প্রশাসক  বাইউস্টে অনুষ্ঠিত হলো “সি.এস.ই ফল ফেস্ট  পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়েও রক্ষা হলো না সাবেক ছাত্রদল নেতা এনামুল হক মোল্লার স্বপ্ন পূরণে দুই প্রমিলা ফুটবলারের পাশে ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা  বন্দরের মুছাপুরে ধানের শীষের পক্ষে মাসুদুজ্জামানের জনসংযোগে জনতার ঢল নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল নেতা ও বাবার নেতৃত্বে সংবাদকর্মীর ওপর হামলা জনসংযোগে হামলা: চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত-১ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশ স্থিতিশীল হবে: সেনাসদরের বার্তা না’গঞ্জ জেলা প্রশাসকের তথ্য ব্যবহার করে প্রতারণার দায়ে যুবক আটক টেকনাফে সাবেক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার গাইবান্ধার ৫টি আসনে ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন যারা নরসিংদীর পাঁচ আসনের ৪টিতে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন যারা টেকনাফের গহীন পাহাড়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জন উদ্ধার,২ পাচারকারী আটক ভাঙ্গায় স্কুল পড়ুয়া মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় মায়ের ট্রেনে নিচে আত্মহনন কুষ্টিয়ার রেলসেতুর নিচ থেকে দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার আমার মনোনয়ন আপাতত ‘অন হোল্ড’ রয়েছে: রুমিন ফারহানা বেগম জিয়াসহ ধানের শীষের মনোনয়ন পেলেন ১০ নারী বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নাম নেই যেসব আলোচিত হেভিওয়েট নেতাদের মনোনয়ন ঘোষণার পর সহিংসতা, মধ্যরাতে বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার নারায়ণগঞ্জে পাঁচটির আসনের মধ্যে ৪টিতে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা নারায়ণগঞ্জ-৫’এ বিএনপির চুড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন মাসুদুজ্জামান মীরসরাইয়ে শিশুধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি উখিয়া থেকে গ্রেফতার আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে অন্তর্বর্তী সরকার নারায়ণগঞ্জ-৫’এ বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে মাসুদুজ্জামান দালালের ছত্রছায়ায় কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিস, ফাইল চলে ‘গোপন টিপস’-এ গাইবান্ধায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ টেকনাফে যৌথবাহিনীর অভিযানে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ পাচারকারী আটক টেকনাফে বিজিবির চেকপোস্টে ‘মেঘলার’ ঘ্রাণেই সনাক্ত চোলাই মদ,আটক-১ নরসিংদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচা হাতে ভাতিজা খুন  টেকনাফে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আমিন গ্রেফতার জান্নাতের টিকেট বিক্রি কইরেন না, জান্নাত এতো সস্তা না: মাসুদুজ্জামান কুষ্টিয়ায় নারীর মরদেহ উদ্ধার, আলামতে পুলিশের সন্দেহ ধর্ষণের পর হত্যা প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রী জানাজায় অঝোরে কাঁদলেন সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মতি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তাকারী বাসের হেলপার গ্রেপ্তার নির্বাচনী প্রচারণায় প্রথম প্রকাশ্যে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যবসায়ী শাহ্ আলম টেকনাফে কোস্টগার্ডের পৃথক অভিযানে ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার টেকনাফ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত অসহায়দের মাঝে ১ টাকায় গরুর গোশত বিক্রি করলেন মুফতি রায়হান জামিল না’গঞ্জ ৩’শ শয্যা হাসপাতালের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম তুলে ধরতে ডিজিটাল ডিসপ্লের উদ্বোধন সিআইডির অ্যাডিশনাল এসপি মশিউর গ্রেপ্তার না’গঞ্জ আদালতে বাদীর পরিবারকে মারধর,অবশেষ ৩ দিন পর মামলা নিলো পুলিশ নারায়ণগঞ্জের মাদকস্পট খ্যাত চাঁদমারীতে যৌথ অভিযান, আটক-১৬ বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের পাশে দাঁড়ানোই মানবতার প্রকৃত রূপ”: ডিসি  আদালত থেকে আগাম জামিন পেতে মরিয়া সামিরা বাজার সিন্ডিকেটের ফলে আমরা মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারছি না: ডিসি

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪ ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

নিউজটি শেয়ার করুন..

ট্যাগস:-

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।