প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১৫, ২০২৫, ৩:১৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ১৪, ২০২৫, ৪:০০ এ.এম
শেরপুরে দুই’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী ব্যতিক্রমী মাছের মেলা
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর জুড়ে শুরু হয়েছে প্রায় ২শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। গত রোববার সন্ধ্যা থেকেই জেলার সদর উপজেলার কুশিয়ারার তীর জুড়ে বসেছে মাছের কয়েক শতাধিক দোকান। এখানে পাওয়া যায় ছোট-বড় নানা প্রজাতির দেশীয় মিঠা পানির মাছ। নদী ও হাওর থেকে সংগৃহীত হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা দামেরও মাছ বিক্রি হচ্ছে মেলা জুড়ে প্রতিটি দোকানে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এটি বড় পরিসরে সিলেট বিভাগের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। তাই মেলাকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই। মেলায় উঠেছে নানা জাতের বিশাল মাছ। এমন অদেখা বড় মাছ দেখতে আর কিনতে দর্শক-ক্রেতার কমতি নেই। মূলত ওখানে দু’রাত আর দু’দিনই ধুম পড়ে মাছ কেনা-বেচার হাট। মেলায় বিক্রি হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার মাছ। আর সমাগম ঘটে দেশের নানা প্রান্তের ভোজনবিলাসী লক্ষাধিক মানুষের। এমন তথ্য মেলায় মাছ বিক্রেতা (আড়তদার) ও স্থানীয় মানুষের সূত্রে।
জানা যায়, ঐতিহ্যের টানে এ মেলা এখনো স্থানীয়রা ধরে রেখেছেন। তাই প্রতিবছরই পৌষ মাসের শেষের দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের পাশে শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীরে এই মাছের মেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন মেলার নির্ধারিত স্থানে নির্দিষ্ট সময়ের এক/দু’দিন আগে থেকেই জমে উঠে ইমিটেশন, খেলনা, গৃহস্তালীর প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্রের দোকান। আর বাদ যায়নি মুড়ি-মুড়কি আর মণ্ডা-মিঠাইসহ কতোকি মুখরোচক খাবার-দাবারের আয়োজন। মেলাস্থ শেরপুর হলো মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার একেবারেই শেষ ভাগে। পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ উপজেলা উত্তরে কুশিয়ারা নদী। নদী পেরুলেই সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলা। হবিগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজার এই তিনটি জেলার মোহনা হলো শেরপুর। মৎস্য ব্যবসায়ী আর স্থানীয়দের জোর দাবি এটিই দেশের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা। মেলাটি মাছের মেলা হলেও মাছ ছাড়া বিভিন্ন দ্রব্যের সহস্রাধিক দোকানও বসে কুশিয়ারা নদীর তীর জুড়ে। মেলায় বেত, বাঁশ, কাঠ, লোহা ও মাটির তৈরি নানা রকম পণ্য, শিশুদের খেলনা, সবজি-আনাজ অনেক ধরনের লোকজ পণ্য, ফার্নিচার, কৃষি পণ্য, গৃহস্থালী সামগ্রী, নানা জাতের দেশীয় খাবারের দোকানসহ থাকে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নানা রং ঢং আর প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পসরার দোকান। মেলায় ওঠে সিলেটের স্থানীয় বিভিন্ন হাওর ও নদীর মাছ। কুশিয়ারা, সুরমা ও মনু নদী, হাকালুকি, কাওয়াদীঘি, হাইল ও টাঙ্গুয়ার হাওর ছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা বাঘাআইড়, রুই, কাতলা, মৃগেল, চিতল, বোয়াল, গজার, আইড়সহ নানা জাতের দেশীয় প্রজাতির বড় বড় মাছ নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন। আছে ছোট মাছেরও দোকান। ছোট-বড় সকল মাছই উঠেছে মেলায়। এ বছর মেলায় প্রচুর মাছ উঠলেও দাম একটু বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
তবে মাছ বিক্রেতারা জানালেন নানা কারণে স্থানীয় নদী ও হাওরে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তারপরও তারা মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে নানা কষ্ঠে বাড়তি দাম দিয়ে মাছ সংগ্রহ করেছেন। এজন্য দাম একটু বেশি। তারপরও তারা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই দাম হাঁকাছেন। ক্রেতারা জানান, বাজারে প্রচুর মাছ উঠলেও বিক্রেতারা দাম চাইছেন বেশি। তারপরও একসঙ্গে পছন্দের বড় আকারের এত মাছ পেয়ে তারা খুশি। কারণ এ মেলায় স্থানীয় হাওর ও নদীর মাছ থাকায় অনেক বড় মাছই থাকে জীবিত আর ফরমালিন মুক্ত। মিঠাপানির পোক্ত এ মাছগুলো খেতেও সুস্বাদু। কারণ এ মাছগুলো মেলা ছাড়া তারা সংগ্রহ করতে পারেন না।
স্থানীয়রা জানান, মেলা উপলক্ষে প্রবাসী অধ্যুষিত এ অঞ্চলের শেরপুর, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ আশপাশের সৌখিন অনেক প্রবাসী দেশে আসেন। তাছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে আত্মীয়স্বজনরাও আসেন তাদের বাড়িতে। নানা স্বাদের মাছ আর নানা জাতের পিঠা তৈরিতে উৎসবের আমেজে জমে ওঠে পুরো এ অঞ্চল। জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর মাছের মেলায় যাতে কোনো ধরনের অশ্লীতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা না হয় সে জন্য তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এখন আর আগের মতো মাছের মেলাতে প্রকাশ্যে জুয়া, পুতুল নাচ, অশ্লীল নৃত্য ও যাত্রা না থাকায় খুশি পুরো জেলাবাসী। তবে মেলার ইজারাদার ও আয়োজকদের দাবি মেলার জন্য নির্দিষ্ট একটি স্থান প্রানের দাবি।
(Editor & Publisher)
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2025 Samakalin Kagoj. All rights reserved.