প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ১০:৩৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ১১, ২০২৪, ৫:০১ এ.এম
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা প্রতিনিধি।।
সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করার পর মহালয়ার চন্ডি পাঠ শুরু হলেই কলকাতা দুর্গা পুজার উৎসবে মেতে ওঠে। শুধু পুজোই নয়, এটি বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসব। এই উৎসবে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ গ্রহন করে থাকেন।
এই উৎসব মুসলিমদের কাছে একটি মস্ত বড় আকর্ষণ। কলকাতার ফল বিক্রেতাদের ৮০ শতাংশই মুসলিম। ফুল বিক্রেতা মুসলিম , জামাকাপড় বিক্রেতার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এই সময়টিতে তারা সারা বছরের উপার্জন করে থাকেন।
জামা কাপড়ের দোকান কয়েকটি এলাকায় সম্পুর্ন মুসলিমদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সারা বছরের বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৬০ শতাংশ শুধু দুর্গা পূজার উৎসব থেকেই তাদের আসে।
মণ্ডপ সজ্জা: সারা কলকাতার যতো পুজা মন্ডপ তৈরি হয়,তার ৯০ শতাংশ শ্রমিক কর্মী মুসলিম।
মহা অষ্টমীর পর বাঙালিদের মাংস খেতেই হয়। আর এই মাংসের দোকান মুসলিমরা ছাড়া খুব কম সংখ্যক হিন্দু দেখা যায়।
মাংসের জন্য লাইন উপচে পড়ে মুসলিমদের দোকানে। কাজেই মুসলিমদের রুজি রোজগারের সবচেয়ে বড় সুযোগ এই দুর্গা পুজা, কালী পূজা ও অন্যান্য পুজার সময়। আর তাই মুসলিমরাও দুর্গা পুজা, কালী পুজাকে উৎসব বলেই মেনে থাকেন। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মুসলিমদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য তো এরই সঙ্গে জড়িত।
কলকাতার ৫ টি বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজা
ছাতুবাবু লাটুবাবু ঠাকুরবাড়ি
১৭৭০ সালে এই স্থানের দুর্গা পূজার উত্সব শুরু হয়েছিল। রাম দুলাল দে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, যার দারিদ্র্য থেকে সমৃদ্ধির অসাধারণ যাত্রা কলকাতার লোককাহিনীর অংশ হয়ে উঠেছে, তার দুই ছেলে আশুতোষ দে (দেব সরকার) এবং প্রমথ নাথ দে-এর নামে এই পূজার নামকরণ করা হয়েছে। এই ধনী ব্যবসায়ীরা উদযাপনে অতুলনীয় জাঁকজমক এবং জাঁকজমক নিয়ে এসেছিল। অনুষ্ঠান চলাকালীন, দেবী দুর্গা তার পরিচারিকা, জয়া এবং বিজয়া সহ থাকেন, যা উত্সবগুলিতে করুণা এবং শক্তির আভা যোগ করে।
ঠিকানা: ৬৭, অভেদানন্দ রোড, মানিকতলা, গিরিশ পার্ক, মানিকতলা, হেদুয়া, ওয়ার্ড নম্বর ১৬ কলকাতা
শোভাবাজার রাজবাড়ী পূজা
শোভাবাজার রাজবাড়ি কলকাতা উইকি কমন্সের অন্যতম জনপ্রিয় বনেদি দুর্গা পূজা
দুর্গাপূজা শহরের একটি বিশিষ্ট মর্যাদা ধারণ করে এবং রাজা নবকৃষ্ণ দেবের বংশধরদের দ্বারা আয়োজিত হয়, যিনি শোভাবাজার রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব রবার্ট ক্লাইভের আস্থাভাজন ছিলেন। ঐতিহাসিক গুরুত্ব হল এই যে, নবকৃষ্ণ দেব পলাশীর যুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভের বিজয়ের পর রবার্ট ক্লাইভকে তাঁর বাড়িতে সদয়ভাবে আতিথ্য করেছিলেন । আজ, সাইটটি অসংখ্য দর্শকদের আকর্ষণ করে যারা দুর্গাপূজা উদযাপনের দিনগুলিতে উদ্ভূত ঐতিহ্যবাহী আচার এবং আচারগুলি দেখতে আসে। রাজবাড়িতে পৈতৃক স্টাইলাইজড ঠাকুর দালানকে ঘিরে উৎসবের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । একই প্ল্যাটফর্মে একক পটভূমিতে দেবী দুর্গা এবং তার সন্তানদের আকর্ষণীয় প্রদর্শন উদযাপনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ী পূজা:
ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ি : , ১৮৫৫ সালে দাওয়ারাকা নাথ দত্ত দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, কলকাতার বনেদি বাড়ী দুর্গা পূজা পরিক্রমায় একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। ঠনঠানিয়ার দত্তদের "হরা গৌরী" পূজা করার একটি অনন্য ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে পূজা একসঙ্গে দুর্গা ও শিবকে পূজা করে। এই পূজাটি ধুনো পোরানো আচারের জন্য পরিচিত , যেখানে বিবাহিত মহিলারা তাদের পরিবারের মঙ্গল কামনায় দেবীর কাছে প্রার্থনা করার সময় তাদের মাথায় এবং হাতের তালুতে জ্বলন্ত কয়লাযুক্ত মাটির প্লেট রাখে।
জোড়াসাঁকো শিব কৃষ্ণ দাও বারি পূজা
জোড়াসাঁকোর দাসরা ১৮৫৯ সাল থেকে তাদের ঠাকুর দালানে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। এই উৎসবটি প্রাথমিকভাবে ১৮৪০ সালে শিবকৃষ্ণ দা'র পিতা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু তার ছেলের নেতৃত্বে এটি প্রাধান্য লাভ করেছিল, যারা উৎসবে জাঁকজমক যোগ করেছিল। এখানকার দেবী মূর্তিটি সোনার অলঙ্কারের চমৎকার সংগ্রহের জন্য বিখ্যাত। বনেদি বাড়ীর চলচিত্র সুন্দরভাবে কারুকাজ করা হয়েছে এবং দেবীর অস্ত্রগুলি পিতলের তৈরি। মজার বিষয় হল, চমৎকার পৈতৃক প্রাসাদটি, এটির স্তম্ভ বিশিষ্ট হল এবং অত্যধিক ঝুলন্ত বারান্দার জন্য পরিচিত, এটি অসংখ্য চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য একটি পছন্দের স্থান হয়েছে।
ঠিকানা: ১২ শিব কৃষ্ণ দা এলএন, রাজা কাটরা, সিংঘিবাগান, জোড়াসাঁকো, কলকাতা
মল্লিক বাড়ির পূজা
বনেদি বাড়ি পূজা দক্ষিণ কলকাতার একটি পাড়া ভবানীপুরে অনুষ্ঠিত হয়। এটি বাংলা চলচ্চিত্রের একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব রঞ্জিত মল্লিকের বাসভবনে আয়োজিত হয় এবং ১৯২৫ সাল থেকে এটি একটি ঐতিহ্য। রঞ্জিত মল্লিকের কন্যা, কোয়েল, যিনি টলিউডের একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রী, প্রতি বছর উত্সবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পূজা বৈষ্ণব পূজা পদ্ধতি অনুসরণ করে ।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে পূজার তেমন জলুষ নেই।মানুষের মধ্যে উৎসাহে ভাটা পড়েছে। মাত্র দু মাসের মধ্যে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের মর্মান্তিক গণ ধর্ষণ ও হত্যার কিছুদিনের মধ্যেই আরো চারটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সারা কলকাতা,পশ্চিমবঙ্গ,ভারত এমনকি বিশ্ব উত্তাল হয়ে উঠেছে। জুনিয়র চিকিৎসকেরা দুমাস ধরে তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রকৃত প্রভাবশালী অপরাধীদের আড়াল করতে সরকার দেশের শীর্ষ আদালতে ২১ জন দেশের শীর্ষ আইনজীবীকে নিয়োগ করেছে। ফলে প্রতিবাদ ,আন্দোলন আরো তীব্রতর হচ্ছে। এর অনেকটাই প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে জনগণের মধ্যে।তাই পুজা অনেকটাই এবার ঢিমে তালে হচ্ছে। এক মুসলিম ব্যাপারী জানালেন, তিনি প্রতিবছর দশটি পুজা প্যান্ডেলে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার ফল,ফুল, সবজি, শ্রমিক সরবরাহ করেন,কিন্তু এবারে অগ্নিমূল্যের বাজারেও মাত্র ২৩ লক্ষ টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
(Editor & Publisher-Islam)
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.