ঢাকা ১০:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
নারায়ণগঞ্জে র‍্যাব সদস্যকে ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নারী গুলিবিদ্ধ সব ভূলে অসুস্থ টিপুকে দেখতে ছুটে গেলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান ’প্রাইজ পোস্টিং’ পেয়ে আবেগাপ্লুত বিদায় নিলেন ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা  কুষ্টিয়া-২ আসন শহিদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মানববন্ধন গাইবান্ধায় মাদ্রাসা সুপারের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন টেকনাফ ভুমি অফিস পরিদর্শনে ভুমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ‘আমাকে খুঁইজেন না, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আছি, ভালো আছি’ পুলিশকে নিখোঁজ তরুণীর বার্তা নান্দাইলে ৪’শ বছরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে অনুষ্ঠিত হলো পারিবারিক মেলবন্ধন তৃতীয় লিঙ্গের মডেল জারার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার,থানায় জিডি চকরিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে শীর্ষ ডাকাত সাইফুলের বসত ঘরে থেকে অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার না’গঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় কৃষকদল নেতার ওপর হামলা ও গুলি ছোড়ার অভিযোগ প্রার্থী বারবার ছুটে গেলেও, দলীয় সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করলেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা পঞ্চমীঘাটে স্কুল শিক্ষক লাঞ্ছনাসহ হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা টেকনাফে পৃথক অভিযানে চিহ্নিত ২ আসামি গ্রেপ্তার ফরিদপুরে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাংচুর মামলায় গ্রেপ্তার-২২ ত্রিভুজ প্রেমের বলি আশরাফুল, হত্যার দুদিন পর মরদেহ ২৬ খন্ড করে ফেলে যায় ধানমন্ডি ৩২’এ মারধরের শিকার নারীকে জুলাইয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যা মামলার আসামি সুমন গ্রেপ্তার ১০ হাজার কর্মীসমর্থকদের নিয়ে মাসুদুজ্জামানের আনন্দ শোভাযাত্রা-গনমিছিল  নির্বাচিত হলে সরকারী বরাদ্দের অর্থের ৫ টাকাও দূর্নীতি করতে দিবো না: কাসেমী বিবিসিতে দেয়া সাক্ষৎকারে হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করেন মাত্র ২৯ দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের নতুন ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা একদিনে ২৩ জেলায় নতুন ডিসি, ঢাকা-গাজীপুরে ফের বদল টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযানে বিপুল পরিমাণে ইয়াবাসহ আটক-১ টেকনাফে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ নারী শ্রমিক নিহত বদলি হয়ে গেলেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা মাত্র একদিনেই ঐক্যের বার্তা নিয়ে চমক দেখালেন মাসুদুজ্জামান ঐক্যের বার্তায় এক সূত্রে মেলবন্ধনে গাঁথলেন টিপু ও মাসুদ সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদকে পাশে নিয়ে মাসুদুজ্জামানের গণসংযোগ বন্দরবাসীর যৌক্তিক চাহিদা পূরনে পাশে থাকার আশ্বাস মাসুদুজ্জামানের বর্ণাঢ্য আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত উখিয়ায় ১৯ কেজি গাঁজাসহ আটক-১ টেকনাফে অস্ত্রসহ ২ রোহিঙ্গা ডাকাত আটক ফতুল্লায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে ৫ আ’লীগ কর্মী গ্রেপ্তার  ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে ভয়েজ এডিট করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে: মান্নান নারায়ণগঞ্জে  সাপ্তাহিক ‘ক্লিনিং ডে’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক মিট দ্যা প্রেস’এ তার বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিলেন মাসুদুজ্জামান বিদেশ থেকে ফিরেই সাবেক এমপি কালামের বাড়িতে ছুটে গেলেন মাসুদুজ্জামান তোলারাম কলেজে তোপের মুখে বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম নাসিক সিইও জাকির হোসেনের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন টেকনাফ এসিল্যান্ডের অভিযান রঙ্গিখালী খাল উদ্ধার  কক্সবাজারে র‍্যাবের অভিযানে গাঁজা ও ফেন্সিডিলসহ আটক-১ না ফেরার দেশে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র না’গঞ্জে যুবলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তারের ৩ দিনের মাথায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু, প্যারোলে জানাজায় টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযান: সিএনজিসহ ১০ হাজার ইয়াবা জব্দ আটক-১ রায়পুরায় এক হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার-১ কুষ্টিয়ায় শহিদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ টঙ্গীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়ে চার আঙুল হারালো যুবক ইসলামী দল মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে না: মাও. মিজানুর রহমান দেশের ২৯ জেলায় ডিসি নিয়োগ; এদের মধ্যে ২১ জনই নতুন মুখ রাজধানীতে পৃথক স্থানে দুটি বাসে আগুন মৌলভীবাজারে বিএনপি’র বৈঠকে “জয় বাংলা”শ্লোগানে তোলপাড়  গাইবান্ধায় বিএনপির ‘দুই নেতার সংঘর্ষের আভাসে ১৪৪ ধারা জারি  ফের ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নন-এমপিও শিক্ষকদের ঘেরাও কর্মসূচীতে পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান আইভীর ৫ মামলায় হাইকোর্টে জামিন লাভ, কারামুক্তিতে আর বাঁধা থাকলো না অবশেষে গিয়াসউদ্দিনের কাছে দোয়া নিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ এর বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মান্নান বিজয় ও রাশমিকা মান্দানার বিয়ের গুঞ্জন বিশ্বজুড়ে চাউর ৮ ডিসিকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন ঈশ্বরদীতে শাহ্ সুফি কালাচাঁদ ফকিরের ১৪তম ওফাত দিবসে ওরশ মোবারক মোংলার পশুর নদীতে ইঞ্জিন চালিত বোট উল্টে  আমেরিকা প্রবাসী নারী পর্যটক নিখোঁজ সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপে কোস্ট গার্ডের অভিযান: ট্রলিং বোট ও থাই জালসহ ১৯ জেলে আটক চকরিয়ায় হাইয়েস গাড়ি নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ ডাকাত গ্রেফতার দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়ে মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার অঘোষিত নারায়ণগঞ্জ-৪, আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিতে মরিয়া শাহ্ আলম সোনারগাঁয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: এটি পারিবারিক বিবাদ,এর দায় বিএনপি নিবেনা: মান্নান “এআই যুগে মানুষের সৃজনশীলতার নতুন সংজ্ঞা”–সাদিয়া ইসলাম ইরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ডন হারুন টেকনাফে প্রকাশ্যে দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সাবেক এমপি কালামপুত্র আশা’র নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‍্যালী জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত শরণখোলায় শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিএনপি নেতা ড.ওবায়দুল ইসলাম বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফরিদপুর জেলা পশ্চিমের শাখা প্রতিনিধি বৈঠক অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ি থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার সেনাপ্রধান ও নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার, যা জানালো সেনাবাহিনী সেনাপ্রধানকে ঘিরে মিথ্যা অপপ্রচারণা: সতর্ক করলো সেনাবাহিনী শিক্ষা আলো ছড়িয়ে দিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ল্যাপটপ উপহার দিলেন জেলা প্রশাসক  বাইউস্টে অনুষ্ঠিত হলো “সি.এস.ই ফল ফেস্ট  পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়েও রক্ষা হলো না সাবেক ছাত্রদল নেতা এনামুল হক মোল্লার স্বপ্ন পূরণে দুই প্রমিলা ফুটবলারের পাশে ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা  বন্দরের মুছাপুরে ধানের শীষের পক্ষে মাসুদুজ্জামানের জনসংযোগে জনতার ঢল নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল নেতা ও বাবার নেতৃত্বে সংবাদকর্মীর ওপর হামলা জনসংযোগে হামলা: চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত-১ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশ স্থিতিশীল হবে: সেনাসদরের বার্তা না’গঞ্জ জেলা প্রশাসকের তথ্য ব্যবহার করে প্রতারণার দায়ে যুবক আটক টেকনাফে সাবেক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার গাইবান্ধার ৫টি আসনে ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন যারা নরসিংদীর পাঁচ আসনের ৪টিতে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন যারা টেকনাফের গহীন পাহাড়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জন উদ্ধার,২ পাচারকারী আটক ভাঙ্গায় স্কুল পড়ুয়া মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় মায়ের ট্রেনে নিচে আত্মহনন কুষ্টিয়ার রেলসেতুর নিচ থেকে দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার আমার মনোনয়ন আপাতত ‘অন হোল্ড’ রয়েছে: রুমিন ফারহানা বেগম জিয়াসহ ধানের শীষের মনোনয়ন পেলেন ১০ নারী বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নাম নেই যেসব আলোচিত হেভিওয়েট নেতাদের মনোনয়ন ঘোষণার পর সহিংসতা, মধ্যরাতে বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার নারায়ণগঞ্জে পাঁচটির আসনের মধ্যে ৪টিতে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা নারায়ণগঞ্জ-৫’এ বিএনপির চুড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন মাসুদুজ্জামান মীরসরাইয়ে শিশুধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি উখিয়া থেকে গ্রেফতার আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে অন্তর্বর্তী সরকার

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪ ৪১৮ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

ট্যাগস:-

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।