ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি।।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে দুই যুবকের ওপর নির্মম হামলা, টাকা ছিনতাই ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন দামোদরপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রনজু মিয়া।
রবিবার (২ নভেম্বর ) দুপুরে সাদুল্লাপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মোজাম্মেল হক (২২) ও একরামুল হক জিতু (৩১)।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেন। তিনি বলেন, "পতিত আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান বিএনপি নেতা রনজু মিয়া এবং তার ভাই আঙ্গুর মিয়া, রাখু মিয়া, মঞ্জু মিয়া, সঞ্জু মিয়া ও মন্টু মিয়াসহ অনেকে আমার বাবা ছকু মিয়াকে হত্যা করেছেন। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তারা আমাকে নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।"
মোজাম্মেল তার বক্তব্যে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলেন, "গত ২৪ অক্টোবর জামুডাঙ্গা এলাকায় আমাকে একা পেয়ে রনজু মিয়া ও তার দলবল লাঠি দিয়ে আমাকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালান। এই ঘটনায় আমি ইতিমধ্যে থানায় মামলা করেছি। এরপর থেকে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন এবং আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।"
অন্যদিকে, একরামুল হক জিতু তার বক্তব্যে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "গত ১৯ অক্টোবর কামারপাড়া বাজারে আমার দোকানে যাওয়ার পথে রনজু মিয়া ও আবুল কাশেম আমাকে পথরোধ করে মারধর করেন, আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন এবং আমার ব্যাগ থেকে ২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।"
জিতু তার বক্তব্যে রনজু মিয়ার রাজনৈতিক রূপান্তর নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, "রনজু মিয়াসহ তার ভাইয়েরা একসময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন, এখন তিনি বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি। তারা দলের প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে খুন করাসহ নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।"
এ ঘটনায় দামোদরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খয়বার হোসেন রাজা বলেন, "রনজু মিয়া বর্তমানে আমাদের ওয়ার্ড সভাপতি। তিনি আগে আওয়ামী লীগের ছিলেন কিনা, তা আমি জানি না। তবে আমাদের দলের কোনো সদস্য দলের প্রভাব খাটিয়ে অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ভুক্তভোগী পক্ষ সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাগুলোর তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতাবলে এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে, না হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনা নিয়ে দামোদরপুর ইউনিয়নে তীব্র অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।