প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ৯, ২০২৫, ৩:৫২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ৮, ২০২৫, ৪:৫০ পি.এম

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়।।
দূর্গা পূজার পর বিসর্জনের ঢাক বাজতেই ভক্তদের মনে বিষাদের ছায়া নেমে আসে। বেদনা বিধুর মনে স্বস্তির আনন্দ নিয়ে আসে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো।
দুর্গাপুজোর শেষেই এবার সামনে এলো লক্ষ্মী পুজো। শারদ পূর্ণিমার এই লক্ষ্মী পুজো কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো নামে প্রচলিত।
ধনলক্ষ্মী থেকে বিজয়লক্ষ্মী। মা লক্ষ্মীর ৮ রূপের কথা বলা হয়েছে। পুরাণ অনুসারে দেবী লক্ষ্মীর আটটি ভিন্ন ভিন্ন রূপ আছে। বিভিন্ন কারণে এই আট রূপের পুজো করা হয়। কোন লাভ পেতে লক্ষ্মীদেবীর কোন রূপের পুজো করবেন তা জেনে রাখা ভালো ।
প্রতিটি ব্যক্তি জীবনে সুখ-সম্পদের কামনা করে থাকে। ধন-সম্পদ লাভের জন্য তাঁরা যথাসাধ্য পরিশ্রমও করেন। আবার হিন্দু ধর্ম মতে লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী। তাই পরিশ্রমের পাশাপাশি লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করে ধন বৃদ্ধির চেষ্টা করেন অধিকাংশ ব্যক্তি। তবে সনাতন ধর্ম অনুযায়ী লক্ষ্মীর একটি নয় বরং ৮টি স্বরূপ রয়েছে এবং এই আটটি স্বরূপের পুজোর পৃথক পৃথক ফল লাভ করা যায়। লক্ষ্মীর আটটি স্বরূপের পুজো করলে ব্যক্তি তেজ, বল, সাহস, সৌন্দর্য এবং সমস্ত ধরনের সুখ লাভ করে। লক্ষ্মীর কোন স্বরূপের পুজো করলে কোন সমস্যার সমাধান হয় সেটি জানা দরকার
আদিলক্ষ্মী: এটি লক্ষ্মীর প্রথম স্বরূপ।
তাঁর পুজো করলে সমস্ত ধরনের সুখ-সম্পদ লাভ করা যায়।
ধন লক্ষ্মী: ধনের দেবী।ধনের দেবী লক্ষ্মীর পুজো করলে সাধকের জীবনের সমস্ত ধরনের আর্থিক সমস্যার সমাধান হয়। তাঁর বাড়িতে কখনও অর্থাভাব থাকে না। লক্ষ্মী প্রসন্ন হলে নানান উৎস থেকে আয় হয়।
ঐশ্বর্য লক্ষ্মী: ঐশ্বর্য লাভের জন্য এই পূজা করা হয়।এই পুজোয় মায়ের আশীর্বাদ ধন্য মানুষ
সমাজে প্রচুর মান-সম্মান পেয়ে থাকেন। তাই সমাজে মান-সম্মান লাভের ইচ্ছা থাকলে লক্ষ্মীর এই স্বরূপের পুজো করা উচিত।
সন্তান লক্ষ্মী :সন্তান লাভের আশায় এই পুজো করা হলে সন্তান লাভ করা যায়। নিঃসন্তান দম্পতিদের ধন-ধান্যের দেবী লক্ষ্মীর এই স্বরূপের পুজো করতে পারেন।
ধান্য লক্ষ্মী: এই পুজো করলে আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তির অন্নের সংকট থাকে না। মা লক্ষ্মীও ঘরে বিরাজ করেন।
গজ লক্ষ্মী : পুরাণে বর্ণিত হয়েছে শাসন ক্ষমতা, সরকারে উচ্চাসনে অধিষ্ঠান ,নেতা,মন্ত্রী ইত্যাদি সমস্ত ধরনের সুখের কামনা করলে , গজের ওপর অধিষ্ঠিত লক্ষ্মীর আরাধনা করা উচিত। কৃষি জমির মালিকরা এই পুজো করলে জমিতে ভালো ফসল উৎপন্ন হয়ে থাকে ।
বীর লক্ষ্মী : অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে হলে বীর লক্ষ্মীর পুজো করা উচিত। এই পুজো করে মায়ের আশীর্বাদ পেলে আত্নবল ও সাহস বৃদ্ধি পায়।
বিজয় লক্ষ্মী : বিজয় লক্ষ্মীর পুজোর ফলে যে কোনও ক্ষেত্রে জয় লাভ করা যায়। সবসময় শত্রু ভয় থাকলে বিজয় লক্ষ্মীর পুজো করা উচিত। তাঁর আশীর্বাদে শত্রু স্বয়ং পরাজয় স্বীকার করবে।
মা দুর্গার বিসর্জন তথা বিজয়ার মনখারাপ খানিকটা কাটে কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায়। আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়। বাঙালি হিন্দুদের ঘরে একদম ছোট করে হলেও আরাধনা করা হয় মা লক্ষ্মীর। শাস্ত্রমতে লক্ষ্মী হলেন ধনসম্পদের দেবী। তাই তাঁকে তুষ্ট রাখতেই সাধ্যমতো পুজোর আয়োজন করেন গৃহস্থেরা। বাংলার প্রায় সব বাড়িতেই প্রতি বৃহস্পতিবার নিয়ম করে লক্ষ্মীর পুজো হয়। এছাড়াও অনেক বাড়িতেই দীপাবলিতে লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। পৌষ সংক্রান্তি, চৈত্র সংক্রান্তি এরকম বিশেষ কিছু তিথিতেও লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। কোথাও ঘটে, কোথাও পটে, কোথাও আবার মূর্তি এনে পুজো হয়।
পুজো যেভাবেই হোক না কেন, লক্ষ্মীপুজোয় কতগুলি বিষয়ে সতর্কতা পালন করা দরকার এই ভুলগুলি কখনোই করা যাবে না
মা লক্ষ্মীকে কখনও ভুলেও সাদা রঙের ফুল দিয়ে পুজো করবেন না। সাদা রং ছাড়া লাল, হলুদ বা গোলাপি রঙের ফুল লক্ষ্মী পুজোয় ব্যবহার করা যাবে।
লক্ষ্মী পুজোয় তুলসি পাতা ব্যবহার করা যাবে না। পুরাণ অনুসারে, তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার বিবাহ হয়। শালগ্রাম শিলা নারায়ণের প্রতিভূ। যেহেতু শ্রীলক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী, তাই এই পুজোয় তুলসির ব্যবহার চলে না।
মা লক্ষ্মীর পুজোয় সাদা ফুল যেমন ব্যবহার করা যায় না, তেমনই আসনে সাদা বা কালো কাপড় পাতার নিয়ম নেই। ব্যবহার করা যেতে পারে লাল, গোলাপি প্রভৃতি রঙের কাপড়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে পুজোর আসনে সাদা বা কালো রঙের কাপড়ের ব্যবহারে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন।
লক্ষ্মী পুজোয় তোলা চাল থেকে অন্য কাউকে চাল দিতে নেই।
পুজোর পর মন্দির বা ঠাকুর ঘরের দক্ষিণমুখে প্রসাদ অর্পণ করার কথা বলে থাকেন অনেকে। লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদে না বলতে নেই। অল্প হলেও মুখে তুলতে হয়।
ঢাক - ঢোল- কাঁসর ঘণ্টা লক্ষ্মীপুজোয় সম্পূর্ন রূপে নিষিদ্ধ। অত্যধিক শব্দ পছন্দ করেন না শান্তস্বভাবা শ্রীলক্ষ্মী। সব পুজোতেই বাদ্যি বাজানো হয়। কিন্তু দেবী লক্ষ্মীর পুজোয় কাঁসর ঘণ্টা বাজালে দেবীর ক্ষুব্ধ হয়ে সেই গৃহ ত্যাগ করেন বলে মনে করা হয়।
লক্ষ্মীপুজো করার সময় কোনওভাবেই কালো পোশাক পরা যাবে না।
মনে করা হয়, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো যে বাড়িতে করা হয় সেই গৃহে মা লক্ষ্মী স্থির থাকেন। গৃহে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি বজায় থাকে। কোজাগরী লক্ষ্মী দেবীর পুজো করলে ধনসম্পত্তি অক্ষয় হয়।
লক্ষ্মী পুজো মানেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। ভালো করে ঘর ধুয়ে মুছে আলপনা দিয়েই তবেই পুজোর আয়োজন হয়। আর প্রসাদের মধ্যে অবশ্যই থাকবে বাড়ির তৈরি নাড়ু, মুড়কি, মোয়া।
Chief Adviser-...
Adviser- Mohammad Kamrul Islam,
Editor & publisher- Mohammad Islam.
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212, Corporate office:-B.B Road ,Chasara,
Narayanganj-1400,✆-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000126.
web:www.samakalinkagoj.com. News-samakalinkagoj@gmail.com, advertisements-ads.samakalinkagoj@gmail.com,
✆+8801754-605090(Editor).সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ◑ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭, All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ।
Copyright © 2025 Samakalin Kagoj. All rights reserved.