এমপি আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড কে এই আখতারুজ্জামান?
- আপডেট সময়- ১১:১৫:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
“আমরা তদন্ত করছি।সুষ্ঠ তদন্তের প্রয়োজনে ভারতের টিম বাংলাদেশে আসবে। প্রয়োজনে আমাদের টিমও ভারত যাবে।”এমপি আনোয়ারুল হত্যাকারীরা ‘চিহ্নিত করা হয়েছে’ হত্যাকারীরা কোটি টাকার কিলিং মিশন অংশ নেয়: স্বরাষ্টমন্ত্রী
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকারীদের ‘চিহ্নিত করা হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন, “প্রায় সব কিছু চিহ্নিত হয়েছে। কারা হত্যা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে প্রায় কাছাকাছি এসে গেছি। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি।”
দুই দেশের গোয়েন্দারা একমত হতে পারলে সেই ঘোষণা দেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা এখনোও তদন্ত করছি। তদন্তের প্রয়োজনে ভারতের টিম বাংলাদেশে আসবে। প্রয়োজনে আমাদের টিমও ভারত যাবে।”
ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন।এরপর, সেখান থেকে বেরিয়েই নিখোঁজ হন আনার।
এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।এরপর তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। বুধবার সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন করা হয়েছেন এমপি আনারকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পরে বলেন, আনারকে কলকাতার ওই ফ্লাটে ‘পরিকল্পিতভাবে খুন’ করা হয়েছে। তবে তার মরদেহ এখনও পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় পুলিশের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর বাংলাদেশের পুলিশ ৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে খুনিরা বাংলাদেশেরই বলে তারা জানতে পেরেছেন।
মঙ্গলবার বিকালে নিউ টাউনের সঞ্জীভা গার্ডেনস নামের ওই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ঘুরে দেখে কলকাতার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে এমপি আনোয়ারুলকে সর্বশেষ ১৩ মে এখানে ঢুকতে দেখা গেছে। আর বেরুতে দেখা যায়নি! এর আগে তিনি এখানে এসেছিলেন কিনা সেটি আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে তার লাশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি।”
লাশ উদ্ধার না করে কীভাবে তাকে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন জানতে চাইলে অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “আমাদের কাছে ইনপুট আছে।”
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনারকে খুন করা হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিক সন্দ্বীপ রায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
তবে এঘটনায় আখতারুজ্জামান এখনো ধরা পড়েননি। ভারত থেকে নেপাল হয়ে এরইমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে খবর পেয়েছে ঢাকার পুলিশ।
বাংলাদেশে এ বিষয়ে তদন্তে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আখতারুজ্জামানের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে, এলাকায় তিনি শাহীন মিয়া নামে পরিচিত। তার এক ভাই কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান।
কলকাতার পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলো লিখেছেন, ১৩ মে নিউ টাউনের ওই সঞ্জীভা গার্ডেনস নামক ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে খুন করা হয় আনারকে। পরে টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিন দিন ধরে দেহের অংশগুলো অনাত্র সরিয়ে ফেলা হয়। তবে সেগুলো কোথায় ফেলা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ বিষয়ে মঙ্গলবার বলেন, তারাও সেরকম শুনেছেন। কলকাতা পুলিশ এসব বিষয়ে কাজ করছে।
সঞ্জীভা গার্ডেনসের সিসি ক্যামেরার ভিডিও খতিয়ে দেখার পর তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বরাহনগর থেকে একটি গাড়িতে চেপে নিউ টাউনের ওই বাড়িতে আবাসনে পৌঁছান আনার। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি সেই গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এছাড়া একটি রাইড শেয়ারের গাড়িও দেখা গেছে সিসি ক্যামেরায়, যে গাড়িতে করে সন্দেহজনক কয়েকজন ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। সেই গাড়ির চালককেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।