ডেস্ক রিপোর্ট।।
জ্বালানিসংকটে উৎপাদন বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে বাড়ছে লোডশেডিং।
সামনে আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। দেশে এমনিতেই বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে প্রচণ্ড তাপদাহ বয়ে চলছে। এরমধ্যে আবার বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ।
রাজধানীতে দিনে গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, অত্যধিক গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেলেও সে অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছে না তারা। ফলে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
বিপিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার সংকটে জ্বালানি তেল, এলএনজি ও কয়লা আমদানি কমায় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে চাইলেই উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনের বড় ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এ কারণে লোডশেডিং বেড়েছে।
সূত্র মতে, সারা দেশে গতকাল বিকাল ৩টায় ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল। ওই সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।
রাতে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ায় লোডশেডিং আরও বেশি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পিজিসিবি দৈনিক বিদ্যুতের যে চাহিদা ও লোডশেডিং প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে, বর্তমানে চাহিদা ও লোডশেডিং এর চেয়ে দেড় হাজার মেগাওয়াট বেশি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বালানিসংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে দৈনিক প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে। মূলত উৎপাদনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চাহিদা তৈরি করে প্রকাশ করা হয় বলেও জানান তাঁরা।
বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৪৭ শতাংশ গ্যাসভিত্তিক।
গ্যাসসংকটে গ্যাসভিত্তিক সব বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো যাচ্ছে না। এই কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট। গতকাল দিনের বেলায় উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট।
ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সাত হাজার মেগাওয়াটের বেশি। গতকাল দিনের বেলায় উৎপাদন হয়েছে দুই হাজার ২১৫ মেগাওয়াট। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তিন হাজার ৪৪০ মেগাওয়াট। গতকাল দিনের বেলায় উৎপাদন হয়েছে দুই হাজার ১৫৭ মেগাওয়াট।
এদিকে, কয়লা সংকটের কারণে জুনের ২ তারিখ অর্থাৎ আগামীকাল শুক্রবারের পর বন্ধ হতে যাচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, কয়লা না থাকায় ২৫শে মে একটি ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। এখন ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বাকি একটি ইউনিট থেকে দিনে ৪৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যে কয়লা রয়েছে তাতে ২রা জুন পর্যন্ত চলতে পারবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। ফলে আগামী ৩রা জুন থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে যথেষ্ট জেনারেশন করার মতো পাওয়ার স্টেশন রিজার্ভ আছে। সংকট কাটিয়ে দ্রুত কয়লা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কয়লা আসতে ২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সে কারণে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হতে পারে।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কাওসার আমীর আলী বলেন, তার এলাকায় গতকাল ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়েছে। দুপুর ১টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ২৮০ মেগাওয়াট। কিন্তু ওই সময় চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে ১ হাজার ১০৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ১৭৫ মেগাওয়াট।
অন্যদিকে ডলার সংকট, জ্বালানি ঘাটতি ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৪৫ শতাংশ অব্যবহৃত থাকায় জুনে লোডশেডিং বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট। গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৪ কোটি। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪শে মে থেকে ২৯শে মে পর্যন্ত দেশে দিনের বেলায় গড়ে ১১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যায় পিক আওয়ারে প্রায় ১৩ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন তো সহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং করেছি। কিন্তু আগামী সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি কেমন হবে তা আমরা জানি না। কয়লা সংকটের কারণে আগামী সপ্তাহ থেকে দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা বন্ধ হয়ে যাবে।
সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
Editor & Publisher-MSI
Head office:-Motijheel C/A, Dhaka-1212,
Corporate office:-B.B Road ,Chasara, Narayanganj-1400, Tell-02-47650077,02-2244272 Cell:+88-01885-000124,01885-000126
web:www.samakalinkagoj.com. For news:(Online & Print)
samakalinkagojnews@gmail.com, news.samakalinkagoj@gmail.com
For advertisements:-ads.samakalinkagoj@gmail.com
For publisher & editor:-editorsamakalinkagoj@gmail.com. Cell: +8801754-605090(Editor)
☞Instagram.com/samakalinkagoj ☞ twitter.com/samakalinkagoj
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক ১৮০,ফকিরাপুল পানির টাংকির গলি,মতিঝিল বা/এ, ঢাকা অবস্থিত 'জননী প্রিন্টার্স' ছাপাখানা হতে মুদ্রিত, ✪ রেজি ডি/এ নং-৬৭৭৭
© All Rights Reserved ©Daily samakalin kagoj paper authority>(© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©দৈনিক সমকালীন কাগজ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ)
Copyright © 2024 Samakalin Kagoj. All rights reserved.