সাধারন শিক্ষার্থী-সমন্বয়কদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসতে চায় আওয়ামী লীগ
- আপডেট সময়- ০৪:২১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪ ৫০ বার পড়া হয়েছে
আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নবান ও সহনশীল থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা..!
অনলাইন ডেস্ক।।
সারাদেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি শান্ত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার (৩ আগস্ট) রাতে গণভবনে জরুরি বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি ছাড়াও এতে অংশ নেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুর নাহার চাপা, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
বৈঠকে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নবান ও সহনশীল থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। একইভাবে তিন নেতার একটি টিম করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এই টিমে ১৪ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতাদের যুক্ত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা তাদের দাবির সঙ্গে একমত। এরই মধ্যে তাদের দাবি মেনে কোটা সংস্কার করা হয়েছে। হতাহতের ঘটনায় সঠিক তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। এর সঠিক বিচারও হবে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তাদের কথা শুনবেন। এ বিষয়ে দলীয় সভাপতি ও জোটনেত্রীকে রিপোর্ট করবেন।
নেতারা বলেছেন, বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের বা আমাদের আপত্তি নেই। তারা আন্দোলন করছে করুক। তবে তৃতীয় পক্ষ যেন তাদের ব্যবহার করে সুবিধা আদায় না করতে পারে সেদিকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। শিক্ষার্থীদের ওপর কেউ যেন কোনো অন্যায় আচরণ না করে, সে নির্দেশনাও দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পড়ামহল্লায় সতর্ক থাকার জন্যও বলে দিয়েছেন।
গণভবন সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই বৈঠকের বাইরেও গত রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সূত্রের ধারণা, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি অবগত করা ও নির্দেশনা নেওয়ার জন্যই তিনি গণভবনে যান।
এদিকে সারাদেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গতকালও গণমিছিল করেছে। গতকালের গণমিছিলে কবি-সাহিত্যিক, শিক্ষক চিকিৎসক, শিল্পী-কলাকুশলিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছে। ঢাকার উত্তরা, খুলনা, হবিগঞ্জ ও সিলেটে গণমিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। লক্ষ্মীপুর, নরসিংদীসহ বিভিন্ন স্থানের গণমিছিলে হামলা ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। গণমিছিলে হামলার প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের আলোচনার এ সিদ্ধান্ত কীভাবে নেবেন আন্দোলনকারীরা, তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বসবেন কি না, সে বিষয়ে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।