প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১৬, ২০২৫, ৩:৩৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ১৫, ২০২৫, ৫:৩৫ পি.এম
কুষ্টিয়ায় আ’লীগ নেতার দখলে থাকা ৫০ কোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার
হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার দখলে থাকা প্রায় ৫০ কোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়েছে। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের জায়গা দখল করে সীমানাপ্রাচীর দিয়ে বিশাল ফটক নির্মাণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম। এছাড়াও গৃহায়ণের বিভিন্ন প্লট দখল করে সেখানে আইটি পার্ক, স্কুল ভবন, জেলা পরিষদের মিলনায়তন নির্মাণ করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ গুঁড়িয়ে দিয়েছে বেশ কিছু স্থাপনা। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বলছে, জায়গা দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ। এ সময় সেখানে অন্তত ৫০ জন প্লটের প্রকৃত মালিক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলছেন, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তাঁরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁদের জায়গা দখল করে নেওয়া হয়েছিল। ক্ষমতার দাপটে আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁদের বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে এসব জমি দখল করে সরকারি স্থাপনা করার উদ্যোগ নেন। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন তাদের হাউজিং এলাকায় সাড়ে ১৯ একর জায়গা আছে। এসব জায়গা ২০১৮ সালের আগে লটারি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। আড়াই কাঠা, তিন কাঠা ও পাঁচ কাঠার প্লট রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২১২টি প্লট রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের দিকে জেলা প্রশাসন এসব জমি অধিগ্রহণের নামে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়। এদিকে প্লট বরাদ্দ পেয়ে অনেকে তাঁদের জমি নিবন্ধনও করে নেন। প্লটমালিকেরা তাঁদের জমি আর বুঝে পাননি। জানা গেছে, ২০১৮ সালে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন ১৯ দশমিক ৫ একর জমি লটারির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বরাদ্দ দেয় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। ১৭৩ জন এ জমি বরাদ্দ পান। তাদের অনেকেই জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের সহায়তায় ওই জমিতে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। হানিফের ডান হাত হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী এ নেতা বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের জমি বুঝিয়ে না দিয়ে সরকারি অর্থে সেখানে মসজিদ, অডিটোরিয়াম এবং আইটি পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। সেইসঙ্গে রবিউল ইসলাম ওই জমির মধ্য থেকে প্রায় দুই বিঘা জমি নিজের দখলে নেন। যে জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এঘটনায় জমি বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা আদালতে মামলা করেন। এসব মামলায় আদালত প্রকৃত মালিকদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও প্রভাবশালী রবিউল ইসলাম ও হানিফের চাপের কারণে এতদিন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সেখানে কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে বিশাল আকারের শাহি মসজিদ, এক হাজার আসনের অত্যাধুনিক জেলা পরিষদের মিলনায়তন, আইটি পার্ক। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রবিউল ইসলাম দুই বিঘা জমি দখল করে নেন। সেই জমি সীমানাপ্রাচীর দিয়ে বিশাল ফটক নির্মাণ করেন। শাহি মসজিদের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। জেলা পরিষদের মিলনায়তনের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আইটি পার্কের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্লটমালিকেরা বলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়েও প্লট বুঝে পাচ্ছিলেন না। তাঁরা রায় পেলেও প্রভাবশালী নেতারা জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছিলেন উন্নয়ন করার নামে। উল্টো মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। ২০১৮ সালের দিকে ছয়জন প্লটমালিক তাঁদের জমি ফেরত পেতে উচ্চ আদালতে রিট করেন। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তাঁরা তাঁদের পক্ষে রায় পান।মসরেজমিন দেখা যায়, পুলিশ-র্যাবের সহযোগিতায় ম্যাজিস্ট্রেট উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলামের দখলে থাকা জমির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। এরপর জেলা পরিষদের মিলনায়তনের সামনে ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী কার্যালয়ও ভাঙা হয়। আইটি পার্কে গিয়েও উচ্ছেদ চালানো হয়। ভুক্তভোগী সাইফুল আলী বলেন, তিনি ৯ নম্বর প্লট পেয়েছিলেন। পাঁচ কাঠা জমি বরাদ্দ পেয়ে রেজিস্ট্রিও করেছিলেন। কিন্তু গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। সে সময় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন খাস দেখিয়ে এসব জমি অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু তিনিসহ ছয়জন প্লটমালিক উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর তাঁরা রায় পান। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রায় ২০ একর জায়গা নিয়ে সমস্যা আছে। আমরা সেগুলো আজ দখলমুক্ত করছি। নতুন করে নকশা করা হবে। যাঁরা রেজিস্ট্রি করেছেন, তাঁদের জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
(Editor & Publisher)
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2025 Samakalin Kagoj. All rights reserved.