ঢাকা ০১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুড়ীতে বারবার লোকালয়ে চলে আসছে অসুস্থ একটি বন্য হাতি 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৫:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪ ৩২ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাঠিটিলা ঘুরে বেড়াচ্ছে অসুস্থ একটি বন্য হাতি। বারবার লোকালয়ে এসে জানান দিচ্ছে, তার চিকিৎসার খুব প্রয়োজন। পরে চিকিৎসা না পেয়ে হাতিটি আবার চলে যায় বনের গভীরে। এমনটাই জানান স্থানীয় বসবাসকারী বাসিন্দারা।
তারা আরও জানান, এই হাতিটি দীর্ঘ প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস ধরে অসুস্থ। হাতিটির শরীর রোগা হয়ে হাড় বেরিয়ে গেছে। এটা দেখে কিছুটা অনুভব করা যাচ্ছে সে মারাত্মক রকমের অসুস্থ অবস্থায় আছে। হাতিটি যা খায়, তাই মল ত্যাগ করে। প্রায় দুই মাস আগে হাতিটির অসুস্থতার খবর বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। বন বিভাগ হাতিটির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি-না জানি না।
জানা যায়, সিলেট বিভাগে একমাত্র বন লাঠিটিলা। পাঁচ হাজার ৬৩১ দশমিক ৩০ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এই বনাঞ্চল। এটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের একটি অংশ। যেখানে এখনো প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে টিকে আছে চারটি মা বন্য হাতি। বনটি রক্ষায় হাতিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই হাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেলে বনের বড় একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বনে এমনিতেই পুরুষ হাতি নেই। ফলে হাতির বংশ বিস্তার হচ্ছে না। আর বংশ বিস্তার না হলে বন থেকে হাতি এমনিতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এই অসুস্থ হাতিটির দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা গেলে মারা যাবে। আবাসস্থল সংকটসহ বিভিন্ন কারণে দিন দিন হাতি এমনিতেই কমে যাচ্ছে। হাতি রক্ষায় আমাদের সোচ্চার হতে হবে। পাথারিয়া বনের লাঠিটিলা বিটের সুরমা বাঁশ মহাল অংশে বেশি সময় পার করত এই হাতিগুলো। পাথারিয়ায় কয়েকটি বিট থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত খাবার থাকায় লাঠিটিলায় বিচরণ করে সবচেয়ে বেশি। বনে হাতিগুলোর প্রধান খাদ্য মুলিবাঁশ।
স্থানীয় বাসিন্দা তাহিদ রহমান বলেন, ‘হাতিটি দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। হাতিটির শরীরে বেশ কয়েকটি ক্ষত দেখা গেছে, তার শরীর শুকিয়ে হাড় বের হয়ে গেছে। হাতিটিকে তাড়িয়ে দিলেও বারবার লোকালয়ে চলে আসে, হয়তো বনে খাদ্যের অভাব থাকার কারণে চলে আসে।’
জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন বলেন, ‘হাতিটি অসুস্থ আমরা জেনেছি। এটার চিকিৎসা দিতে হলে বন্যপ্রাণী বিভাগের সহায়তা প্রয়োজন। ট্রাংকুলায়জারের মাধ্যমে হাতিটির শরীরে ওষুধ পুশ করতে হবে, এই ব্যবস্থা আমাদের নেই। বন্যপ্রাণী বিভাগ চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে আমরা সহযোগিতা করব।’
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (মৌলভীবাজার) ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, ‘হাতি অসুস্থ আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এটাকে ট্রাংকুলায়জারের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জুড়ীতে বারবার লোকালয়ে চলে আসছে অসুস্থ একটি বন্য হাতি 

আপডেট সময় : ০৮:৩৫:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাঠিটিলা ঘুরে বেড়াচ্ছে অসুস্থ একটি বন্য হাতি। বারবার লোকালয়ে এসে জানান দিচ্ছে, তার চিকিৎসার খুব প্রয়োজন। পরে চিকিৎসা না পেয়ে হাতিটি আবার চলে যায় বনের গভীরে। এমনটাই জানান স্থানীয় বসবাসকারী বাসিন্দারা।
তারা আরও জানান, এই হাতিটি দীর্ঘ প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস ধরে অসুস্থ। হাতিটির শরীর রোগা হয়ে হাড় বেরিয়ে গেছে। এটা দেখে কিছুটা অনুভব করা যাচ্ছে সে মারাত্মক রকমের অসুস্থ অবস্থায় আছে। হাতিটি যা খায়, তাই মল ত্যাগ করে। প্রায় দুই মাস আগে হাতিটির অসুস্থতার খবর বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। বন বিভাগ হাতিটির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি-না জানি না।
জানা যায়, সিলেট বিভাগে একমাত্র বন লাঠিটিলা। পাঁচ হাজার ৬৩১ দশমিক ৩০ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এই বনাঞ্চল। এটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের একটি অংশ। যেখানে এখনো প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে টিকে আছে চারটি মা বন্য হাতি। বনটি রক্ষায় হাতিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই হাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেলে বনের বড় একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বনে এমনিতেই পুরুষ হাতি নেই। ফলে হাতির বংশ বিস্তার হচ্ছে না। আর বংশ বিস্তার না হলে বন থেকে হাতি এমনিতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এই অসুস্থ হাতিটির দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা গেলে মারা যাবে। আবাসস্থল সংকটসহ বিভিন্ন কারণে দিন দিন হাতি এমনিতেই কমে যাচ্ছে। হাতি রক্ষায় আমাদের সোচ্চার হতে হবে। পাথারিয়া বনের লাঠিটিলা বিটের সুরমা বাঁশ মহাল অংশে বেশি সময় পার করত এই হাতিগুলো। পাথারিয়ায় কয়েকটি বিট থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত খাবার থাকায় লাঠিটিলায় বিচরণ করে সবচেয়ে বেশি। বনে হাতিগুলোর প্রধান খাদ্য মুলিবাঁশ।
স্থানীয় বাসিন্দা তাহিদ রহমান বলেন, ‘হাতিটি দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। হাতিটির শরীরে বেশ কয়েকটি ক্ষত দেখা গেছে, তার শরীর শুকিয়ে হাড় বের হয়ে গেছে। হাতিটিকে তাড়িয়ে দিলেও বারবার লোকালয়ে চলে আসে, হয়তো বনে খাদ্যের অভাব থাকার কারণে চলে আসে।’
জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন বলেন, ‘হাতিটি অসুস্থ আমরা জেনেছি। এটার চিকিৎসা দিতে হলে বন্যপ্রাণী বিভাগের সহায়তা প্রয়োজন। ট্রাংকুলায়জারের মাধ্যমে হাতিটির শরীরে ওষুধ পুশ করতে হবে, এই ব্যবস্থা আমাদের নেই। বন্যপ্রাণী বিভাগ চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে আমরা সহযোগিতা করব।’
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (মৌলভীবাজার) ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, ‘হাতি অসুস্থ আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এটাকে ট্রাংকুলায়জারের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে।’