ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দু’দশকের রেকর্ড ছাড়িয়ে পাবনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৪:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

পাবনা জেলায় এ বছরে বিগত ২০ বছরে এতো লিচু ধরে নাই..!

 

মামুনুুর রহমান,ঈশ্বরদী(পাবনা) প্রতিনিধি।।

 পাবনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দুই দশকের রেকর্ড ভেঙা দেশের চাহিদা পূরণ করে রফতানি হচ্ছে বিদেশেও।শুরুর দিকে তীব্র দাবদাহে লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও, কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।সপ্তাহের শেষের দিকে পুরোদমে বাজারে উঠতে শুরু করবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু। লিচুর রাজধানীখ্যাত পাবনা সদর, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ার বাগানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সেসব এলাকায় রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত লিচুর বাগান। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে মধুমাসের রসালো ফল লিচু। লিচুচাষিরা বলছেন, এবার বিগত দুই দশকের রেকর্ড ভেঙে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশীয় লিচু পরিপক্ক হওয়ায় গাছ থেকে পেড়ে তা বাজারে তোলা হচ্ছে। তবে লিচুর ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুরুর দিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে লিচুর ক্ষতি হয়েছে। তবে বাজারে দাম ভালো পেয়ে খুশি তারা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাবনার লিচু দেখতে সুন্দর ও খেতে রসালো হওয়ায় জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশ-বিদেশে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে বাজারে উঠতে শুরু করবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু। তবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু বাজারে আসলে দাম আরও বাড়বে। তখন দাম উঠতে পারে হাজারে ৪০০০-৪২০০ টাকা। ঈশ্বরদীর সলিমুপুরের লিচুচাষি মনিরুল ইসলাম জানান, শুরুর দিকে লিচুর ভালো মুকুল এসেছিল। তবে তীব্র দাবদাহের কারণে মুকুল ঝরে যায়। এরপর অনেকদিন অনাবৃষ্টি থাকার কারণে লিচুর আরও ক্ষতি হয়। তুলনামূলক লিচুর সাইজ এ কারণে অনেকটা ছোট হয়েছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় দাম মোটামুটি ভালো। একই এলাকার আরেক লিচুচাষি শাহজাহান আলী জানান, এখন দেশীয় লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে, আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে বোম্বাই ও চায়না জাতের লিচু বাজারে উঠবে। বাজারে এসব লিচুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লিচুর অর্ডার আসছে। আশা করা যাচ্ছে, ভালো দাম পাওয়া যাবে। ঈশ্বরদীর জয়নগর এলাকার কয়েক জন লিচুচাষি বলেন, ‘আমাদের বাগানে এবার প্রচুর পরিমাণে ভালো লিচু এসেছে। বিগত ২০ বছরেও এত ভালো লিচু আসেনি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। এদিকে ঢাকা থেকে যাওয়া লিচুর ব্যবসায়ী শামসুল হক জানান, এবছর লিচুর আকার একটু ছোট। গরমে বেশি রসালো না হওয়ার কারণে আকার ছোট হয়েছে। তবে বাজারে লিচুর পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় লস হচ্ছে না।ঢাকার ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ঈশ্বরদীর লিচু দেখতে ভালো এবং খেতেও সুস্বাদু। তাই দেশ থেকে বিদেশে রফতানি হচ্ছে পাবনার লিচু। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আসছে। পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘শুরু থেকে তীব্র গরমে লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও পরবর্তীতে সেটা ঠিক হয়ে গেছে। এখন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোন বাধা আসবে না। বিগত ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙে পাবনায় লিচুর এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলায় ৯০ ভাগ গাছেই লিচু এসেছে। আর এবছর ৪ হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। গতবছর ৩৬ হাজার মেট্রিক টন ফলন হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দু’দশকের রেকর্ড ছাড়িয়ে পাবনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন

আপডেট সময় : ১১:২৪:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

পাবনা জেলায় এ বছরে বিগত ২০ বছরে এতো লিচু ধরে নাই..!

 

মামুনুুর রহমান,ঈশ্বরদী(পাবনা) প্রতিনিধি।।

 পাবনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দুই দশকের রেকর্ড ভেঙা দেশের চাহিদা পূরণ করে রফতানি হচ্ছে বিদেশেও।শুরুর দিকে তীব্র দাবদাহে লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও, কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।সপ্তাহের শেষের দিকে পুরোদমে বাজারে উঠতে শুরু করবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু। লিচুর রাজধানীখ্যাত পাবনা সদর, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ার বাগানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সেসব এলাকায় রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত লিচুর বাগান। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে মধুমাসের রসালো ফল লিচু। লিচুচাষিরা বলছেন, এবার বিগত দুই দশকের রেকর্ড ভেঙে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশীয় লিচু পরিপক্ক হওয়ায় গাছ থেকে পেড়ে তা বাজারে তোলা হচ্ছে। তবে লিচুর ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুরুর দিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে লিচুর ক্ষতি হয়েছে। তবে বাজারে দাম ভালো পেয়ে খুশি তারা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাবনার লিচু দেখতে সুন্দর ও খেতে রসালো হওয়ায় জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশ-বিদেশে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে বাজারে উঠতে শুরু করবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু। তবে বোম্বাই, চায়নাসহ বিদেশি জাতের লিচু বাজারে আসলে দাম আরও বাড়বে। তখন দাম উঠতে পারে হাজারে ৪০০০-৪২০০ টাকা। ঈশ্বরদীর সলিমুপুরের লিচুচাষি মনিরুল ইসলাম জানান, শুরুর দিকে লিচুর ভালো মুকুল এসেছিল। তবে তীব্র দাবদাহের কারণে মুকুল ঝরে যায়। এরপর অনেকদিন অনাবৃষ্টি থাকার কারণে লিচুর আরও ক্ষতি হয়। তুলনামূলক লিচুর সাইজ এ কারণে অনেকটা ছোট হয়েছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় দাম মোটামুটি ভালো। একই এলাকার আরেক লিচুচাষি শাহজাহান আলী জানান, এখন দেশীয় লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে, আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে বোম্বাই ও চায়না জাতের লিচু বাজারে উঠবে। বাজারে এসব লিচুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লিচুর অর্ডার আসছে। আশা করা যাচ্ছে, ভালো দাম পাওয়া যাবে। ঈশ্বরদীর জয়নগর এলাকার কয়েক জন লিচুচাষি বলেন, ‘আমাদের বাগানে এবার প্রচুর পরিমাণে ভালো লিচু এসেছে। বিগত ২০ বছরেও এত ভালো লিচু আসেনি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। এদিকে ঢাকা থেকে যাওয়া লিচুর ব্যবসায়ী শামসুল হক জানান, এবছর লিচুর আকার একটু ছোট। গরমে বেশি রসালো না হওয়ার কারণে আকার ছোট হয়েছে। তবে বাজারে লিচুর পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় লস হচ্ছে না।ঢাকার ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ঈশ্বরদীর লিচু দেখতে ভালো এবং খেতেও সুস্বাদু। তাই দেশ থেকে বিদেশে রফতানি হচ্ছে পাবনার লিচু। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আসছে। পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘শুরু থেকে তীব্র গরমে লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও পরবর্তীতে সেটা ঠিক হয়ে গেছে। এখন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোন বাধা আসবে না। বিগত ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙে পাবনায় লিচুর এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলায় ৯০ ভাগ গাছেই লিচু এসেছে। আর এবছর ৪ হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। গতবছর ৩৬ হাজার মেট্রিক টন ফলন হয়।