ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকার থেকে সোনা উধাও! ব্যাংক বলছে ভিন্ন কথা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:১৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪ ৩০ বার পড়া হয়েছে

 

অনলাইন ডেস্ক।।

 

 

চট্টগ্রামে শহরের ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ‘গায়েব’ হয়েছে, গ্রাহকের এমন অভিযোগের পর ব্যাংকটি জানিয়েছে ওই গ্রাহক স্ববিরোধী এবং কিছু বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়েছেন। পাশাপাশি এ ব্যাপারে তদন্তসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে ব্যাংকটি।

রোববার (২ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো ব্যাংকটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলামের সাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

লকারের সোনা গায়েব’ নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্য>>

ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তার কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামে ২০০৬ সাল থেকে ইসলামি ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করে আসছেন। প্রতিটি লকার খোলার জন্য সাধারণত দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক এবং অপরটি ব্যাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকে। গ্রাহকের চাবি ছাড়া শুধু ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে এককভাবে কোনোভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়।কারন ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে তার লকারের মূল চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে গ্রাহক ছাড়া ব্যাংকার বা অন্য কোনো ব্যক্তিরও জানার সুযোগ নেই।

ব্যাংকটি উল্লেখ করে, গত ৮ এপ্রিল গ্রাহক লকার ব্যবহারের জন্য ব্যাংকে আসেন। তখন ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের উপস্থিতিতে মাস্টার কী (চাবি) দিয়ে লকার আনলক করেন। ব্যাংকারকে অবহিত করে চলে যান। যেহেতু লকার হোল্ডারের চাবি দিয়ে বন্ধ করা হয়, সেহেতু লকার বন্ধ করার সময় নিয়ম মোতাবেক ব্যাংকের কারো উপস্থিত থাকার কোন ধরনের সুযোগ নেই। একমাত্র তিনিই তার লকার বন্ধ করতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক আরো জানায়, লকার হোল্ডার লকার বন্ধ না করা পর্যন্ত তার চাবি বের করেও আনা সম্ভব নয়। গ্রাহক নির্দিষ্ট লকারে কী নিয়ে গেছেন বা রেখে গেছেন তা ব্যাংকেরও জানার কোন ধরনের সুযোগ নেই। গ্রাহক যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা লকার রুমের মূল ফটক নিয়ম মাফিক তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত ২৯ মে লকার হোল্ডার তার লকার ব্যবহার করতে এসে তার গহনা খোয়া গেছে বলে জানান। অথচ এর আগে তিনি নিজে লকার বন্ধ করে চাবি নিয়ে গেছেন।

ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, লকার হোল্ডার একবার বলেছেন, তার ৩০০ ভরি সোনা নেই। কিছুক্ষণ পর আবার জানান, ১৫০ ভরি নেই এবং আরও কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরির মধ্যে অর্ধেক পেয়েছেন, বাকি অর্ধেক পাননি।এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকটি জানায়, ওই গ্রাহক কয়েক ধরনের তথ্য দিয়েছেন, যা স্ববিরোধী এবং বিভ্রান্তকর। এর কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রামের চকবাজার থানার পুলিশ সরেজমিন লকার রুম পরিদর্শন করেছেন।

ইতিমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তথ্যানুসন্ধান কমিটিও গঠন করেছে। এ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গ্রাহকের বক্তব্য>>>

লকারে গয়না রেখেছিলেন নগরের বেভারলি হিলের বাসিন্দা রোকেয়া বারী। তার দাবি, চুড়ি, জড়োয়া সেট, হার, চেইন, আংটি, দুলসহ ১৪৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল লকারে। লকার খোলার পর দেখা যায়, সেখানে রয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১১ ভরি স্বর্ণ।

 

প্রসঙ্গ,বুধবার দুপুরে কিছু স্বর্ণালঙ্কার আনার জন্য তিনি ব্যাংকে যান। কিন্তু দায়িত্বে থাকা অফিসার তাকে নিয়ে ব্যাংকের লকারের কাছে গিয়ে তা খোলা দেখতে পান।

জানা গেছে, খোয়া যাওয়া স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা এবং এ ঘটনায় ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ পোষন করেন গ্রাহক।

পুলিশের বক্তব্য >>>

এ ঘটনার বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আলী আকবর বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়েছিলাম।তখন ওখানে গিয়ে লকার খোলা দেখতে পাই। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা এখনও কোনো মামলা করেননি। ব্যাংক থেকেও এ বিষয়ে এখনো সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

লকার থেকে সোনা উধাও! ব্যাংক বলছে ভিন্ন কথা

আপডেট সময় : ০৪:১৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

 

অনলাইন ডেস্ক।।

 

 

চট্টগ্রামে শহরের ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ‘গায়েব’ হয়েছে, গ্রাহকের এমন অভিযোগের পর ব্যাংকটি জানিয়েছে ওই গ্রাহক স্ববিরোধী এবং কিছু বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়েছেন। পাশাপাশি এ ব্যাপারে তদন্তসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে ব্যাংকটি।

রোববার (২ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো ব্যাংকটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলামের সাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

লকারের সোনা গায়েব’ নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্য>>

ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তার কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামে ২০০৬ সাল থেকে ইসলামি ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করে আসছেন। প্রতিটি লকার খোলার জন্য সাধারণত দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক এবং অপরটি ব্যাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকে। গ্রাহকের চাবি ছাড়া শুধু ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে এককভাবে কোনোভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়।কারন ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে তার লকারের মূল চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে গ্রাহক ছাড়া ব্যাংকার বা অন্য কোনো ব্যক্তিরও জানার সুযোগ নেই।

ব্যাংকটি উল্লেখ করে, গত ৮ এপ্রিল গ্রাহক লকার ব্যবহারের জন্য ব্যাংকে আসেন। তখন ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের উপস্থিতিতে মাস্টার কী (চাবি) দিয়ে লকার আনলক করেন। ব্যাংকারকে অবহিত করে চলে যান। যেহেতু লকার হোল্ডারের চাবি দিয়ে বন্ধ করা হয়, সেহেতু লকার বন্ধ করার সময় নিয়ম মোতাবেক ব্যাংকের কারো উপস্থিত থাকার কোন ধরনের সুযোগ নেই। একমাত্র তিনিই তার লকার বন্ধ করতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক আরো জানায়, লকার হোল্ডার লকার বন্ধ না করা পর্যন্ত তার চাবি বের করেও আনা সম্ভব নয়। গ্রাহক নির্দিষ্ট লকারে কী নিয়ে গেছেন বা রেখে গেছেন তা ব্যাংকেরও জানার কোন ধরনের সুযোগ নেই। গ্রাহক যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা লকার রুমের মূল ফটক নিয়ম মাফিক তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত ২৯ মে লকার হোল্ডার তার লকার ব্যবহার করতে এসে তার গহনা খোয়া গেছে বলে জানান। অথচ এর আগে তিনি নিজে লকার বন্ধ করে চাবি নিয়ে গেছেন।

ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, লকার হোল্ডার একবার বলেছেন, তার ৩০০ ভরি সোনা নেই। কিছুক্ষণ পর আবার জানান, ১৫০ ভরি নেই এবং আরও কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরির মধ্যে অর্ধেক পেয়েছেন, বাকি অর্ধেক পাননি।এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকটি জানায়, ওই গ্রাহক কয়েক ধরনের তথ্য দিয়েছেন, যা স্ববিরোধী এবং বিভ্রান্তকর। এর কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রামের চকবাজার থানার পুলিশ সরেজমিন লকার রুম পরিদর্শন করেছেন।

ইতিমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তথ্যানুসন্ধান কমিটিও গঠন করেছে। এ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গ্রাহকের বক্তব্য>>>

লকারে গয়না রেখেছিলেন নগরের বেভারলি হিলের বাসিন্দা রোকেয়া বারী। তার দাবি, চুড়ি, জড়োয়া সেট, হার, চেইন, আংটি, দুলসহ ১৪৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল লকারে। লকার খোলার পর দেখা যায়, সেখানে রয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১১ ভরি স্বর্ণ।

 

প্রসঙ্গ,বুধবার দুপুরে কিছু স্বর্ণালঙ্কার আনার জন্য তিনি ব্যাংকে যান। কিন্তু দায়িত্বে থাকা অফিসার তাকে নিয়ে ব্যাংকের লকারের কাছে গিয়ে তা খোলা দেখতে পান।

জানা গেছে, খোয়া যাওয়া স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা এবং এ ঘটনায় ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ পোষন করেন গ্রাহক।

পুলিশের বক্তব্য >>>

এ ঘটনার বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আলী আকবর বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়েছিলাম।তখন ওখানে গিয়ে লকার খোলা দেখতে পাই। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা এখনও কোনো মামলা করেননি। ব্যাংক থেকেও এ বিষয়ে এখনো সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি।