প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২২, ২০২৪, ৬:২০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪, ১:৫৭ পি.এম
মুন্সীগঞ্জে শাপলা কুড়িয়ে চলে ছিন্নমূল শিশুসহ হাজারো পরিবারের জীবন-জীবিকা
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
এক বছর আগে মায়ের সাথে বাবার ঝগড়া হয় রিপনের।তারপরে বিচ্ছেদ।রিপনের বাবা ইনসান আলি রংপুর জেলার বাসিন্দা।ঝগড়ার ও বিবাহ বিচ্ছেদের পরে রিপন চলে আসেন মায়ের সাথে মুন্সীগঞ্জে টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিঁগাওঁ বাজার এলাকায়।এখানে এসে বেঁচে থাকার তাগিদে কুড়িয়েছেন শাপলা সেই শাপলা বিক্রি করে চলে রিপন এবং তার মায়ের জীবন।রিপন বলেন, প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০টাকা কোনোদিন ৫০০টাক পর্যন্ত শাপলা বিক্রি করতে পারে সে। আগে বালিগাওঁ বাজারে একটি হোটেলে হোটেল বয় হিসাবে কাজ করতো সে।এখন হোটেল বন্ধ তাই শাপলা কুড়িয়ে বিক্রি করছেন।এছাড়া হোটেল খোলা থাকলেও কাজের ফাঁকে হোটেল রেখে শাপলা কুড়িয়ে বিক্রি করে সে।শুধু রিপন নয় বালিগাওঁ এলাকায় ভাড়া থেকে মিজানুর স্বপনসহ বেশ কিছু ছিন্নমূল শিশু শাপলা কুড়িয়ে জীবনযাপন করছেন ওই পরিবারগুলো।মিজানুর বলেন,তিনি শুধু মূলত বিকাল বেলায় শাপলা কুড়ান।সকালে হোটেলে কাজ করেন।কাজ শেষে ৩টার দিকে বিলের পানিতে নেমে শাপলা কুড়ান।পরে সেই শাপলা ২০টা একসাথে আঁটি বাঁধেন।বেঁধে সন্ধ্যার আগে নিয়ে যান টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারে।২০টা শাপলা ১০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন এতে প্রতিদিন ২০০ টাকার মতো আয় হয় তার।সাধারণত বর্ষা আসলে থই থই পানিতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে নয়নাভিরাম হয়ে উঠে মুন্সীগঞ্জের বিলগুলো।এই সৌন্দর্য আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় এ সমস্ত শাপলা ফুলগুলো।
শাপলা একদিকে আমাদের জাতীয় ফুল হলেও তরকারি হিসাবে এর কদর বেড়ে চলছে দিনের পর দিন।এছাড়া শাপলার গোড়ায় জন্ম নেয় শালুক। যা মানুষের কাছে খাবার হিসাবে বেশ চাহিদা রয়েছে। হাটে বাজার বিক্রি হয় এ সমস্ত শালুকও।শুধু ছিন্নমূল শিশুরা নয় এ সময় পুরো বিল পানিতে তলিয়ে থাকায় সাধারণত কৃষি জমিতে তেমন কাজ না থাকায় মুন্সীগঞ্জে শাপলা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে হাজারো পরিবার।বিলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো শাপলাই হয়ে উঠে কর্মহীনদের জীবন-জীবিকার আশার আলো।তাদের কুড়ানো এ শাপলা স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বিক্রি যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা নারায়নগঞ্জসহ অন্যান্য জেলায়। অনেক পাইকার বিল থেকে শাপলা কিনে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।আবার অনেকে নিজেরাই পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে শাপলা বিক্রি করতে নিয়ে যান ঢাকা নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে।মুন্সীগঞ্জের সবচেয়ে বেশি শাপলা জন্মে আড়িয়ল বিলে।তবে এ বছর মুন্সীগঞ্জ সদর,টংঙ্গীবাড়ী,লৌহজং, সিরাজদিখান,শ্রীনগর উপজেলার বিলগুলো জুড়ে ব্যাপক আকারে শাপলা জন্মাতে দেখা গেছে। ছিন্নমূল শিশুরা পানি ডিঙ্গিয়ে শাপলা কুড়ায়।তবে ছোট ছোট ডিঙি ও কোষা নৌকায় করে বিলের মধ্যে শাপলা কুড়াতে দেখা যায় এ এলাকায় বর্ষায় বেকার কৃষকদের।প্রতিটি ডিঙি ও কোষা নৌকায় ৩ থেকে ৪ জন থাকেন।রাতের বেলায় শাপলা ফুল ফোটে যা সকালের সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত ফুটে থাকে।তাই ফুটন্ত এ শাপলা ফুলগুলো বিলের অসংখ্য শাপলা গাছের মধ্যে সহজেই দৃষ্টি গোচর হওয়ায় ভোর বেলায়ই শাপলা কুড়াতে বেশি দেখা যায়।এ সমস্ত শাপলা বিকেলে বিলের বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশে শাপলাগুলি ¯ত্মূপকরেন।সেখান থেকে পাইকাররা শাপলা কিনে নেন।সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর এলাকার বাসিন্দা সুরম্নজ মিয়া বলেন,খুব সকালে ডিঙি নিয়ে বিলের পানিতে নামের তারা।সকালবেলা শাপলা ফুলগুলো ফুটে থাকে।শাপলা কুড়াতে বিল জুড়ে ঘুরে বেড়ান তারা। প্রতিদিন কয়েকশত আঁটি শাপলা কুড়াতে পারিন। তারপর সেগুলো তারা আবার বাধেন।একেকটি আঁটিতে ২০টি করে শাপলা থাকে।পাইকাররা প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে পিক্যাপ নিয়ে এসে তাদের কাছ হতে শাপলা কিনে নিয়ে যায়।দিনমজুর বারেক শেখ বলেন বর্ষায় জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। কোনো কাজ না থাকায় শাপলা কুড়িয়ে বিক্রি করে সে।এ বছর বিলে পানি বেশি হওয়ায় শাপলাগুলো চিকন হয়েছে।চিকন শাপলার চাহিদা কম।মোটা শাপলা দেখতে সুন্দর তাই চাহিদা বেশি।তবে এ বছর বিলে শাপলা গজিয়েছে বেশি তাই সকাল হতে দুপুরের মধ্যে অনেক শাপলা কুড়ানো যায়।বিকেলে পাইকার আসেন।সেসময় পাইকারের কাছে শাপলা বিক্রি করে বাড়ি ফিরেন।মিরাজ বলেন,শাপলা কুড়িয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি কিছু আয় হয়। প্রতিদিন ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা রোজগার হয় তার।
Editor & Publisher-MSI
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.