স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রানকেন্দ্র খানপুরের ৩'শ শয্যা হাসপাতালে সম্মুখ্যে প্রকাশ্যে একসময় চা বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করতেন মোহাম্মদ শাহীন ওরফে বাইট্টা শাহীন নামে এলাকায় চিহ্নিত,খানপুর ব্রাঞ্চ রোডের মৃত গণি মিয়ার পুত্র শাহীন ওরফে বুইট্টা শাহীন।
'নুন আনতে পান্তা ফুরায়'..! এভাবেই জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো এই বুইট্টা শাহীন। খানপুরে পৈত্রিক ভিটা ছাড়া কিছু ছিলো না তার। একসময় হঠাৎ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করতে থাকেন এলাকার লোকজন, দীর্ঘ প্রায় পনের বছরে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন এই শাহীন। কোন আলাদিনের চেরাগ পেলেন?
এলাকায় যাকে সকলে বাইট্টা শাহীন নামে চেনেন।
সূত্র মতে জানা গেছে, দীর্ঘ পনের বছরের ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামনে হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেলে একে একে সকলের নজরে আসতে থাকে।
আলাদীনের চেরাগ পাওয়া আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মোহাম্মদ শাহীন ওরফে বাইট্টা শাহীন এখন ১হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদের মালিক বনে গেছেন।কোনো কোনো সূত্র জানা গেছে এই শাহীন আরও বেশি টাকার মালিক।
জানা গেছে একসময়ের ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নূরুল আমিন মাকসুদ ওরফে চিহ্নিত বরিশাইল্লা মাকসুদের মৃত্যুর পর ড্রেজার ব্যাবসা নিয়ন্ত্রণে নেয় এই শাহীন, এই বুইট্টা শাহীন ততকালীন এই বরিশাইল্লা মাকসুদের ক্লাবের পাশেই চা বিক্রি করতেন শাহীন ওরফে বুইট্টা শাহীন।
মূলত সেই চা বিক্রি সুবাদেই মাকসুদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে শাহীনের। মাকসুদের মৃত্যুর পরে আর শাহীনকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি!
সূত্র মতে আরও জানা গেছে, চা বিক্রেতা শাহীন এখন একাধিক আলিশান বাড়ি,গাড়ি রিসোর্ট, প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক। তার পরিবারের প্রত্যেকের রয়েছে একাধিক নামিদামী ব্রান্ডের গাড়ি। এই আওয়ামী লীগের শাসনামলে তার জীবন যাপনের দৃশ্য পাল্টে গেছে, তার শান শওকত দেখে অনেকেই আশ্চর্য হয়ে বলছে আলাদিনের চেরাগের সন্ধান পেয়েছেন একসময়ের চা বিক্রেতা বুইট্টা শাহীন। তার অন্যান্য কারবারে মধ্যে ড্রেজার ব্যবসা অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার সহ স্ত্রী সন্তানের নামেও রয়েছে একাধিক বহুতল বাড়ি,রয়েছে কয়েকটি আলিশান লাক্সারি ফ্ল্যাট সহ রয়েছে বহু সংখ্যক প্লট। বন্দরে রয়েছে ৫০ একর জমির ওপর অত্যাধুনিক পার্ক ও রিসোর্ট যেখানে বহু ভিভিআইপির আনাগোনা লক্ষ্য করেছে এলাকাবাসী। সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মনোরঞ্জন করা হয়।
এসকল কর্মকান্ডে তার আরো দুই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার সখ্যতা রয়েছে বলে অনুসন্ধান উঠে এসেছে। তারা হলেন নাসিক ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম এবং ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর তাঁরাও উভয়ই কোটি টাকার মালিক। ড্রেজার ব্যবসাকে আরো চাঙা করতে এই শাহীন প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানকে ম্যানেজ করে একটি নিদিষ্ট মাসোয়ারা করে দেদারসে এব্যবসা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। অনেক ধরনের উল্লেখযোগ্য মূহুর্তেও শামীম ওসমান এমপির সাথে তাকে দেখা গেছে।
এরও পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ প্রভাবশালী গডফাদার এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা দূর্ধর্ষ আজমেরী ওসমানকে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেন।
এরপর দেদারসে নিরবিচ্ছিন্ন বাঁধাহীনভাবে চলে তার এক্যচ্ছত্র নৈরাজ্য। গড়ে তোলেন বিশাল সম্রাজ্য। সম্প্রতি তিনি খানপুর ব্রাঞ্চ রোডে ৮কোটি টাকায় জমি ক্রয় করে ১শ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মান করছেন।
সূত্র মতে আরো জানা গেছে, বুইট্টা শাহীন ১৯৯৬ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্র ছায়ায় অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
শাহীন ড্রেজারে রক্ষিত তামা-পিতলজাত দ্রব্যকে প্রভাব খাটিয়ে লোহার গর্দা হিসেবে কিনে এনে তা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতেন। পাশাপাশি নতুন সব ড্রেজারগুলোকে পুরোনো বলে চালিয়ে তিনি শতশত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা দূর্ধর্ষ ক্যাডার আজমেরী ওসমানের নাম ব্যবহার করে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ যে, গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গনআন্দোলনের মূখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরেও রহস্যজনক কারনে এই বুইট্টা শাহীন এখনো বহাল তবিয়তে ড্রেজার ব্যবসায় লাগামহীনভাবে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর তথ্য সূত্রে জানা গেছে, শাহীন ওরফে বুইট্টা শাহীন এখন নতুন ক্ষমতাশীনদের ম্যানেজ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে তাকে কেউ কিছু করতে পারেনি, কারন তার বেয়াই ততকালীন সদর থানার আলোচিত সমালোচিত ফেনসিডিল নিয়ে আটক চাকরি থেকে বহিষ্কৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কামরুলের সহায়তায়ও এসকল অপকর্ম চালাতেন কারন তিনি ছিলেন তার বেয়াই,ছেলের শশুর। ছেলের শশুরের নাম বিক্রি করে প্রভাব খাটিয়ে সকলকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাখত বলে একাধিক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই শাহীন ওরফে বুইট্টা শাহীনের অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়ার তথ্য দুদক পর্যালোচনার মাধ্যমে আটক করে তদন্ত করলে অর্থের মূল উৎস বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে। এদিকে গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ডিবি পুলিশ কর্তৃক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ধরে নিয়ে গেলেও কি রহস্যজনক কারনে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। না-কি টাকার বিনিময়ে রফাদফা হয়েছে?
বিস্তারিত আরও আসছে....