প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ৫:৩১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ৬:৫৪ পি.এম
২২ বছরেও শেষ হয়নি উপজেলা পরিষদের মার্কেট নির্মান কাজ
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা,অনিয়ম ও নানা দুর্নীতির কারণে গ্রহিতাদের প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পত্তির দ্বিতলা মর্ডান মার্কেটটি ভগ্ন-বিধ্বস্ত-পরিত্যাক্ত, গণসৌচাগার ও মাদক সেবনকারীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।এক বছরের চুক্তিতে বিগত ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে শ্রীনগর উপজেলায় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব জমিতে নির্মাণ কাজ শুরু করেন।কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এক বছরের মধ্যে মার্কেটের পুরো কাজ শেষ করেননি।অভিযোগ উঠেছে,মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের দুই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও ঠিকাদারের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণের বিনিময়ে ঠিকাদারকে অসংখ্য বার মার্কেট নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধি করে দেন।নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধি করা হলেও রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ ২২ বছরেও সম্পন্ন হয়নি মার্কেটের নির্মাণ কাজ।মার্কেটের যতটুকু কাজ করা হয়েছে তাও দুর্নীতিবাজ দুই কর্মকর্তার নানা অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতায় বর্তমানে অযত্ন-অবহেলায় ভগ্ন-পরিত্যাক্ত গণসৌচাগারে রূপান্তরিত হয়েছে ১৩৬ জন গ্রহীতার সখের মর্ডান মার্কেটটি। এদিকে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ না হওয়ায় গ্রহীতাদের কাছ থেকে দোকান ভাড়া আদায় করা যাচ্ছে না।ফলে মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ বিশাল অঙ্কের টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,শ্রীনগর উপজেলায় ডাক বাংলার পাশের সড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের দ্বিতল ‘মর্ডান মার্কেটের করুণ দশা।মার্কেটের নীচু তলার কিছু সংখ্যক দোকান পরিপাটি ও ব্যবসা বাণিজ্য চলছে।এছাড়া মার্কেটের ৬০ ভাগ দোকানের পলেস্তার খসে গেছে, ইট সুরকি ও থাম ভেঙ্গে পড়েছে।দ্বিতীয় তলায় এর চেয়ে নাজুক অবস্থা।বারান্দা জুড়ে বৃষ্টির পানি জমে আছে দীর্ঘ বছর।মার্কেটের কোথাও একটি রেলিং নেই।দুই পাশের দোকান ঘরের একটিরও সার্টার দরজা নেই।বেশির ভাগ সার্টার ছাড়া থাকায় স্থানীয়রা দোকান ঘরগুলোকে নিজেদের গণসৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত করে তুলেছে।এছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে মাদক সেবনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।মার্কেটটির সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না জানতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহীতা মো:কার্জন মিয়া বলেন,ঠিকাদার আর মার্কেটের দেখা শুনার দায়িত্বরত জেলা পরিষদের দুই কর্মকর্তার দুর্নীতি, গাফলতি,নানা অনিয়মের কারণে মর্ডান মার্কেটের প্রায় ১০০ দোকান ব্যবহারযোগ্য হচ্ছে না। অব্যবহারযোগ্য পড়ে রয়েছে।কারণ দোকান গুলোর সার্টার নেই, পলেস্তর করা নেই,ভেঙ্গে পড়ছে ইট সুরকি!বৃষ্টি হলে পানি চুঁইয়ে পড়ছে, পানি জমে থাকে,ভেঙ্গে যাচ্ছে পিলার।জেলা পরিষদের মার্কেটটি খুব নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে।এক কথায় আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।কার্জন মিয়া দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন,এই মার্কেটে আমার দুটি দোকান রয়েছে।ভাড়া দিয়েছি কিন্তু ভাড়া তুলতে পারিনা।অন্যদিকে মো:স্বপন নামে আরেক গ্রহীতা বলেন,মার্কেটের নিচতলায় আমার দু’টি দোকান। জেলা পরিষদকে প্রতিমাসে জমিদারি খাজনা পরিশোধ করছি। ১৩ শ’৫০ টাকা।অথচ দোকানের পলেস্তার,ইট সুরকি খসে পড়ছে!আমরা ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছিনা।তিনি অভিযোগ করে বলেন,মার্কেটের নির্মাণ কাজে নানা অনিয়ম করা হয়েছে।এখনো সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা হয়নি।সংশ্লিষ্ট সৃত্রে জানা গেছে,মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা ডাকবাংলোর পশ্চিমে দ্বিতল মার্কেট নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ মুন্সীগঞ্জ ২০০২ সালে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছিলো।কার্যাদেশ মোতাবেক বর্ণিত মার্কেট নির্মাণ সমাপ্তির তারিখ ছিল ২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে।অথচ আজও মার্কেট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি।ওই মার্কেট নির্মাণের নথি ব্যবস্থাপনা কাজে নিয়োজিত রয়েছেন জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী শাহানাজ বেগম।নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও ঠিকাদার হতে উৎকোচ গ্রহণের বিনিময়ে শাহানাজ বেগম ঠিকাদারকে অসংখ্য বার মার্কেট নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধি করেছেন।এদিকে সৃত্রটি আরো জানান, মার্কেট নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক (হিসাবরক্ষক) কর্মকর্তা আকরাম আলী হালদার।বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন।জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ঠিকাদার কর্তৃক জমাকৃত ১৬ লাখ টাকা জামানতের মধ্যে ৮ লাখ টাকা ফেরত প্রদান করেছেন।যা মার্কেট নির্মাণ সংক্রান্ত শর্ত পরিপন্থি। এছাড়াও আকরাম আলী হালদার ও শাহানাজ বেগম দম্পতির দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে মার্কেটের নির্মাণ কাজ আজও সম্পন্ন হয়নি।ফলে মার্কেটের দোকান বরাদ্দ গ্রহীতারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং জেলা পরিষদ বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে মার্কেটের বিভিন্ন দেয়াল ও অংশবিশেষ ভেঙ্গে পড়েছে।মার্কেট ভবনটি অযত্নে অবহেলায় ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে।এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন,দীর্ঘ বছর যাবৎ মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ জিম্মি হয়ে আছে আকরাম আলী হালদার ও শাহানাজ দম্পতির হাতে।একটি পরিবারের ৪ জন সদস্য মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদে চাকুরি করে লুটতরাজ করে যাচ্ছে অথচ দেখার কেউ নেই। অভিযুক্ত মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসনিক হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা মো:আকরাম আলী হায়দার তার বিরুদ্ধে উঠা নানা অভিযোগ সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এখন চাকরিতে নেই।গত মার্চে অবসরে গেছি।শ্রীনগর উপজেলায় জেলা পরিষদের মর্ডান মার্কেটের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।অপর অভিযুক্ত জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী শাহানাজ বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আবুল হুসাইন বলেন,আমি মর্ডান মার্কেটটির কোনো কাজই করিনি।আমি দেখিও নাই।তবে দীর্ঘ ২২ বছর মার্কেটটি মৃত দেহের মতো দাঁড়িয়ে আছে।তিনি আরো বলেন,যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করেছিলেন তারা আমাদের এখনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি।ওর সাথে হিসেব নিকাশ আছে।নানা অনিয়ম দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি তদন্তে জেলা পরিষদ,এলজিইডিকে নিয়ে ৩ সদস্য কমিটি করা হয়েছে।
✪উপদেষ্টা ☞বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম/এন ইসলাম(অব:প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা)
✪সম্পাদক ও প্রকাশক ☞ এমডি এস ইসলাম
☞ For Advertisements:- ads.samakalinkagoj@gmail.com.
☞ For News:- samakalinkagoj@gmail.com
✪ সম্পাদকীয় বানিজ্যিক ও প্রধান কার্যালয়:-মতিঝিল বা/এ,ঢাকা-১২১২
✪ আঞ্চলিক কার্যালয়:-২৪০,বি বি রোড,চাষাড়া-নারায়নগঞ্জ-১৪০০
✆ Tel No:-02-47650077, 02-2244272
✆Cell No+8801885-000126, +8801754-605090
☞web- www.samakalinkagoj.com
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪➤ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.