প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ৫:২৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১, ২০২৪, ১২:৫৬ পি.এম
লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিস্তীর্ণ ভূমি
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিস্তীর্ণ ভূমি।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার শামুর বাড়ি গ্রামের খান বাড়ি জামে মসজিদের তিন পাশ দিয়ে বইছে পদ্মা নদী।পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে মসজিদের ফ্লোরের নিচের অনেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।কাত হয়ে পড়ছে মূল ভবনটি।আর ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যেই নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।মসজিদটির দক্ষিণ পাশে বইছে পদ্মা নদী।বিগত কিছুদিনের ভাঙ্গনে ওই মসজিদের নিচের মাটি সরে গিয়ে মসজিদের পশ্চিম ও পূর্ব পাশেও এখন বইছে পদ্মা।শুধু উত্তরভাগের স্থল অংশ এবং পূর্ব পাশের আংশিক অংশ স্থলভাগের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীতে বিলীন হয়ে যাবে মসজিদটি।এছাড়াও ওই মসজিদের পাশেই গাওদিয়া একাডেমী মাদ্রাসার ভবনের একটি কক্ষের বেশকিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছি। ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ভবনটির অন্যান্য কক্ষ।শামুর বাড়ি এলাকা ছাড়াও বর্ষাকে সামনে রেখে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় নদী তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।ভাঙ্গন কবলিত কবলিত এলাকাগুলোতে স্থায়ী বাঁধের জন্য বরাদ্দ হলেও ধীরগতির কাজের কারণে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।
গাঁওদিয়া শ্বামুরবাড়ি খান বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় নদী ভাঙন রোধে ব্লক বানিয়ে রাখলেও ব্লক বানিয়ে রাখার পাশের স্থানেই চলছে ভাঙ্গন।এতে স্থানীয়দের মনে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ ব্লক বানিয়ে রাখা হয়েছে নদীতে ফেলা হচ্ছে না।তবে পদ্মা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন অংশে নদী রক্ষা বাঁধের কাজও চলমান রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ,নদী রক্ষা বাঁধের কাজ চলছে ধীরগতিতে।বর্ষার পানি চলে এসেছে বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়নি।আমাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেলে কি বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। সরেজমিনে উপজেলার গাঁওদিয়া শ্বামুরবাড়ি, বেজগাঁও, কনকসার এবং লৌহজং-তেউটিয়ার বিভিন্ন অংশে গিয়ে দেখা যায় নদীর পানি অনেক বেড়ে উপরে চলে এসেছ্বে।এসব অঞ্চলের অনেকাংশেই বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ী বাধ নির্মাণ করা হয়েছিল।কিন্তু স্থানে স্থানে জিও ব্যাগ ধসে গিয়ে পুনরায় নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়,নদীতে জোয়ার ভাটা হয়।জোয়ারে নদীর পানি পাড়ে এসে পৌঁছে।সে সময়ে নদী দিয়ে ভারি নৌযান চলাচলের সময়ে নদীর ঢেউয়ে পাড়ের মাটি ভেঙ্গে পড়ে যায়।বৃষ্টি হলেও ভাঙন হয়।মূলত নদীর ঢেউয়ে ভাঙনের সৃষ্টি।নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করা হলেও লৌহজং-তেউটিয়া এবং কনকসারের মাঝামাঝি এই অংশটিতে কোন কাজই করা হয়নি।গাঁওদিয়া শ্বামুরবাড়ি এলাকার এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,নদীটি আমার এই স্থান থেকে অনেকটা দূরে ছিল।এখন ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির কাছে এসে পড়েছে।এখানে অনেক আগে নদী ভাঙন শুরু হয়।সামুর বাড়ি খান বাড়ি এলাকায় ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম বালুর বস্তা ফালানো হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত মোটামুটি এখান দিয়ে ভাঙ্গন অনেকটাই কম ছিল।২০২০ সালের পর অনেকবারই এ অঞ্চলে বালুর বস্তা ফেলানো হলেও ভাঙ্গন চলছে।কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর হতে এখান দিয়ে বালুর বস্তা ধসে মসজিদের নিচ হতে বালুর বস্তা সরে গেছে।এখন মসজিদটা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ।এই মসজিদের আশেপাশে এখন ভাঙ্গন বাড়ছে।তিনি আরও বলেন,রেমালের রাতে মসজিদের পাশের ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ খানের বাড়িটি ঘূর্ণিঝড়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায়।আমরাও ঝুঁকির মধ্যে আছি।আমি শুনেছি স্থায়ী বাঁধের জন্য বরাদ্দ হয়েছে।আমরা চাই দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।আমাদের এখানে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আসছিল, স্থানীয় এমপিও ছিল।তারা বলে গেছে দ্রুত বাধ দিব,কিন্তু কই এখন তো বাধ দিচ্ছে না।শামুর বাড়ি এলাকার টগর খান বলেন,আমাদের এলাকায় নদী ভাঙ্গন চলছে অনেক বছর ধরে।মাঝে মধ্যে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধ তৈরি করা হয়।কিন্তু পাড়ের মাটি ভেঙ্গেই পড়ছে।আমাদের বাড়ি-ঘর যদি ভেঙ্গে যায় কোথায় যাবো।সরকার যদি ভাঙন প্রতিরোধে একটি বাঁধ তৈরি করে দিতো,না খেয়েও রাতে ঘুম ভালো হতো।এই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো:নাদিম খান বলেন,আমাদের বাড়িঘর মসজিদ সব ভেঙে যাচ্ছে।তিনি ওই সময় নদীর পাড়ে থাকা কিছু ব্লক দেখিয়ে বলেন,ঠিকাদার ব্লক বানিয়ে নদীর পাড়ে রেখে দিয়েছে।পানি যখন কম থাকে তখন তারা ব্লক ফালায় না।বর্ষা হইলে পানিতে তলায় গেলে ব্লক ফেলে।তখন সে ব্লক আর কোন কাজে আসে না।একই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন,ঘর-বাড়ি নদীতে ভেঙে নিয়ে গেলে যাব কোথায়?আমার ভিটামাটি হারিয়ে গেলে কোথায় যাব?মাথা গোঁজার আর ঠাঁই থাকবে না। সব জায়গায় কম বেশি জিও ব্যাগ ফেলে নদী রক্ষা প্রতিরোধ বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।আমাদের এই অংশে এখানো কেন কাজ হচ্ছে না? কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি।আমি যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছি এখান থেকে অনেক দূরে নদী ছিল,ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির পাশে এসে পড়েছে।গাওদিয়া একাডেমী মাদ্রাসার মুফতি বেলায়েত হোসেন বলেন,আমাদের মাদ্রাসাটি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।এরপর হতে আমরা ঠিকমতই এখানে পাঠদান দিচ্ছিলাম।কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের রাতে আমাদের মাদ্রাসার একটি কক্ষ নদীতে বিলীন হয়ে যায়।প্রতিনিয়ত নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢেউয়ে ঢেউয়ে আমাদের মাদ্রাসার মাটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।যদি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়া হয় তবে আমি আশঙ্কা করছি এক মাসের মধ্যে আমাদের মাদ্রাসার অর্ধেকাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, লৌহজংয়ে পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।আমরা সামুর বাড়ি খান বাড়ির ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি সরজমিনে পরিদর্শন করেছি।পরিদর্শনের শেষে ওখানে বাঁধ নির্মাণের জন্য একটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।ওখানে তো কাজ ধরার কথা এখনো কাজ ধরেনি! আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তাওহীদুল ইসলাম বলেন,লৌহজং এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাধের জন্য ৪০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।কিন্তু বরাদ্দের টাকা সব একসাথে না এসে বছরে বছরে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ আসায় একসাথে আমাদের সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।আমরা এ বছর ৮০ কোটি টাকা পেয়েছি।সে টাকার কাজ চলছে।তবে যেসব স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ওই সব স্থানে আমরা অস্থায়ী বালুর ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
✪উপদেষ্টা ☞বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম/এন ইসলাম(অব:প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা)
✪সম্পাদক ও প্রকাশক ☞ এমডি এস ইসলাম
☞ For Advertisements:- ads.samakalinkagoj@gmail.com.
☞ For News:- samakalinkagoj@gmail.com
✪ সম্পাদকীয় বানিজ্যিক ও প্রধান কার্যালয়:-মতিঝিল বা/এ,ঢাকা-১২১২
✪ আঞ্চলিক কার্যালয়:-২৪০,বি বি রোড,চাষাড়া-নারায়নগঞ্জ-১৪০০
✆ Tel No:-02-47650077, 02-2244272
✆Cell No+8801885-000126, +8801754-605090
☞web- www.samakalinkagoj.com
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪➤ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.