প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২৪, ৩:৪৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ২৪, ২০২৪, ৬:৪১ পি.এম
গর্ব ও ঐতিহ্যের কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ
ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা।।
একটা সময় ছিল যখন সারা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে এক ডাকে সবাই জানত কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের কথা।
বণিকের বেশে বাণিজ্য করতে এসে ইংরেজরা বাঙলা,বিহার, ওড়িশার নবাব সিরাজদ্দৌলাকে ছলনা করে পরাস্ত করে বাংলা,বিহার ওড়িশা দখল করে নেয়। ধীরে ধীরে তারা সাম্রাজ্য বিস্তার করে ফেলে সারা ভারতে। শাসন কার্য চালাতে গিয়ে প্রথমেই তাদের মহাসংকটে পড়তে হয়, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে গিয়ে। তখন শিক্ষা ব্যবস্থা সীমিত ছিল উচ্চবিত্ত পরিবারের হিন্দুদের মধ্যে। টোল, সংস্কৃত ভাষার স্কুল, সামান্য গণিত, ধর্মের নীতি ও আদর্শ পড়ানো হতো। ইংরেজ শাসকরা ইংরাজি শিক্ষা চালু করতে চান। এগিয়ে আসেন কিছু বিত্তবান রাজা তথা শোভাবাজার রাজা,বর্ধমানের রাজা, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি সহ পাঁচ জন। ১৮১৭ সালের ২০ জানুয়ারি গড়ানহাটার গোরাচাঁদ বসাকের বাড়ি ভাড়া নিয়ে পথ চলা শুরু হলো। উদ্যোক্তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন, রাধাকান্ত দেব, ডেভিড হেয়ার, এডওয়ার্ড হাইড, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর প্রমুখ। ১৮২৪ সালে কলেজ স্ট্রিটের গোল দীঘির কাছে হিন্দু কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত করা হয়। ১৮২৬ সালের মে মাসে পঠনপাঠন চালু হয়। মাত্র ২০ জন ছাত্র নিয়ে পথ চলা শুরু। এই কলেজ স্থাপনে ডিরোজিও র অবদান অনস্বীকার্য। কোলকাতার এন্টালিতে তার জন্ম ১৮০৯ সালে। ১৮২৬ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তাকে এই কলেজের ইংরাজি ও ইতিহাসের অধ্যাপক নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ছাএদের মধ্যে একমাত্র হিন্দুদের ই প্রথমদিকে প্রবেশাধিকার ছিল। কিন্তু বেশিদিন এই নিষেধাজ্ঞা টিকে থাকতে পারেনি। সারা দেশ জুড়ে তখন নব জাগরণের জোয়ার। এই জোয়ারে বিভেদের প্রাচীর ভেঙে যায়। ডিরোজিও প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে আসেন। ১৮২৮ সালে তার হাত ধরে গড়ে উঠলো অ্যাকাডেমিক এসোসিয়েশন। সমাজ সংস্কারের অগ্রদূত ঝাঁপিয়ে পড়লেন কর্মযজ্ঞে। হিন্দু ধর্মের মিথ্যাচার, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ,নারী স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিলেন তারা। ১৮৩৯ সালে বিলুপ্ত হলো অ্যাকাডেমিক এসোসিয়েশন। হিন্দু ধর্মের মুখোশ খুলতে তৎপর হলেন ডিরোজিও। কিন্তু তখনকার কট্টর হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে যাওয়া সহজ ছিল না। তাই ৬-১ ভোটে সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিরোজিও কে হিন্দু কলেজ থেকে বহিস্কার করা হয়।
নতুন ইতিহাস, নব জাগরণ :
১৮৫৫ সালের ১৫ জুনঐতিহাসিক দিন হিন্দু কলেজের। সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সব ধর্মকে সমানাধিকার দেওয়া হলো। হিন্দু কলেজের নাম বদলে রাখা হলো প্রেসিডেন্সি কলেজ। তখন আর ডিরোজিও বেঁচে ছিলেন না। এরপর থেকে ঐতিহ্যে ভরপুর প্রেসিডেন্সি সর্ব ক্ষেত্রে অগ্রগামী। যেখানেই অন্যায়, ভেদভাব,ধর্মান্ধতা সেখানেই গর্জে উঠেছে প্রেসিডেন্সি কলেজ। প্রেম, পলিটিক্স,পড়াশোনা এই তিনের মেলবন্ধনে প্রেসিডেন্সি। ভারতে নকশাল আন্দোলনে বহু কৃতি ছাত্র তাদের জীবনের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছেন শুধু একটি আদর্শের জন্য লড়াই করতে গিয়ে। আমার দাদু( মায়ের মামা) কিষান মুখার্জি অত্যন্ত কৃতি শিক্ষার্থী হয়েও তার থিসিস কেড়ে নেয়া হয়েছে সেই সময়। প্রেসিডেন্সির প্রতিভা অসীম তথা কাকু চরম নিগৃহীত হয়েছেন কংগ্রেস সরকারের হাতে। এই প্রেসিডেন্সি কলেজের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিপ্লবী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম। এই কলেজের ছাত্র ছিলেন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, হুমায়ূন কবির। এছাড়াও পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ,প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফ প্রেসিডেন্সির ছাত্র ছিলেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এর ঠিক উল্টো দিকে ঐতিহাসিক কফি হাউজ বিল্ডিং রয়েছে। শিক্ষা সংস্কৃতি,রাজনীতির পীঠস্থান এই কফি হাউসের স্বাধীনতা যুদ্ধের অসীম অবদান আছে।
Editor & Publisher-MSI
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.