প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৪, ২০২৫, ৬:৪৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ১৮, ২০২৫, ৫:২৬ পি.এম
ক্যাপসিকাম চাষে এক দল কৃষকের ভাগ্য বদলের চেষ্টা

হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উচ্চফলনশীল সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নানা বয়সি অন্তত ৩০ জন কৃষক।
চলতি মৌসুমে ওই ইউনিয়নের নিয়ামতবাড়িয়া গ্রামের মাঠপাড়া এলাকায় প্রায় দশ বিঘা (৩৩ শতকে বিঘা) জমিতে ‘ইন্দ্রা গোল্ড’ জাতের বিদেশি এ সবজি চাষ করেছেন। গত এক সপ্তাহে ১৫০-২০০ টাকা দরে প্রায় দুই হাজার কেজি ক্যাপসিকাম প্রায় তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ক্যাপসিকাম চাষ থেকে চলতি মৌসুমে খরচ বাদে প্রায় ১৪ লক্ষাধিক টাকা মুনাফা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। গাছে ভাল ফল ধরায় এবং লাভজনক চাষ হওয়ায় অন্য কৃষকরা ক্যাপসিকাম চাষে স্বপ্ন বুনছেন। কৃষক লিখন আলীর ভাষ্য, জমির ইজারা, চারা, সার, পরিচর্চাসহ দশ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষে তাদের খরচ হয়েছে প্রায় দশ লাখ টাকা। গত সাতদিনে প্রায় দুই হাজার কেজি ক্যাপসিকাম তুলেছেন। প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম পাইকারি ১৫০ -২০০ টাকা করে তিন লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। জমিতে যে পরিমাণ ক্যাপসিকাম হচ্ছে তাতে উৎপাদন আগামী দুই মাসে আরও প্রায় ১৪ হাজার কেজির প্রত্যাশা করছেন। এতে অনায়াসেই ২১ থেকে ২২ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী। জানা গেছে, চাঁদপুর ইউনিয়নে জংগলী আধুনিক কৃষি সমবায় সমিতি নামে কৃষকদের একটি সংগঠন রয়েছে। সমিতির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন খসরু ২০২৪ সালে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেন। সেবছর এ চাষে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি প্রায় চার লাখ টাকা মুনাফা পান। এতে ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহ বাড়ায় সমিতির অন্যান্য সদস্যরাও। তাদের মধ্যে ৩০ জন নানা বয়সি শিক্ষিত, অল্প শিক্ষিত ও অশিক্ষিত কৃষক যশোর অঞ্চলের টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় নিয়ামতবাড়িয়া মাঠপাড়া এলাকায় দশ বিঘা জমিতে নিরাপদ উচ্চফলনশীল সবজি ‘ইন্দ্রা গোল্ড’ জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করেন। ১২০ দিন জীবনকালের এ সবজির চারা রোপনের ৬০ দিনের মাথায় ফল দেওয়া শুরু হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাকা সড়ক ঘেঁষে নিয়ামতবাড়িয়া মাঠপাড়া এলাকা। সেখানে চারদিকে জাল দিয়ে ঘিরে মালচিং পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়েছে। সবুজ গাছে ঝুলছে ফল। ৪-৫ জন করে কৃষকরা দল বেঁধে কেউ গাছ থেকে ফল তুলছেন, কেউ পরিষ্কার করছেন। কেউবা আবার আধুনিক যন্ত্রে পরিমাপ করে প্যাকেট করছেন বাজারে নেওয়ার জন্য। এসময় ষাটোর্ধ্ব কৃষক মুন্সী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়েছে। গাছে প্রচুর ফল দেখে খুব ভাল লাগছে। বাজারে ভাল দাম থাকায় ব্যাপক লাভের আশা করছি। ধান, পাট, পিয়াজসহ অন্যান্য চাষাবাদের পাশাপাশি এবছর ৩০ জন মিলে ক্যাপসিকাম চাষ করেছি। গেল সাতদিন ধরে ফল তুলে কুষ্টিয়া, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা ও ঢাকাতে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান কৃষক গোলাম মোস্তফা। তার ভাষ্য, ভাল ফলন হওয়ায় প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে কৃষকরা দেখতে আসেন। তাদের পরামর্শও দিচ্ছেন তারা। সমিতির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, আগামী দুই মাস ধরে ফল পাওয়া যাবে। এরপর ক্যাপসিকামের বদলে আধুনিক জাতের পেঁপের চারা রোপন করা হবে। ক্যাপসিকাম চাষ দেখতে এসেছেন নিয়ামতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রাজ্জাক বিশ্বাস। তিনি বলেন, এলাকায় প্রথমবারের মতো এ চাষ হয়েছে। ভাল ফলন ও লাভজনক হওয়ায় আগামী বছর এক বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করব। বিদেশি সবজি চাষের খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন কুষ্টিয়া ইবি থানার মৃত্তিকাপাড়া এলাকাল কৃষক আতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, গাছে রোগবালাই নেই, মালচিং পদ্ধতিতে বিষমুক্ত চাষাবাদ হয়েছে। দেখে শুনে খুব ভাল লাগছে। আগামীতে তিন বিঘা জমিতে এ চাষ করব।
জংগলী আধুনিক কৃষি সমবায় সমিতির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন খসরু বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে গত বছর দুই বিঘা জমিতে প্রথম ক্যাপসিকাম চাষ করেছিলাম। এতে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা খরচে প্রায় চার লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। আমার দেখাদেখি সমিতির অন্যান্য সদস্যদের আগ্রহ বাড়ে এ চাষে। সেজন্য এ বছর ৩০ জন মিলে ১০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। আগামী বছর ২৫ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষের পরিকল্পকনা রয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, একদল কৃষক উচ্চমূল্যের সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শ, উপকরণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকরা প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা খরচ করে ২৪ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রির স্বপ্ন বুনছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, উচ্চমূল্যের সবজি ও ফসল চাষাবাদে যশোর টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের পরামর্শ, উপকরণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
◑ Chief Adviser ☞ ◑ Adviser☞ Mohammad Kamrul Islam
◑Editor & publisher ☞ Mohammad Islam ✪Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
✪Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, ✆Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000126
◑web:www.samakalinkagoj.com. ✪For news:(Online & Print)samakalinkagojnews@gmail.com,
✪For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com✪For Editor & publisher:-editorsamakalinkagoj@gmail.com.✆Cell: +8801754-605090(Editor)☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
☞সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
◑ All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2025 Daily Samakalin Kagoj. All rights reserved.