নারয়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক তিনবারের সাংসদ ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম।
গত ১৮ ডিসেম্বরের তারিখ সম্বলিক ওই চিঠি বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনুসারীরা প্রকাশ করেন।প্রচারিত ওই চিঠিতে সদর-বন্দর নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটিতে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আবুল কালামের নাম উল্লেখ রয়েছে।
সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরও দেখা গেছে। তবে এ চিঠি বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছি কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত নন অপর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
তাছাড়া, এই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটিতে গত ৩ নভেম্বর দলের মহাসচিব প্রেস ব্রিফিং এ-র মাধ্যমে মাসুদুজ্জামানের নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনেরও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দল থেকে আসেনি।
এদিকে, মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন দাবি করার পর আবুল কালাম তার অনুসারীদের নিয়ে বন্দরের নবীগঞ্জের কদম রসূল দরগাতে যান। সেখানে তিনি দরগা জিয়ারত ও দোয়া করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ আসনে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল। তারা একে অপরকে আলিঙ্গণও করেন এবং বাবুলকে কালামের পাশে বেশ হাস্যোজ্বল অবস্থা দেখা গেছে।
তবে, মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার বিষয়টিতে নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে দল থেকে ঘোষিত ধানের শীষের প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। এদিকে এই প্রার্থী বলেন, দল এখনো কোনো প্রার্থী পরিবর্তন করেনি। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী তিনিই এ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত। তিনি নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, এ-র আগে গত শনিবার আবুল কালামের মতো একই দাবি করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনিও বলেন, তাকে দল ডেকে নিয়ে আসনটিতে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায়তে বেশ সোরগোল দেখা গেছে। এ নিয়ে তাকে গত ২০ ডিসেম্বর অন্যান্য প্রার্থীদের সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রথম দফায় সারাদেশে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী তালিকার নাম প্রকাশের সময় রাজধানীর পাশের এই আসনটিতে মাসুদুজ্জামানের নাম ঘোষণা করে দল। এরপর দুই নেতা নিজেদের মনোনীত প্রার্থী দাবি করলেও দল আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেননি। এ নিয়ে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের মধ্যেও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
এ-র পরবর্তীতে সাখাওয়াতের দাবির পরে এই বিভ্রান্তি শুরু হলেও, কালামের দাবি তাদের আরও দ্বিধান্বিত করে তুলেছে। তিন নেতার পক্ষে বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন নেতা-কর্মীরা।
কালামের মনোনয়ন পাওয়ার দাবির পর যোগাযোগ করা হলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, “কে ফাইনাল এইটা সেন্ট্রালই জানে। সেন্ট্রাল থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তখনই আসনটিতে কে চূড়ান্ত প্রার্থী হবেন তা সবাই জানতে পারবে।
অপরদিকে, বিষয়টি নিয়ে নিজ ফেসবুক লাইভে এসে কথাও বলেছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তিনি বলেন, প্রথমে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তারপর দেখা যায় মাসুদুজ্জামান নিজ থেকে নির্বাচন না করার অপারগতা প্রকাশ করায় পরবর্তীতে ২০ ডিসেম্বর দল সাখাওয়াত হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে। আবার দেখলাম আজকে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সাহেবকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এত দলের নেতাকর্মী ও জনসাধারনের মধ্যে বিভ্রন্তি ছড়াচ্ছে। এতদিন যেহেতু আপনারা অপেক্ষা করেছেন আজকে আগামীকাল ও ২৬ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, অবশ্যই দল যাকে চুড়ান্ত মনোনয়ন দিবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।
এড. টিপু আরও বলেন, দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করবো কেউ বিভ্রান্ত হবেন না”।
