Deprecated: Optional parameter $avatar declared before required parameter $id_or_email is implicitly treated as a required parameter in /home/samakal1/public_html/wp-content/themes/newspaper-pro/lib/metabox/user-function.php on line 55 সবার উপরে 'মায়ের আঁচল' তাহার উপরে নাই - Samakalin Kagoj
সর্বশেষ:-
২০২৫ সালের এসএসসি পরিক্ষার রুটিন প্রকাশ,পরিক্ষা ১০ এপ্রিল বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত না’গঞ্জে অপহৃত দুই সহোদরকে উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিলো পিবিআই সালাউদ্দিন চৌধুরীসহ পরিবারের নামে মিথ্যা সংবাদ প্রচারে থানায় অভিযোগ টেকনাফের হোয়াইক্যং বিজিবি চেকপোষ্টে বিপুল পরিমাণে ইয়াবাসহ আটক-১ দেবহাটায় সাংবাদিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ অপহরণের চেষ্টা শ্রীমঙ্গলে চাঞ্চল্যকর বিশ্বমনি হত্যা রহস্য উন্মোচন  মুন্সীগঞ্জে যথাযথ মর্যাদায় হানাদার মুক্ত দিবস পালিত এবার ১২ জেলার পুলিশ সুপার মর্যাদার কর্মকর্তা পরিবর্তন বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস পালিত আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা প্রসঙ্গে যা বললেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ঢাকা টু আগরতলা লংমার্চ শুরু প্রতিমাসে অনলাইনে ৪ লাখ নামজারি মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে: ভূমি উপদেষ্টা কুলিয়ারচরে সিএনজি-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত-২ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ‘সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ বলা ভাইরাল শ্যামল চন্দ্র  চরভদ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত পেঁয়াজ চাষীদের মাঝে ফের বীজ বিতরণ গজারিয়ায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার গফরগাঁওয়ে ৭৬তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত ১৫ বছরের আমলনামায় নেতিবাচক পুলিশ সদস্যদের তালিকা চেয়েছে  এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বাড়লো আরও পাঁচ দিন সিদ্ধিরগঞ্জে পরিবারের আপত্তিতে কবর থেকে উত্তোলন হয়নি সোলাইমানের লাশ নগরকান্দায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় পুলিশ সদস্যকে মারধর করা সেই দুই নারী আটক  চরভদ্রাসনে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও রোকেয়া দিবস পালিত মুন্সীগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত সাতক্ষীরায় জামায়াতের সাত উপজেলা আমীরগণের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত টেকনাফে নবাগত ইউএনও’র সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  সোনারগাঁ আ’লীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম গ্রেপ্তার  বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাবেক ৩০ ডিসি-ইউএনও’কে নির্বাচন সংস্কার কমিশনে তলব মিথ্যা মামলা করলে বাদীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে: ডিএমপি কমিশনার ঈশ্বরদীতে চাঞ্চল্যকর তপু হত্যার অন্যতম আসামি সোহেল গ্রেপ্তার মৌলভীবাজার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ২জনের মৃত্যু ঈশ্বরদী উপজেলা প্রেসক্লাবে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার মতোই দেশ ছেড়ে পালালেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালালেন প্রেসিডেন্ট আসাদ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বালুমহাল বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন নারায়ণগঞ্জে একটি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, চারটি দোকান ভস্মীভূত আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসে শ্রেষ্ঠ অ্যাওয়ার্ড পেলেন মৌলভীবাজারের ফাতেমা সাতক্ষীরায় পুলিশের অভিযানে জাল টাকাসহ মেশিন জব্দ: আটক-২ নগরকান্দায় ড্রেজার দিয়ে সাদ্দামের অবৈধ বালু উত্তোলন: প্রশাসন নিরব ভুমিকায়   উদ্বোধনের তিন বছরেও চালু হয়নি ভেড়ামারা পৌর ভূমি অফিস হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ‘জুলাই হিন্দু আল্যায়েন্সে’এর বিক্ষোভ ভালুকার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুন্নীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ  দিঘীরপাড়ের ৩/৯নং ওয়ার্ডে নেই কোন সরকারি প্রাথমিক স্কুল টেকনাফে অপহরণের শিকার দুই যুবক উদ্ধারসহ আটক-২ বিমান বাহিনীর ৫২তম বিমানসেনার ট্রেনিং সমাপনী অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবসে ১৬ কারাবন্দীর সাজা মওকুফ করলেন রাষ্ট্রপতি মুসলিম উম্মাহ্’র জন্য সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন জুমাবার কুলাউড়া থানার ওসির বদলি  শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘ ১৭ বছর পর বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সিদ্ধিরগঞ্জে এসএসসির ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কুষ্টিয়ায় চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ৫ গরু ডাকাতি ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় ট্রাক-এ্যাম্বুলেন্স মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত-৪ টংঙ্গীবাড়ী জেবি হাই স্কুলের মালামাল লুটের অভিযোগ মামলায় নাম থাকলেই পাইকারিভাবে গ্রেপ্তার নয়: স্পষ্ট জানিয়েছেন আইজিপি প্রধান উপদেষ্টা সঙ্গে প্রধান বিচারপতির প্রথম সাক্ষাৎ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কী করছে দানব আকৃতির ভয়ংকর রোবট চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে আইনজীবী হত্যার প্রধান আসামি চন্দন গ্রেপ্তার ব্যাংকে ১’শ ৩৪ কোটি টাকা’ নিয়ে মুখ খুললেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর যুবলীগ কর্মীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার বাজারে শীতকালীন সবজির সয়লাব: দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে থানা ঘেরাও  মৌলভীবাজার আদালত প্রাঙ্গণে ভিডিও করার দায়ে অর্থদন্ডসহ ৭ দিনের কারাবাস ঈশ্বরদীতে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা সংস্কার প্রস্তাব অবহিতকরণ আলোচনা সভা আগামী ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসক সম্মেলন হেফাজত নেতা মামুনুল হককে দেখতে হাসপাতালে জামায়াত আমির ফরিদপুরে ‌বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত  শ্রীমঙ্গলে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রেখেও দেদারসে তুলছেন বেতন-ভাতা কুলাউড়ায় প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ সাবেক মসিক সিইওসহ ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা মামলার অভিযোগ ভালুকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ সভা  পরিবর্তন হতে পারে জেলা প্রশাসক ও ক্যাডার শব্দগুলো মমতার বক্তব্য দেশের সার্বভৌমত্বের হুমকি স্বরূপ: মির্জা ফখরুল মৌলভীবাজারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত-২ মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে সত্য প্রচারই প্রতিবাদ: মৌলভীবাজার এসপি গজারিয়ায় বালু মহালে অভিযান: ৩টি বাল্কহেডসহ আটক-১৪ গাইবান্ধায় বিএনপির কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ  ২১ আগস্ট মামলায় তারেক রহমানসহ সকলকে খালাশ দেওয়ায় নগরকান্দায় আনন্দ মিছিল নগরকান্দায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত-১ সিদ্ধিরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীর মৃত্যু, আহত-৫ ফের পুলিশের আরও ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুৎ অফিসে দূর্ধর্ষ ডাকাতি: পরিদর্শনে পুলিশ সুপার সিদ্ধিরগঞ্জে পরিচ্ছন্নকর্মীদের কাছে চাঁদা দাবি: প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও কুমারখালী থানার ওসি ক্লোজ ভালুকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে গৃহবধুকে মারধরের অভিযোগ  কুলাউড়ায় এক যুগ পরে বিএনপির দুটি অংশের কোন্দলের অবসান শ্রীমঙ্গলে নৃ-গোষ্ঠীর ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপন গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক রহমানের খালাসে শ্রমিকদলের আনন্দ মিছিল  রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ বন্ধের আহ্বান তারেক রহমানের বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে ইতিবাচক পরিবর্তন: দুরত্ব কমিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় কুষ্টিয়ায় খেলনা পিস্তলসহ ভুয়া মেজর আটক সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া  বিকল্প পথ নেই: বিটু শিবপুরে স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন  দেশের ক্রান্তিকালে ও শান্তি রক্ষায় সেনাবাহিনী পাশে দাঁড়িয়েছে: সেনাপ্রধান বড়লেখার সাবেক যুবলীগ সম্পাদক গ্রেপ্তার  ঈশ্বরদীতে পরিত্যক্ত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার শর্ত সাপেক্ষে মুচলেকা দিয়ে ডিবি হেফাজত থেকে মুক্ত সাংবাদিক মুন্নী সাহা দেশকে যারা ভালোবাসে তারা কখনও দেশ ছেড়ে পালায় না: সাতক্ষীরায় জামায়াতের আমির

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪ ১০৭ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।