ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও বড় ঝড় প্রত্যক্ষ করলো ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০৭:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৩২ বার পড়া হয়েছে
ভারত ভোটে ঘূর্ণিঝড় 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা প্রতিনিধি

বহুদিন পর ভারতের মানুষ এবারে সাধারণ নির্বাচনে রেমেল ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও বড় ঘূর্ণিঝড় প্রত্যক্ষ করলেন। প্রচণ্ড প্রতিবাদের ঝড়ে বিজেপির একের পর এক দুর্ভেদ্য দুর্গ গুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে। মাত্র কদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোর গলায় বলেছিলেন ,পশ্চিমবঙ্গে এবারে তার দল বিজেপি তথা ভারতীয় জনতা পার্টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করবে। কিন্তু কার্যত দেখা গেল গতবারের জেতা আসনগুলিও বিজেপি ধরে রাখতে পারলনা।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রথী মহারথীরা একের পর এক ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছেন। তাদের এই ভরাডুবি আবার মোদির বিরুদ্ধে মানুষের কোটি কোটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রাজ্যে এতো দুর্নীতির অভিযোগ, রাস্তাঘাটে সর্বত্র লুটপাট,চুরি,ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানুষের বিষোদগার সত্বেও ভরা কোটালের মতো তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতেই ভোটের আঙুল চলে গেছে।
সবচেয়ে বড় কথা, কেন্দ্রেও ভোট যুদ্ধে মেঘের আড়ালে চলে যাওয়া কংগ্রেস আবার কালো মেঘের ছায়া কাটিয়ে সূর্যালোকে উদ্ভাষিত হয়ে উঠেছে। গতবার পার্লামেন্টের লোকসভায় বিরোধী দলের স্বীকৃতি পাওয়ার মতো আসনও পর্যন্ত পায়নি। কিন্তু এবারে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস চমকে দেবার মতো আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। বিজেপির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কংগ্রেস। ফলে মোদির জনবিরোধী কাজে ব্যাপক ভাবে বিরোধীতা করে আটকে দেবার ক্ষমতা অর্জন করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী ইন্ডি গোষ্ঠী।
কিন্তু কেন এই বিপর্যয় নরেন্দ্র মোদির বিজেপির?
এই বিপর্যয়ের সম্পুর্নভাবে দায়ী প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার কেবিনেট। যেভাবে রান্নার গ্যাসের মূল্যকে আকাশ ছোঁয়া করে দিয়েছেন তার ফলে প্রতিটি পরিবারের মহিলারা ভোটের মেসিনে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।
দ্বিতীয়ত মোদির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বৈষ্ণব সাধারণ মানুষের তোয়াক্কা না করে সকল সিনিয়র সিটিজেনদের রেলের ৪০ শতাংশ কংসেশন বাতিল করেছেন। এমনকি ৮০ র ওপর বয়সের মানুষ,অসুস্থ অবস্থায়ও এর কোন সুবিধা পান নি। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা বিভিন্ন কারণে ট্রেনে সফর করেন ,তারাও পাইকারি হারে বিজেপিকে ভোটে বহিষ্কার করেছেন এবারে।
সাংবাদিকেরা,যারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিশেষ ছাড় পেতেন ট্রেন সফরে,তাদের সেই সফরের জন্য দীর্ঘকালীন রেলের কনসেসান বাতিল করা হয়েছে। দুস্থ সাংবাদিকদের মধ্যে যারা কংগ্রেস আমলে সরকারি আবাসন পেয়েছিলেন,বিজেপি ক্ষমতায় আসতেই তাদের সকলকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
দেশের গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর স্বার্থে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে। তারও প্রতিফলন ঘটেছে এইবারের ভোটে।
পশ্চিমবঙ্গে অতি উৎসাহী মুখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত আজ অথবা কাল দিল্লিতে যাবেন ইন্ডি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী রননীতি তৈরি করতে। ইন্ডির বাইরে যেকটি দল রয়েছে তাদের দলে টানার চেষ্টা চলছে। তেলেঙ্গানার মুখ্য মন্ত্রী চন্দ্র শেখর রাও এর তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি, বিহারের মুখ্য মন্ত্রী নীতিস কুমারের জে ডি ইউ দল এবং ওড়িশার মুখ্য মন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দলকে টানার জন্য সোনিয়া গান্ধী দূত পাঠিয়েছেন। আজকেই সম্ভবত দুএক জনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।
তবে যাই হোক না কেন কেন্দ্রে দীর্ঘশ্বাস ফেলেও ক্ষমতায় আসছে মোদির ব্রিগেড বিজেপি সহ এন ডি এ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নির্বাচনে ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও বড় ঝড় প্রত্যক্ষ করলো ভারত

আপডেট সময় : ০৭:০৭:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
ভারত ভোটে ঘূর্ণিঝড় 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা প্রতিনিধি

বহুদিন পর ভারতের মানুষ এবারে সাধারণ নির্বাচনে রেমেল ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও বড় ঘূর্ণিঝড় প্রত্যক্ষ করলেন। প্রচণ্ড প্রতিবাদের ঝড়ে বিজেপির একের পর এক দুর্ভেদ্য দুর্গ গুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে। মাত্র কদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোর গলায় বলেছিলেন ,পশ্চিমবঙ্গে এবারে তার দল বিজেপি তথা ভারতীয় জনতা পার্টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করবে। কিন্তু কার্যত দেখা গেল গতবারের জেতা আসনগুলিও বিজেপি ধরে রাখতে পারলনা।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রথী মহারথীরা একের পর এক ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছেন। তাদের এই ভরাডুবি আবার মোদির বিরুদ্ধে মানুষের কোটি কোটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রাজ্যে এতো দুর্নীতির অভিযোগ, রাস্তাঘাটে সর্বত্র লুটপাট,চুরি,ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানুষের বিষোদগার সত্বেও ভরা কোটালের মতো তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতেই ভোটের আঙুল চলে গেছে।
সবচেয়ে বড় কথা, কেন্দ্রেও ভোট যুদ্ধে মেঘের আড়ালে চলে যাওয়া কংগ্রেস আবার কালো মেঘের ছায়া কাটিয়ে সূর্যালোকে উদ্ভাষিত হয়ে উঠেছে। গতবার পার্লামেন্টের লোকসভায় বিরোধী দলের স্বীকৃতি পাওয়ার মতো আসনও পর্যন্ত পায়নি। কিন্তু এবারে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস চমকে দেবার মতো আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। বিজেপির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কংগ্রেস। ফলে মোদির জনবিরোধী কাজে ব্যাপক ভাবে বিরোধীতা করে আটকে দেবার ক্ষমতা অর্জন করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী ইন্ডি গোষ্ঠী।
কিন্তু কেন এই বিপর্যয় নরেন্দ্র মোদির বিজেপির?
এই বিপর্যয়ের সম্পুর্নভাবে দায়ী প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার কেবিনেট। যেভাবে রান্নার গ্যাসের মূল্যকে আকাশ ছোঁয়া করে দিয়েছেন তার ফলে প্রতিটি পরিবারের মহিলারা ভোটের মেসিনে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।
দ্বিতীয়ত মোদির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বৈষ্ণব সাধারণ মানুষের তোয়াক্কা না করে সকল সিনিয়র সিটিজেনদের রেলের ৪০ শতাংশ কংসেশন বাতিল করেছেন। এমনকি ৮০ র ওপর বয়সের মানুষ,অসুস্থ অবস্থায়ও এর কোন সুবিধা পান নি। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা বিভিন্ন কারণে ট্রেনে সফর করেন ,তারাও পাইকারি হারে বিজেপিকে ভোটে বহিষ্কার করেছেন এবারে।
সাংবাদিকেরা,যারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিশেষ ছাড় পেতেন ট্রেন সফরে,তাদের সেই সফরের জন্য দীর্ঘকালীন রেলের কনসেসান বাতিল করা হয়েছে। দুস্থ সাংবাদিকদের মধ্যে যারা কংগ্রেস আমলে সরকারি আবাসন পেয়েছিলেন,বিজেপি ক্ষমতায় আসতেই তাদের সকলকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
দেশের গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর স্বার্থে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে। তারও প্রতিফলন ঘটেছে এইবারের ভোটে।
পশ্চিমবঙ্গে অতি উৎসাহী মুখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত আজ অথবা কাল দিল্লিতে যাবেন ইন্ডি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী রননীতি তৈরি করতে। ইন্ডির বাইরে যেকটি দল রয়েছে তাদের দলে টানার চেষ্টা চলছে। তেলেঙ্গানার মুখ্য মন্ত্রী চন্দ্র শেখর রাও এর তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি, বিহারের মুখ্য মন্ত্রী নীতিস কুমারের জে ডি ইউ দল এবং ওড়িশার মুখ্য মন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দলকে টানার জন্য সোনিয়া গান্ধী দূত পাঠিয়েছেন। আজকেই সম্ভবত দুএক জনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।
তবে যাই হোক না কেন কেন্দ্রে দীর্ঘশ্বাস ফেলেও ক্ষমতায় আসছে মোদির ব্রিগেড বিজেপি সহ এন ডি এ।